|
|
|
|
সম্মান রক্ষার খুনে একই বাড়ির ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
পরিবারের ‘সম্মান’ রাখতে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল বাড়ির মেয়ে ও তার প্রেমিককে। এই ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মেয়েটির বাবা-মা সহ পাঁচ জনকে আজ ফাঁসির নির্দেশ দিল দিল্লির একটি আদালত।
ঘটনাটি ২০১০ সালের। গোকুলপুরি এলাকার বাসিন্দা আশা (১৯) এবং যোগেশ (২০) পরস্পরকে ভালবেসে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সে কথা আশা জানিয়েছিল তার মা-কে। যোগেশের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল আশার কাকা ওমপ্রকাশের বাড়িতে। জামাইবাবু রাকেশকে সঙ্গে নিয়ে বিয়ের পাকা কথা বলতে যোগেশ সেখানে পৌঁছয়। কিন্তু আসার বাবা-কাকা ততক্ষণে ঠিক করে ফেলেছে, তফসিলি জাতিভুক্ত যোগেশের সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করা হবে। যোগেশ-রাকেশের সঙ্গে আশার বাড়ির লোকেদের বাদানুবাদ হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছলে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে প্রকাশ ও যোগেশ। প্রকাশ পালাতে পারলেও যোগেশ পারেনি। পর দিন ওমপ্রকাশের তালা বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হয় যোগেশ এবং আশার রক্তাক্ত মৃতদেহ। দু’জনেরই গায়ে ছিল ভয়াবহ অত্যাচারের চিহ্ন। |
|
আদালতের রায়ের পর আশার বাড়ির লোকেরা। ছবি: পিটিআই |
ময়না-তদন্তের রিপোর্টে অনুসারে, প্রচণ্ড মারধর করার পর দু’জনকেই বিদ্যুতের শক দিয়ে হত্যা করা হয়। ওমপ্রকাশের বেশ কয়েক জন প্রতিবেশী এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁদের বয়ান অনুযায়ী, চিৎকার শুনে তাঁরা ওমপ্রকাশের বাড়ির সামনে এসে দেখেন, দু’-তিন জন যোগেশকে বেদম ঠেঙাচ্ছে, দু’জন আশাকে চেপে ধরে রয়েছে, আর ঘরের বাইরে পাহারায় রয়েছে আশার মা ও কাকি। প্রতিবেশীরাই আশার বাড়ির লোককে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
আশা এবং যোগেশকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় আশার বাবা সুরয, মা মায়া, কাকা ওমপ্রকাশ, কাকিমা খুশবু এবং খুড়তুতো ভাই সঞ্জীবকে।
তার প্রায় দু’বছর পর এই মামলার রায় ঘোষণা করলেন অতিরিক্ত দায়রা বিচারক রমেশকুমার সিঙ্ঘল। রায় ঘোষণার সময়ে তিনি বলেন, “প্রতিটি ফুলের নিজস্ব সুবাস, রং এবং সৌন্দর্য থাকে। ঠিক সেই ভাবে মৃত দুই তরুণ-তরুণীও নিজেদের মতো করে বাঁচতে চেয়েছিল। যা প্রমাণ মিলেছে তাতে এ কথা পরিষ্কার যে, ওই দু’জন পরস্পরকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। কিন্তু যে পাঁচ জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছে তারাই সেই স্বপ্ন সত্যি হতে দেয়নি।” দোষীদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|