নিজের বাড়িতে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন রাজ্যের উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী উজ্বল বিশ্বাসের ছেলে সায়ন বিশ্বাস। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত একটা নাগাদ কৃষ্ণনগরে তাঁদের ষষ্ঠীতলার বাড়ির দোতলার ঘরে গায়ে আগুন দেয় সে। পাশের ঘরেই ছিলেন মন্ত্রী। তিনি ছুটে যান ছেলেকে বাঁচাতে। ছেলের গায়ের আগুন নেভাতে গিয়ে আগুনের হল্কায় আহত হয়েছেন তিনিও। সায়নকে নিয়ে প্রথমে তাঁরা ছুটে যান শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেই হাসপাতাল সূত্রে রবিবার জানা গিয়েছে, সায়নের শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। তবে কেন তিনি এমন কাজ করলেন, তা পরিষ্কার নয়।
পুলিশের অনুমান, খুব ঠান্ডা মাথাতেই সায়ন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, পরিকল্পনা মতো গাড়ির পেট্রোল নিজের ঘরে এনে রেখেছিলেন তিনি। ওই দিন রাতে তাই নিজের গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। |
বাবা-মায়ের সঙ্গে সায়ন। ফাইল চিত্র |
সায়নের দু’টি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। কৃষ্ণনগর থানার আইসি’কে উদ্দেশে লেখা একটি সুইসাইড নোটে সায়ন লিখেছেন, তাঁর এই কাজের জন্য কেউ দায়ি নয়। অন্য চিঠিটিতে তিনি এই কাজের জন্য বাবা-মা’র কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরিন্দম দত্তচৌধুরি বলেন, “সায়ন বিশ্বাস আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কেন এমনটা করলেন তা এখনও পরিস্কার নয়।”
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন একটু রাত করেই উজ্জ্বলবাবু বাড়ি ফেরার পরে সায়নের সঙ্গে তাঁর কিছু কথা হয়। তার পরে পাশেই নিজের ঘরে চলে যান সায়ন। কিছু পরেই উজ্জ্বলবাবু দেখেন, সায়ন ঘরে জ্বলন্ত অবস্থায় ছোটাছুটি করছে। আচমকা এই দুর্ঘটনায় শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে এলাকা। পাড়ার বারোয়ারি পুজো থেকে সব কিছুতেই এগিয়ে যান সায়ন। প্রতিবেশী দীপক বিশ্বাস বলেন, “সায়ন বরাবরই মিশুকে। তাঁর কাছ থেকে পাড়ার কেউ কখনও খারাপ ব্যবহার পায়নি।” মুড়াগাছা হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছে সায়ন। এ বছরই মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির একটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে পাশ করে সম্প্রতি সোনারপুরে একটি বি টেক কলেজে সে ভর্তি হয়েছে। মুড়াগাছা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিমলেন্দু সিংহ রায় বলেন, “বড় মিষ্টি ব্যবহার ছিল সায়নের। পাশ করে চলে যাওয়ার পরেও যখনই দেখা হয়েছে, এগিয়ে এসে সম্মান দিয়ে কথা বলেছে।” |