গুজরাতের খুশবু তুলে ধরতে গুর্জরদেশের রঙিন পাগড়িতে সেজেছিলেন অমিতাভ বচ্চন। বাংলার জন্য তাঁর প্রথম প্রচার-ছবিতে শাহরুখ খান কিন্তু পর্দায় এলেন শাহরুখ হয়েই।
বাঙালি-বাবু নয়। তিনি যেমন, তিনি তেমন। স্যুট-সজ্জিত। দু’মিনিটের বিজ্ঞাপনী ছবিতে সেই চেহারাতেই ‘নতুন বাংলা, প্রগতির বাংলা’-র কথা বলে গেলেন রাজ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর।
কলকাতায় গত চলচ্চিত্র উৎসবের সময়েই শাহরুখকে বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হতে অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে যান শাহরুখও। আইপিএলে শাহরুখের দল ‘কলকাতা নাইট রাইডার্স’-এর জয়ের পরে ইডেনে তাদের রাজকীয় সংবর্ধনাতেও খামতি রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী। এ বার রাজ্যের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়তে বিজ্ঞাপনী-ছবিতে শাহরুখকে ব্যবহার করা শুরু করল রাজ্য। হিন্দি এবং ইংরেজি দু’টি ভাষাতেই তৈরি হয়েছে এই বিজ্ঞাপন। শনিবার নন্দন-২ প্রেক্ষাগৃহে ছবির সিডি-র আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ঘটল। |
রাজ্যের বিজ্ঞাপনে শাহরুখ। নন্দনের প্রদর্শনীতে। —নিজস্ব চিত্র |
শাহরুখকে সামনে রেখে সরকারি-প্রচারের সিরিজে এটিই প্রথম বিজ্ঞাপন। পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। সঙ্গীত পরিচালনায় শান্তনু মৈত্র। ছবিতে ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটির একটি অংশ গেয়েছেন শান। দেশে-বিদেশে কোন কোন টিভি চ্যানেলে বা অন্য কোনও মাধ্যমে কী ভাবে এই বিজ্ঞাপনটিকে ব্যবহার করা হবে, তা ঠিক করতে একটি কমিটি গড়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। দেশে-বিদেশে পরিচিত মুখকে ব্যবহার করে প্রচার এ দেশের অন্য রাজ্যেও দস্তুর। নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে পর্যটন দফতরের প্রচারক হিসেবে গুজরাতের বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থানের পটভূমিতে দেখা গিয়েছে অমিতাভকে। শাহরুখকে নিয়ে বিজ্ঞাপনটিতে কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের একটি সামগ্রিক চিত্রের নির্মাণ। ছবির নাম ‘বেঙ্গল লিড্স’। এখানে তাই রাজ্যের শিল্প-স্বাস্থ্য-শিক্ষা-সংস্কৃতির বিভিন্ন দিকই ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে। উঠে এসেছে দার্জিলিং থেকে সুন্দরবনের ছবি। সেখানে দুর্গাপুর-রাজারহাটের শিল্পক্ষেত্র যেমন আছে, তেমনই আছে বিনপুরের স্কুলে ক্লাসভর্তি ছাত্রছাত্রীর ছবি। মন্দিরে-মসজিদে-গির্জায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিরও আভাস মিলবে। নন্দিনীদেবী বলেন, “রাজ্যের সার্বিক ছবিটি তুলে ধরার পরে সিরিজের অন্য ছবিগুলিতে আলাদা-আলাদা ভাবে এক-একটি দিক তুলে ধরা হবে। পর্যটনের সম্ভাবনাও গুরুত্ব পাবে।” আপাতত এই ছবিতে শাহরুখ বলেছেন, ‘দুনিয়া সুন্দর। কিন্তু বাংলার মধ্যে একটা বিশেষ দিক রয়েছে।’ ফলে, এটাই শেষ নয়। এর পর হয়তো ধুতি-পাঞ্জাবিতেই মাঠে নামতে দেখা যাবে কিং খানকে। |