হলদিয়ায় অচলাবস্থাই |
অপহরণের অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
চেয়ারম্যান মণীশ জৈনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করলেন হলদিয়া বন্দরের আধিকারিক রমাকান্ত বর্মন। শনিবার হলদিয়া থানায় লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। মণীশবাবু এবং রাজ্যসভার এক সদস্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ দিন সকালেই কাজে পুনর্বহালের দাবিতে ফের বিক্ষোভ মিছিল করেন এবিজি সংস্থার ছাঁটাই হওয়া কর্মীরা। রানিচক থেকে মিছিল করে গিয়ে বন্দরের চিরঞ্জীবপুর অপারেশনাল অফিসের সামনে অবস্থানে বসেন তাঁরা। ছাঁটাই না হওয়া শ্রমিকদের একাংশও তাতে সামিল হন। কার্যত তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে ওই মিছিল-অবস্থান করা হয়। কবে কারও হাতে কোনও দলীয় পতাকা ছিল না।
বন্দরের চেয়ারম্যানকে নিয়ে জলঘোলার সূত্রপাত গত বুধবার। বস্তুত শ্রমিক অসন্তোষে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগে সে দিনই রমাকান্ত বর্মনকে বদলির নির্দেশ দিয়েছিলেন বন্দরের চেয়ারম্যান মণীশবাবু। তা নিয়ে রমাকান্তবাবু পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করেন। এর পরে তিনি অপহরণের অভিযোগ তোলায় মণীশবাবুর প্রতিক্রিয়া, “২৩ সেপ্টেম্বর ঘটনাটি ঘটেছিল বলে রমাকান্ত বর্মন দাবি করছেন। ২৬ তারিখ ওঁকে বদলি করা হয়। পরে সাসপেন্ডও করা হয়েছে। এত দিন পরে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।” এসডিপিও (হলদিয়া) অমিতাভ মাইতি বলেন, “অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
বন্দরে শ্রমিক বিক্ষোভ। ছবি: আরিফ ইকবাল খান |
বন্দর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার থেকে হলদিয়া বন্দরের ২ ও ৮ নম্বর বার্থে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পণ্য খালাসকারী এবিজি গোষ্ঠীর ২৭৫ জন শ্রমিক ছাঁটাই হন। এর পর থেকে ওই দু’টি বার্থে আর কাজ হয়নি।
অচলাবস্থার কারণে বৃহস্পতিবার রাতে ২ নম্বর বার্থের অর্ধসমাপ্ত কোকিং কোল বোঝাই ‘আথিনা ক্যারাস’ নামের জাহাজটিকে অন্য বার্থে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই রাতেই অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা ‘জেথার’ নামে কোকিং কোল বোঝাই আর একটি নতুন জাহাজকে ফের ২ নম্বর বার্থে নোঙর করান বন্দর কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বিকেলে শ্রমিকেরা কাজ করতে গেলে ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ বাধে। হ্যান্ডলিং এজেন্সির শিপ লিডার সুব্রত মণ্ডল ও ক্রেন অপারেটর জখম হন। এর পরেও অবশ্য অচলাবস্থা কাটেনি। এ দিন বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা সমীরণ বেতালের দাবি, “আমাদের কাজ ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় কেউ কাজ করবে না। সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী ও শ্রমিক নেতা শ্যামল আদক ওই বার্থ দু’টির ক্ষেত্রে আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।” শ্যামলবাবুর বক্তব্য, “শ্রমিকেরা সমস্যায় পড়েছেন। ওঁরা আমাদের ঘরের ছেলে। তাই ওঁদের সঙ্গে নিয়ে আইনি দিক দিয়ে যা করা যায় করছি।” তবে শুভেন্দু অধিকারী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। |
|