আগে তো পরীক্ষায় পাশ করুন, তার পর নাগরিক হওয়া। ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেতে গেলে, ভারত-সহ ইউরোপের বাইরের যে কোনও দেশের মানুষের জন্য এটাই সরকারি নিয়ম। আর সেই ‘পরীক্ষাতেই’ বেমালুম ফেল করে গেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন স্বয়ং!
গত কাল তখন টিভির পর্দায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। শুরু হয়েছে ডেভিড লেটারম্যানের চ্যাট শো। প্রশ্ন ছুড়লেন সঞ্চালক। “রুল ব্রিটানিয়া-র সুরকার কে?”
অপ্রস্তুত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। থতমত খেয়ে পাল্টা প্রশ্ন, “এলগার?” মিনিটের ব্যবধানে পরের প্রশ্ন, “আচ্ছা আপনি কি আমার পরীক্ষা নিচ্ছেন?”
বেশ কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করেও জবাব পাননি লেটারম্যান। শেষে তিনিই বলে দেন, ওই ব্রিটিশ দেশাত্মবোধক গানের সুরকার টমাস আর্ন এবং লিখেছিলেন জেমস টমসন।
লেটারম্যানের পরের প্রশ্ন ‘ম্যাগনা কার্টা’-র বিষয়ে। ব্রিটেনের রাজপরিবারের ক্ষমতা সংক্রান্ত মহাসনদ ‘ম্যাগনা কার্টা’ স্বাক্ষর হয়েছিল কবে? ‘১২১৫’ বলেই থেমে যান অক্সফোর্ডের প্রাক্তন ছাত্র ক্যামেরন। কোথায় হয়েছিল, তা বলতেও বেশ কয়েক মিনিট সময় নিয়ে নেন। এর পর বিব্রত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি ম্যাগনা কার্টা-র অর্থ জানেন না।
একের পর এক হোঁচট। বিধ্বস্ত ক্যামেরন আসনের এক পাশ থেকে অন্য পাশে সরে বসলেন। সরস কথায় তীক্ষ্মতা পরিষ্কার, “শেষমেশ আমাকেই পেলেন। এটা কিন্তু ঠিক না। আমার কেরিয়ার বোধহয় এখানেই শেষ হয়ে গেল।”
কিন্তু বললেই বা শুনছে কে? গত বছরই তো তিনি বলেছিলেন, “ব্রিটিশ নাগরিকত্ব-পুস্তিকায় অনেকখানি অংশ জুড়ে রয়েছে দেশের ইতিহাস। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে পরীক্ষায় ইতিহাসের তেমন কোনও প্রশ্নই আসে না। পরীক্ষার প্রশ্নে দ্রুত বদল আনতে হবে।”
আজ প্রায় সব ব্রিটিশ দৈনিকেই শিরোনামে ক্যামেরন। খবর একটাই, ‘ফেল’ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তিনি নিজেই দেশের ইতিহাস জানেন না। তবে ভরসার জায়গা একটাই, হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পর ক্যামেরনকে আর নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে না। |