সিনেমা সমালোচনা...
‘হিরোইন’ খারাপ লাগার ৫ কারণ
প্রায় তিন বছর আগে মধুর ভান্ডারকরের ‘ফ্যাশন’ ছবিটার রিভিউ করেছিলাম, পত্রিকাতেই।
গত রোববার সাউথ সিটি থেকে ‘হিরোইন’ দেখে বেরোতে বেরোতে ভাবছিলাম কত কিছু বদলে গেছে এই তিন বছরে। রাহুল দ্রাবিড় রিটায়ার করলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হলেন, ঐশ্বর্যা রাইয়ের বেবি হল, কিন্তু মধুর ভান্ডারকর যেন বদলালেন না। ছবির রিভিউ নিয়ে বিরাট বক্তব্য দিয়ে বিশ্লেষণী লেখা আমার পড়তে ভাল লাগে না। তাই নিজেও লিখব না। শুধু টুকরো টুকরো কিছু ভাল লাগা- খারাপ লাগা তুলে দিলাম আপনাদের কাছে।
হিরোইন
করিনা, রনদীপ হুডা, অর্জুন রামপাল
ওই যে প্রথমেই লিখলাম এত কিছু চারিদিকে বদলালেও মধুর ভান্ডারকর যেন আর বদলালেন না। এই ছবি দেখতে দেখতে মনে হয়েছে যেন ‘ফ্যাশন’ ছবিটাই দেখছি। ওখানে পটভূমি ছিল মডেলিংয়ের জগৎ। এটা ফিল্মের। ওখানে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এখানে করিনা। এমনকী স্টোরিলাইনও যেন এক। সেই ছোট শহর থেকে আসা অ্যামবিশাস মেয়ে, ব্যক্তিগত জীবনে হতাশা পুরোটাই দেজাভু।

মধুর ভান্ডারকরের এই ছবিটা দেখতে দেখতে আমার মনে হয়েছে, পরিচালক হ্যাজ এ ভেরি ‘স্যাডিস্ট’ অ্যাপ্রোচ টু লাইফ। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধি হয়েও উনি যেন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কোনও ভাল দিকই দেখতে পারেন না। এটা কেন হবে আমি বুঝি না। হ্যাঁ, নিশ্চয়ই খারাপ দিক আছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে, কিন্তু দর্শকদের শুধু খারাপ দিকটাই দেখাব— এটা ভীষণ আনফেয়ার।

আর কী জানেন, ফ্যাশন ডিজাইনার হলেই যে সে গে হবে এটা আজ থেকে সাত বছর আগে হলে দর্শকদের শক লাগত। আজকে যখন ‘হোমোসেক্সুয়ালিটি’ নিয়ে সবাই ওয়াকিবহাল তখন ডিজাইনার মানেই গে, এটা বস্তাপচা মানসিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। স্টিরিওটাইপ এই ছবিতে এত বেশি যে লিখতে বসলে যেন তা থামার নয়। যদিও রণবীর শোরে এই ছবিতে যথেষ্ট ভাল অভিনয় করেছেন। তাও রিয়েলিস্টিক ফিল্মমেকার মানেই তাকে বাঙালি দেখাতে হবে, এটা সংকীর্ণ চিন্তাধারা তো বটেই।
করিনাকে ভাল লাগার ২ কারণ
এই ছবিতে করিনা একাই পাঁচশো। ‘হিরোইন’ সিনেমাটা বসে দেখা যায় তার একমাত্র কারণ করিশ্মা কপূরের ছোট বোন। শি ইজ অ্যামেজিং ইন দিস ফিল্ম।
আমরা সবাই করিনার ভীষণ গ্ল্যামারাস রূপটা দেখেই অভ্যস্ত। কিন্তু এই ছবিতে অ্যাকিউট ডিপ্রেশনের সিনে ওর থ্যাবড়া হয়ে যাওয়া কাজল, সর্দি, চোখের নীচে ডার্ক সার্কল— না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত। করিনা কপূর কেন, কোনও মহিলাকেই ওই রূপে দেখতে পছন্দ করবে না কেউ। সেখানে করিনা ওই সিনগুলো করে বুঝিয়ে দেয় অভিনয় নিয়ে ও কতটা সিরিয়াস।
গত বছর একটা ফিল্মের শু্যটিং করেছিলাম সোনাগাছিতে রিয়েল লাইফ লোকেশনে। শু্যটিঙের ফাঁকে ফাঁকে অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছিল। অনেককে অবজার্ভও করেছিলাম। করতে করতে মনে হয়েছিল সিনেমাতে রেডলাইট এরিয়াকে বাস্তবের থেকে কত আলাদা ভাবে দেখানো হয়। অত জমকালো জামাকাপড় , অত মেক আপ করে কিন্তু সবাই বসে থাকে না। মধুর কিন্তু সেই ভুলটা এই ছবিটাতেও করেছেন। এখানে রেডলাইট এরিয়ার পোট্রায়েল আমার ভীষণ ছেলেমানুষি মনে হয়েছে।

পপকর্ন সহযোগে সেদিন ছবি দেখতে দেখতে আমি তো প্রায় বিষম খেয়ে মরছিলাম, যখন দেখলাম এই ছবিতে সঞ্জয় সুরির মতো অভিনেতাকে একজন সুপারস্টার হিসাবে দেখানো হয়েছে। সঞ্জয় সুরি যদি সুপারস্টার হন, তাহলে আমাদের কাঞ্চা (কাঞ্চন মল্লিক)কেও একদিন টার্মিনেটর ছবিতে টার্মিনেটরের চরিত্রে দেখা যাবে। এটা কী করলেন আপনি মধুরবাবু? চরিত্রগুলো দেখে তো বিশ্বাসযোগ্য হওয়া দরকার দর্শকদের। শুধু সঞ্জয় সুরি নয়। ছবিতে যে অভিনেতাদের করিনা কপূরের চরিত্রের বিপরীতে দেখা গেছে, তাঁদের থেকে বেটার জুনিয়র আর্টিস্ট আমাদের টালিগঞ্জে আছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.