শুক্রবার সকালে কাগজে দেখলাম গেইল টুইট করেছে, ফাইনালে খেলা হবে শ্রীলঙ্কা বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের!
বিশ্ব ক্রিকেটে আর কেউ আছে, যে সেমিফাইনাল খেলতে নামার কয়েক ঘণ্টা আগে নিজের দলের জয় সম্পর্কে এ রকম ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে? অনেকেই হয়তো বলতে পারেন, গেইল ঠাট্টা করেছে। কিন্তু ঘটনা হল ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা এ রকমই। বিশেষ করে গেইল। সব সময় বিন্দাস। মাঠের বাইরে। আবার মাঠেও। |
মাঠে নিজের মেজাজে থাকলে কী হয়, তা বেচারা অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা এ দিন হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে গেল। প্রেমদাসায় আছড়ে পড়ল গেইল টাইফুন। যারা এই ঝড়ের মধ্যে পড়ে যায়, তাদের সর্বনাশ অনিবার্য। শুক্রবার যেমন হল অস্ট্রেলিয়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা এক বার ২০৫-৪ তুলে ফেলার পর অস্ট্রেলিয়ার কোনও সুযোগই ছিল না।
কেচ্ছা, কেলেঙ্কারি সব মিডিয়ার জন্য, দুনিয়ার জন্য। গেইলকে এ সব কিছুই ছুঁতে পারে না। এটা ভেবে দেখুন, আগের দিনই মহিলা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে। আর রাতে টুইট করছে, আমরাই ফাইনালে খেলব। আত্মবিশ্বাস কোন জায়গায় থাকলে এ রকম কথা লেখা যায়। |
‘সরি শ্রীলঙ্কা কাপটা কিন্তু আমাদের’
ক্রিস গেইল |
|
ক্রিকেটে তো দেখছি অনেক মস্তানই আছে। তবে এরা সব মেজ, সেজো, ছোট। আসল মস্তান কিন্তু এক জনই। জানি না, এ দিন সন্ধেয় নিজের বাড়িতে বসে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ম্যাচটা দেখল কি না। যদি দেখে থাকে, তা হলে নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছে ক্রিকেটের বড় মস্তানটা এখন কে।
প্রেমদাসার পিচ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছিল। স্লো উইকেট, বড় রান উঠবে না। স্পিনারদের খেলা মুশকিল। তা গেইল যখন ডোহার্টির ফুলটসটা মিড উইকেটের উপর দিয়ে উড়িয়ে দিল, তখনই বুঝে গেলাম কী হতে চলেছে। ৪১ বলে ৭৫ ন.আ., পাঁচটা চার, ছ’টা ছয়। এই ছ’টার মধ্যে চারটে ছয়ই স্পিনারদের। স্লো উইকেটের দোহাই দিয়ে যারা রান তুলতে পারে না, তারা এ বার কী বলবে? |
টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গেইল |
ম্যাচ ৬ রান ২১৯
সর্বোচ্চ ৭৫ গড় ৫৪.৭৫ স্ট্রাইক রেট ১৬৫.৯০
বাউন্ডারি ১৯ ওভার বাউন্ডারি ১৬ |
|
ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের চরিত্রটাই এমন যে এই বিতর্ক, কেচ্ছাগুলোই ওদের জ্বলে ওঠার আগুন জোগায়। বান্ধবীদের নিয়ে আনন্দ করা, বার-রেস্তোঁরায় গিয়ে ফূর্তি করা, এটাই ক্যারিবিয়ানদের জীবন। নিজেদের হালকা রাখতেই এগুলো করে থাকে ওরা। গেইলও সে রকমই। আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফোটে সেই কারণেই। এ দিন পোলার্ড (১৫ বলে ৩৮), ব্রাভোর (৩১ বলে ৩৭) সাহায্য করেছে গেইলকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই স্পিনার নারিন-বদ্রি মিলে চার উইকেট তুলল। রামপল পেল তিন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে আরও একবার শূন্য হাতে ফিরতে হল অস্ট্রেলিয়াকে। সৌজন্যে গেইল।
ফাইনালে এই ঝড়কে থামাতে হলে স্পিনকেই প্রধান অস্ত্র করতে হবে শ্রীলঙ্কার। কিন্তু গেইল এ দিন অস্ট্রেলিয়ান স্পিনারদের যে ভাবে খেলল, তাতে মাহেলাদের সেই অস্ত্রও কাজে লাগবে কি না, প্রশ্ন সেখানেই।
|
|
রায়না বোল্ড টুইটার
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বাইশ গজে কিছু করে দেখানোর জন্য তাঁর নাম ইদানীং শিরোনামে এসেছে, এমন অভিযোগ নেই। কিন্তু মাঠের বাইরের ‘পারফরম্যান্সের’ জন্য হইচই ফেলে দিলেন সুরেশ রায়না। বৃহস্পতিবার রাতে রায়নার নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে একটা পোস্ট দেখা যায়, যাতে লেখা ছিল: “এক দু’দিন বাদে ঘরে ফিরল!!! তাও নির্লজ্জের মতো গেল....বাই বাই পাকিস্তান।” রায়নার এই টুইট দেখার পর রীতিমতো বিতর্ক শুরু হয়ে যায় সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোয়। ভারতীয় ব্যাটসম্যানের মুণ্ডপাতও শুরু হয়ে যায় ওয়াঘার এ পার-ও পার দু’প্রান্তেই। এর পর শুক্রবার সকালে ওই বিশেষ টুইটটা মুছে ফেলেন রায়না। আর তার একটু পরে আর একটি টুইট করে জানান, “স্মার্টফোনগুলো খুব বিপজ্জনক। গত কাল রাতে সেটা বুঝতে পারলাম, যখন দেখলাম আমার ভাইপো দুমদাম কিছু টুইট করে দিয়েছে। আমি যদিও ওই বিশেষ টুইটটা মুছে ফেলেছি, তাও একবার সবার কাছে সত্যি ব্যাখ্যাটা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করলাম। যারা এই টুইটটায় আঘাত পেয়েছেন, তাদের বলছি আমি দুঃখিত। আমি কাউকে অসম্মান করার মতো মানুষ নই।” এই ব্যাখ্যার পর অনেকেই টুইট করে বলেছেন, ভাগ্যিস রায়নার একটা ভাইপো ছিল! |