বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: মঙ্গলে প্রাণরহস্য
লাল গ্রহে জলের উৎস লাভা
রুক্ষ ধু ধু পাথুরে প্রান্তর। প্রাণের চিহ্ন মাত্র নেই কোনও দিকে। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি সরাসরি আছড়ে পড়ছে মঙ্গলের পৃষ্ঠে। উপগ্রহ চিত্রই হোক বা কিউরিওসিটির পাঠানো ছবি, সব ক্ষেত্রেই মঙ্গল সম্পর্কে এমন তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে।
এত দিন বিজ্ঞানীরা দাবি করতেন, চিরকাল এমন ছিল না মঙ্গল। আজ থেকে প্রায় ৩৭৫ কোটি বছর আগে সুজলা-সুফলা না হোক, রীতিমতো জলের ধারা বয়ে যেত মঙ্গলের বুকে। এতটাও রুক্ষ ছিল না সেখানকার আবহাওয়া। এর পর কোনও এক অজানা কারণে পুরোপুরি বদলে গেল মঙ্গল। বাষ্প হয়ে উবে গেল মঙ্গলের সব জল।
তবে কল্পনা নয়, এই দাবির পিছনে রীতিমতো প্রমাণ দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। কারণ বিভিন্ন উপগ্রহ চিত্রে মঙ্গলের মাটিতে কাদার প্রমাণ পেয়েছিলেন তাঁরা। খোঁজ পেয়েছিলেন বিভিন্ন রাসায়নিকের, যা বহু বছর ধরে পাথরের সঙ্গে জলের বিক্রিয়ায় তৈরি হয়। অন্তত পৃথিবীতে এই ভাবেই তৈরি হয়েছিল ওই রাসায়নিক। কিন্তু এত বছর ধরে যে প্রমাণগুলিকে বিশ্বাস করে মঙ্গলের মাটিতে প্রাণের খোঁজে অভিযান চালাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা, এ বার তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র।
ফ্রান্সের পোয়াতিয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, বরফ গলা জল নয় বরং অগ্ন্যুৎপাতের ফলে যে লাভা মঙ্গলপৃষ্ঠে উঠে এসেছিল, তার ভিতরে থাকা জলের সঙ্গে পাথরের বিক্রিয়ায় নাকি তৈরি হয়েছিল ওই কাদা আর রাসায়নিক। তাঁদের এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার জিওসায়েন্স’-এ।
গবেষকদলের প্রধান অ্যালেন মনিয়েঁ জানান, ফ্রান্সের মুরুরোয়া খাতে ১৯৬০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ কয়েক বার পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভূপৃষ্ঠের অনেক গভীর থেকে মাটির বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই নমুনায় পাওয়া গিয়েছিল ‘ফাইলোসিলিকেট’ নামে এক ধরনের কাদা যা হুবহু মঙ্গলপৃষ্ঠে পাওয়া কাদার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। এত দিন পরে সেই নমুনা পরীক্ষা করে অ্যালেনরা দাবি করেছেন, জলের মধ্যে থাকা খনিজের সঙ্গে পাথরের বিক্রিয়ায় নয়, বরং লাভার জলীয় উপাদানের সঙ্গে পাথরের বিক্রিয়াতেই তৈরি হয়েছিল এই ধরনের কাদা।
আর এই গবেষণাই মঙ্গলে জল থাকার ধারণাকে একটা জোর ধাক্কা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে মঙ্গলে প্রাণ থাকার সম্ভাবনা নিয়েও। তবে এখনই এতটা নিরাশ হতে রাজি নন অ্যালেন। তিনি জানান, লাভা-জল হয়তো প্রাণের জন্ম দিতে পারবে না। কিন্তু মঙ্গলের কোনও কোনও অঞ্চলের মাটিতে কাদা ছাড়াও জলের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তবে তাতে অ্যাসিডের পরিমাণ অনেক বেশি। পৃথিবীতে অবশ্য এ রকম বেশি মাত্রার অ্যাসিড মিশ্রিত জলেও প্রাণের খোঁজ মিলেছে। তাই মঙ্গলেও পাওয়া যেতেই পারে প্রাণের সন্ধান।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.