পিপিপি-তে প্রস্তাব রাজ্যের
মেডিক্যাল কলেজ গড়তে চাইলে হাসপাতাল ফ্রি
বার এক বঁড়শিতে দুই মাছ ধরতে চাইছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
এতে সরকারি-বেসরকারি যৌথ মালিকানা বা পিপিপি মডেলে রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করতে জমির কোনও সমস্যা যাতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি, বেসরকারি সংস্থারা যাতে মুখ না-ফিরিয়ে থাকে সেটাও দেখা হচ্ছে।
কী ভাবে?
ঠিক হয়েছে, পিপিপি মডেলে যে সব সংস্থা রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজ গড়তে এগিয়ে আসবে, তাদের আলাদা করে নতুন কোনও জমি খুঁজে দেবে না সরকার। বেশ কিছু সরকারি হাসপাতাল চত্বরে যে অতিরিক্ত জমি পড়ে রয়েছে, তাতেই বানাতে হবে মেডিক্যাল কলেজ। এতে আলাদা করে জমি খোঁজার ঝক্কি থেকে বাঁচবে সরকার।
জায়গা দেওয়ার পাশাপাশি সেখানকারই ৩০০ বা তার বেশি শয্যার চালু সরকারি হাসপাতালটি ওই বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ, ‘মেডিক্যাল কলেজ গড়তে চাইলে হাসপাতাল ফ্রি’-এর অফার! বেসরকারি সংস্থাকে আর আলাদা করে পিপিপি মডেলে মেডিক্যাল কলেজের জন্য কম করে ৩০০ শয্যার হাসপাতাল গড়তে হবে না। সেই খাতের পুরো খরচটাই তাদের বেঁচে যাবে। তাদের শুধু কলেজ ভবন তৈরি করলেই চলবে। এতে অনেক সংস্থাই মেডিক্যাল কলেজ গড়তে আগ্রহ দেখাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে কলকাতা ও জেলার বেশ কয়েকটি ধুঁকতে থাকা সরকারি হাসপাতালের পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল পিপিপি মডেলে। কিন্তু এতে কোনও সংস্থা আগ্রহ দেখায়নি। মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়ার কথা বলেছেন। সেখানেও কোনও বেসরকারি সহযোগী এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে কাজ শুরু করা যায়নি। মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রে এই রকম কোনও পরিস্থিতিতে পড়তে চাইছে না স্বাস্থ্য দফতর। এমন কিছু স্কিমের কথা ভাবা হচ্ছে যাতে বেসরকারি সংস্থা উৎসাহিত হয়।
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আলাদা করে জমি খোঁজার দরকার নেই। আমাদের অনেক হাসপাতালের অনেক জমি পড়ে রয়েছে। সেখানেই পিপিপি মডেলে মেডিক্যাল কলেজ হতে পারে। ওই হাসপাতাল ভবনটিও বেসরকারি সংস্থাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ফলে বেসরকারি সংস্থার শুধু অ্যাকাডেমিক ভবন তৈরি করলেই চলবে। বেসরকারি সংস্থার খরচ অনেক কমে যাবে। আশা করি এতে অনেকে আগ্রহী হবেন।”
স্বাস্থ্য-কর্তারা আরও জানান, মেডিক্যাল কলেজের জন্য কোনও সরকারি হাসপাতাল বেসরকারি হাতে ছেড়ে দেওয়া হলে সেখানকার সরকারি কর্মী ও চিকিৎসকদের অন্য কোনও হাসপাতালে বদলি করে দেওয়া হবে। পিপিপি মডেলে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হলে ওই হাসপাতালের জন্য সব নতুন নিয়োগ করবে বেসরকারি সংস্থাটিই।
পিপিপি মডেলে রাজ্যে এর আগে কোনও মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হয়নি। তৃণমূল-শাসনে এখনও পর্যন্ত কোনও হাসপাতালই পিপিপি মডেলে কাজ শুরু করেনি। বাম আমলে আংশিক পিপিপি মডেলে হয়েছিল ঢাকুরিয়া আমরি এবং যাদবপুর কেপিসি হাসপাতাল। এর জন্য বাম সরকার ১ টাকায় জমি দিয়েছিল, কিন্তু হাসপাতাল ভবন গড়ে নিতে হয়েছে বেসরকারি সংস্থাকেই।
তৃণমূল জমানায় পিপিপি মডেলে হাসপাতাল গড়তে বেসরকারি হাসপাতালকে সরকারি জমি নিখরচায় বা ১ টাকা দামে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে মতভেদ তৈরি হয়েছিল। জমির জন্য টাকা নিলে সংস্থারা আগ্রহ হারাতে পারে, এই ভয়টাও ছিল। আবার বাম আমলে বেসরকারি সংস্থাকে হাসপাতালের জন্য ১ টাকা দামে জমি দেওয়া নিয়ে যেখানে তৃণমূল সরব হয়েছে সেখানে ক্ষমতায় এসে তারা কী ভাবে একই কাজ করে করে, তা নিয়ে সরকারের উপর চাপ ছিল। বিধানসভায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সেই সমস্যার একটা সমাধান বার করে ফেলেছে স্বাস্থ্য দফতর।
সেটা কী?
স্বাস্থ্য-কর্তারা জানিয়েছেন, জমি নিখরচায় পাওয়াটা হবে ‘পারফরমেন্স বেসড্’, অর্থাৎ তা নির্ভর করবে বেসরকারি সংস্থার কাজের দক্ষতার উপর। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “সরকারি নিয়মে যদি ইঞ্জিনিয়ারিং বা মেডিক্যাল কলেজ গড়তে কোনও সংস্থাকে ৯৯ বছরের জন্য সরকারি জমি লিজ দেওয়া হয়, তা হলে ওই সংস্থাকে জমির সেলামির বাজার মূল্যের ৪০ শতাংশ টাকা এবং জমির বাজারচলতি ভাড়ার ০.৩ শতাংশ দিতে হবে। আমরা ঠিক করেছি, দরপত্রের মাধ্যমে যে সংস্থা নির্বাচিত হবে তারা যদি ২০১৪-১৫-র মধ্যে মেডিক্যাল কলেজ চালু করতে পারে ও ভাল ভাবে পরিচালনা শুরু করে, তা হলে তাদের সব টাকা মকুব করে দেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.