নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
প্রতিদিনের মতো রবিবার সকালেও মোটর ট্রেনিং স্কুলে গাড়ি চালানো শিখতে যাচ্ছিলেন হাওড়ার কদমতলার বাসিন্দা রীতা রায় (৫০)। মোটরবাইকে চাপিয়ে তাঁকে নিয়ে যাচ্ছিলেন ছেলে সৌম্যদেব (২০)। রাস্তাতেই ঘটে গেল দুর্ঘটনা। পিছন থেকে আসা ট্রেলার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে মোটরবাইকে। ঘটনাস্থলেই মারা যান সৌম্যদেব। গুরুতর জখম অবস্থায় রীতাদেবীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁরও। ট্রেলার-সহ চালক পতালক।
সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়ের টোল-প্লাজার কাছে। পুলিশ জানায়,
|
রীতা রায় |
রীতাদেবী ও সৌম্যদেবের বাড়ি হাওড়ার কদমতলা এলাকার বৃন্দাবন মল্লিক লেনে। তাঁদের গন্তব্য মোটর ট্রেনিং স্কুলটি শিবপুরের বিদ্যাসাগর সেতু সংলগ্ন এলাকায়।
দুর্ঘটনার পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রীতাদেবীকে প্রথমে হাওড়া স্টেট জেনালের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে এস এস কে এমে নেওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রীতাদেবী হাওড়ার বিজয়কৃষ্ণ গার্লস কলেজের অধ্যক্ষা। মাসখানেক আগেই তিনি ওই কলেজে যোগ দিয়েছিলেন। এর আগে তিনি খড়্গপুর আই আই টি-তে পড়াতেন। সৌম্যদেব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। রীতাদেবীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরেই তাঁরা মোটরবাইকে চেপে শিবপুর এলাকার ওই ড্রাইভিং স্কুলে যাচ্ছিলেন। রীতাদেবীই গাড়ি চালানো শিখতেন। তাঁকে ড্রাইভিং স্কুল পর্যন্ত মোটরবাইকে পৌঁছে দিতেন সৌম্যদেব। গাড়ি চালানো শেখার সময়েও সৌম্যদেব মায়ের সঙ্গে থাকতেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিদ্যাসাগর সেতু সংলগ্ন কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে সারা দিন বড় বড় ট্রেলার দ্রুত গতিতে চলে। এ দিন ভোরে যে ট্রেলারটি ধাক্কা মারে, তার গতিবেগও খুব বেশি ছিল বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই ট্রেলারটি ধাক্কা মেরেই দ্বিতীয় সেতুর টোল-প্লাজার দিকে পালিয়ে যায়। দুর্ঘটনার পরে রীতাদেবীকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মোটরবাইকটি পথের এক ধারে পড়ে রয়েছে। রাস্তার উপরে চাপ চাপ রক্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রেলারগুলি বেপরোয়া ভাবে চলাচলের জন্য এর আগেও একাধিক বার দুর্ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের কাছে বারংবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। যদিও জেলার এক পুলিশকর্তার দাবি, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বেড়েছে। আগের তুলনায় দুর্ঘটনার সংখ্যাও কমেছে। |