সংস্কৃতি যেখানে যেমন... |
|
সারা বাংলা প্রতিযোগিতা |
|
মল্লভূম যোগ সেন্টার ও ভারত কলা কেন্দ্রের (কলকাতা) যৌথ উদ্যোগে সম্প্রতি বিষ্ণুপুর কৃত্তিবাস মুখার্জী উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত হল সারা বাংলা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। চারটি বিভাগে রবীন্দ্র নৃত্য, রবীন্দ্র সঙ্গীত ও বসে আঁকো প্রতিযোগিতায় যোগ দেন ৫২৯ জন। আয়োজক সংস্থার পক্ষে সুবোধ দে জানান, মোট ৭২ জন সফল প্রতিযোগীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। শনিবার যদুভট্ট মঞ্চে পুরস্কার বিতরণী সভায় পরিবেশিত হয় পুতুল নাচ। ছিলেন বিষ্ণুপুরের উপ পুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্ট জনেরা।
|
ছাতা পরব |
ঐতিহ্য ও প্রথা মেনে ভাদ্র সংক্রান্তির দিনে পুরুলিয়া মফস্সল থানার চাকলতোড়ে ছাতা পরব হল। কথিত আছে, পঞ্চকোট রাজবংশের এক রাজা যুদ্ধে যাওয়ার পর অনেক দিন তাঁর খবর পাওয়া যায়নি। শেষে খবর আসে তিনি যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। ছাতা তুলে সেই খবর প্রজাদের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে চলে আসছে ছাতা পরব। এ বারও ছাতা তুললেন চাকলতোড় রাজপরিবারের সন্তান অমিতকুমার লাল সিংহ দেও। এ রাজ্যের সঙ্গে ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকেও বহু মানুষ এসেছিলেন।
|
করম মেলা |
পুরুলিয়ার জয়পুরের ফরেস্ট মোড়ের গোবিন্দ ময়দানে শনিবার দিনভর অনুষ্ঠিত হল দ্বাদশ করম মেলা। আদিবাসী কুড়মি সমাজের জয়পুর ব্লক কমিটির উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে করম নৃত্য হয়। ৯টি দল যোগ দিয়েছিল। উদ্যোক্তাদের তরফে ননীগোপাল মাহাতো জানান, ঝুমুর গানেরও আখড়া বসেছিল। সিদ্ধার্থ মাহাতো, সূর্যকান্ত মাহাতো, রামকৃষ্ণ মাহাতো ও মুকুলা মাহাতো ঝুমুর পরিবেশন করেন।
|
বিদ্যাসাগর স্মরণ |
নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরুলিয়ার টামনা বিদ্যাসাগর আবাসিক বালিকা বিদ্যালয়ে পালিত হল বিদ্যাসাগরের জন্মদিন। আলোচনাও হয়। লালপুর মহাত্মা গাঁধী মহাবিদ্যালয়েও আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। বিদ্যাসাগরের উপর গীতি আলেখ্য হয়।
|
সচেতনতায় লোকগান |
ভারত সরকারের সঙ্গীত-নাটক বিভাগ ও বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হাতিয়ার করল লোকগানকে। লোকশিল্পী চিন্ময় আদক ও তাঁর সম্প্রদায় বাঁকুড়ার ১৪টি ব্লকের গ্রাম-শহরে সম্প্রতি এ নিয়ে গান পরিবেশন করলেন। আকর্ষক এই সচেতনতা প্রচার অনুষ্ঠানে বহু মানুষ ভিড় করেছিলেন।
|
কলেজে অনুষ্ঠান |
একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বুধবার থেকে চারদিন ব্যাপী নানা অনুষ্ঠান হল বাঁকুড়ার পোয়াবাগানে। কলেজের পড়ুয়ারা শেষ দিনে নিজেরা একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে। গান ও নাচ পরিবেশিত হয়।
|
বার্ষিক উৎসব |
|
খাতড়ার সরস্বতী শিশু মন্দিরের একাদশ বার্ষিক অনুষ্ঠান। |
খাতড়ার সরস্বতী শিশু মন্দিরের একাদশ বার্ষিক উৎসব অনুষ্ঠিত হল শনিবার বিকেলে গুরুসদয় মঞ্চে। ওই প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা আবৃত্তি, নাচ, গান, নাটক-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
|
ছবিগুলি তুলেছেন দেবব্রত দাস, শুভ্র মিত্র ও সুজিত মাহাতো। |
সংক্ষেপে
• বিষ্ণুপুরের মল্লভূম যোগ সেন্টার রবিবার আয়োজন করেছিল বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। কৃত্তিবাস মুখার্জি হাইস্কুলে এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল এলাকার কচি-কাঁচারা।
•
রাইপুর ব্লকের বেনাকাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রবিবার দুপুরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হল। এ বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীকে বই দেওয়া হয়। আয়োজন করেছিল স্থানীয় আমচূড়া তৃণমূল বুথ কমিটি।
•
সম্প্রতি বড়জোড়ায় একটি সাহিত্যসভা হয়ে গেল। ছিল গল্প, কবিতা পাঠ। উপস্থিত ছিলেন জেলার কবি-লেখকরা।
|
|
গত ২২ সেপ্টেম্বর রামপুরহাটের ‘রক্তকরবী’ পুরমঞ্চে স্থানীয়
‘নৃত্যনিকেতন’ গোষ্ঠী একটি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করে।
সেখানে অভিনীত হয় রবীন্দ্র-নৃত্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’। |
|
শচীন বন্দোপাধ্যায় |
|
শচীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই। |
কর্মজীবনের দীর্ঘ চল্লিশ বছর তিনি কাটিয়েছেন বর্ধমানের উখড়া কোলিয়ারিতে। কর্মজীবনের সূত্রেই শচীনবাবু কালো মাটি ও লাল মাটির খেটে খাওয়া মানুষদের জীবন যাপন দেখছেন খুব কাছ থেকে। সেই পটভূমিই বারবার ফুটে ওঠে তাঁর উপন্যাস ও গল্পে। তিনি শচীন বন্দ্যোপাধ্যায়। উখড়ায় থাকাকালীন তিনি প্রথমে ‘কৃষ্ণমৃত্তিকা’ ও পরে ‘কৃষ্ণপ্রস্তর’ নামে লিটল ম্যাগাজিনও প্রকাশ করেছেন। শচীনবাবুর নিমন্ত্রণে উখড়ায় এসেছেন প্রয়াত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী কণিকা বন্দোপাধ্যায় থেকে সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ও। উখড়ার কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়ে বারো বছর আগে রামপুরহাটের বড়শাল গ্রামের ভিটেবাড়িতে ফিরেছেন শচীনবাবু। পেশাদারি জীবনে অবসর নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু সৃজনশীল মানুষের তো অবসর হয় না! তাই গ্রামের বাড়িতে ফিরেই গত চল্লিশ বছরের সংগৃহীত লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে তিনি তৈরি করেছেন গ্রন্থাগার। গত দশ বছর ধরে সেখানেই আয়োজন করে চলেছেন ‘বাৎসরিক সাহিত্য সভা’। বর্তমানে শচীনবাবু ব্যস্ত ‘গিরিমৃত্তিকা’ নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে। জীবনের বাহাত্তরটি বসন্ত পেরিয়েও সাহিত্য পাগল এই মানুষটিকে দেখা যায় নানা সাহিত্যসভায়।
|
আফতাবের ‘চণ্ডীদাস’ |
আল আফতাব। বীরভূমের একটি পরিচিত সংবাদ-সাপ্তাহিক ‘চণ্ডীদাস’-এর সম্পাদক। গত দু’ বছর ধরে আর্থিক অসুবিধার কারণে কাজী নুরুল ইসলামের (প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, যিনি পরে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হয়ে ‘কুমুদকিঙ্কর’ নামে পরিচিত হয়েছিলেন) ‘চণ্ডীদাসে’র প্রকাশ অনিয়মিত হয়ে পড়লেও, নতুন উদ্যম নিয়েছেন আফতাব। ১৯৮৭ সাল থেকেই তিনি এই পত্রিকার সম্পাদক। তাঁর আগে তিনি দীর্ঘদিন ওই পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক ও সাংবাদিক হিসেবেও কাজ করেছেন। ছোটগল্পের লেখক হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে আল আফতাবের। ‘চণ্ডীদাস’ পত্রিকার প্রকাশ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় মানসিক যন্ত্রণা ছিল ঠিকই, তবে এ বছর ‘চণ্ডীদাস’-এর শারদীয়া সংখ্যা প্রকাশের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন আফতাব। ১২টি উপন্যাস নিয়ে প্রকাশিত হতে চলেছে ওই শারদীয়া সংখ্যা।
|
অসিকার রহমান |
|
অসিকার রহমানের লেখা বই। |
জুলাই, ২০০০। নানুরে সূচপুর গণহত্যা। এলাকায় তখন শুধুই বারুদের গন্ধ। ওই মরা সময়েও নিজেদের সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় মগ্ন ছিলেন নানুরের খুজুটিপাড়ার অসিকার রহমান। ওই পরিবেশেও বীরভূমের এই কবি নিয়মিত ভাবে প্রকাশ করেছেন ‘উন্মোচন’ পত্রিকাটি। এলাকায় বজায় রেখেছেন শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির পরিবেশ। ওই পত্রিকাকে ঘিরে স্থানীয়দের নিয়ে তৈরি করেছেন লেখক গোষ্ঠীও। সেই ‘উন্মোচন’ এ বার ৩৮ বছরে পড়ল। আর অসিকার ইতিমধ্যেই লিখে ফেলেছেন ৮টি কবিতা গ্রন্থ। এখন রাজ্যের বহু লিটল ম্যাগাজিনে কবিতা লিখছেন তিনি।
|
সঙ্গীত সম্মেলন |
|
যুব সমাজকে আকৃষ্ট করতে ভারতীয় সঙ্গীতের বিভিন্ন ধারা নিয়ে সঙ্গীত সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে আকাশবাণী। দেশের অন্যান্য ২৪টি কেন্দ্রের মতো শনিবার বোলপুরেও ওই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহের ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন হিন্দুস্থানি কণ্ঠসঙ্গীত শিল্পী মিতা পণ্ডিত, কর্ণাটকি বেহালাবাদক ভি কৃষ্ণভেনি প্রমুখ। আকাশবাণীর উপ-মহানির্দেশক প্রদীপ মিত্র জানান, ১৯৫৪ সাল থেকে আকাশবাণী এই উদ্যোগ শুরু করেছে।
|
সাহিত্যসভা |
‘পদসঞ্চার’ ও ‘ভাবনা’ সাহিত্য গোষ্ঠীর উদ্যোগে একটি সাহিত্য সভা হয়ে গেল রামপুরহাটে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর মহারাজা হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক কার্তিক মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে আয়োজিত ওই সভায় জেলার পঞ্চাশ জন কবি ও গল্পকার কবিতা ও গল্পপাঠ করেন। কার্তিকবাবুর একটি ছড়ার বই প্রকাশকে কেন্দ্র করে ওই সভার আয়োজন করা হয়েছিল।
|
তথ্য: অরুণ মুখোপাধ্যায়।
ছবি: সব্যসাচী ইসলাম, অনির্বাণ সেন, বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী ও দয়াল সেনগুপ্ত |
|