|
|
|
|
|
মুছে যাওয়া দাগগুলি...
মুখে এতটুকু দাগ-খুঁতেই আমরা মুষড়ে পড়ি। ফুসকুড়ির মতো স্কিনট্যাগস
বা
সাদা দাগ ‘মিলিয়া’ হলে তো কাঁদো কাঁদো রব। চিন্তা নেই।
ওরা আপনার
সুন্দর মুখটা নষ্ট
করবে না। ঠিক মিলিয়ে যাবে। সময়ের সঙ্গে অথবা
চিকিৎসার জাদুদণ্ডে। বললেন ডা. সুব্রত মালাকার | |
|
আমাদের ত্বকে এমন কিছু সমস্যা মাঝেমধ্যেই দেখা যায়, যেগুলি মারাত্মক না হলেও সৌন্দর্যের পক্ষে ভাল নয়। অর্থাৎ, প্রথম দর্শনেই একটু খারাপ দেখায়। ‘এটা আবার কী হল রে?’ এই ধরনের একটা মন্তব্য ভেসে আসে।
ত্বকের এই ধরনেরই একটি সমস্যা হল ‘স্কিনট্যাগস’।
স্কিনট্যাগস ঠিক কী
ত্বকের উপরিভাগে একটি ফুসকুড়ির মতো ঝুলে থাকে। এটাকেই স্কিনট্যাগস বলে। এগুলিতে কোনও ভয়ের কারণ নেই। স্কিনট্যাগস ত্বকের রং বা কালো রঙের হয়। শরীরের যে কোনও অংশে হতে পারে। তবে, বিভাজিকা অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। বেশির ভাগ সময়ই, এটি খুব ছোট হয়। তবে খুব কম ক্ষেত্রে বড়ও হয়ে যায়। সাধারণত, এটি হবার কারণ বংশানুক্রমিক। যখন এটি আকারে বড় হয়, তখন কিশমিশ বা আঙুরের মতো দেখায়।
শরীরের কোথায় হয়
শরীরের যে কোনও জায়গায় হতে পারে। যেমন গলা, ঘাড়, বাহুমূল, চোখের চারিদিকে, স্তনের নীচের অংশে ইত্যাদিতে।
কাদের হয়
কিশোরকিশোরীদের ওজন খুব বেশি হলে স্কিনট্যাগস হতেই পারে। তবে, ৫৫% লোকেরই জীবনের কোনও না কোনও সময় স্কিনট্যাগস হয়। মধ্যবয়সীদের প্রায়ই হয়, ষাট বছর পর্যন্ত সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। যারা একটু মোটার দিকে, তাদের হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
স্কিনট্যাগস কি টিউমার?
হ্যাঁ, এটি এক ধরনের টিউমার। তবে সম্পূর্ণ নিরাপদ। এর থেকে ক্যান্সার হওয়ার কোনও ভয় নেই।
স্কিনট্যাগস থেকে কী কী সমস্যা হয়
• এটি হলে দেখতে খারাপ লাগে বলে সৌন্দর্য খানিকটা বিঘ্নিত করে। কখনও কখনও ব্যথা হয়।
• জামার কলারে ঘষা লেগে ঊরুতে হলে ব্যথা হয়।
• এটি খুঁটলে রক্ত বের হয়। তখন ব্যথা হয় এবং পরে সেটি কালো হয়ে যায়।
• গয়নার ঘষা লেগে স্কিনট্যাগস হতে পারে।
চিকিৎসা
এটি দেখতে খারাপ লাগলে বা ব্যথা হলে, তবেই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। অনেক সময় খুঁটলে সংক্রমণ হয়ে যায়, তখন চিকিৎসা খুব জরুরি হয়ে পড়ে।
ক্রায়োথেরাপি
এটি তরল নাইট্রোজেন দিয়ে করা হয়। কয়েক দিনের মধ্যে চলে যায়।
ইলেকট্রোসার্জারি
এই চিকিৎসা করার পর ত্বকের ওই অংশটি জ্বলে যায় এবং পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে খসে পড়ে।
লেসার
• লেসার করার সঙ্গে সঙ্গে এটি চলে যায়। তবে একটি কালো দাগ থাকে। দাগটি দশ দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়।
• ত্বকের ওই বিশেষ অংশটি কেটে ফেলা সম্ভব হয়। তবে খুব প্রয়োজন না হলে কাটার দরকার হয় না। অবশ করার প্রয়োজন হয় না। ইচ্ছে হলে অ্যানেসথেটিক কোল্ড ক্রিম লাগানো যেতে পারে। |
কাদের বেশি হয় |
• যে কোনও বয়সে হতে পারে। যে কোনও জাতের পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে এবং সদ্যোজাত শিশুর হতে পারে।
• কিছু কিছু মিলিয়া আছে, যেটি বিশেষ কিছু অসুখের পর দেখা যায়।
• কিছু অসুখ আছে, যা হওয়ার পর ত্বকে ফোসকা দেখা যায়।
• পুড়ে যাওয়ার পর মিলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
• পূর্বে ত্বকের কোনও চিকিৎসা হওয়ার পর এটি হতে পারে।
যেমন লেসার, ডার্মাএব্রেশন (dermabrasion)
• যাঁদের ত্বক রোদ্দুরে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের বেশি হয়। |
|
মিলিয়া
মিলিয়া দেখতে ঘামাচির দানার মতো। কিন্তু রং সাদা। চাপ দিলে বেশ শক্ত লাগে। এটাই মিলিয়ার বৈশিষ্ট্য। সাধারণত এটি নাকের দু’পাশে এবং চোখের চার পাশে হয়।
মিলিয়া কী
ত্বকের কেরাটিন অনেক সময় ত্বকের একটু গভীরে প্রবেশ করে। যার জন্য ওই জায়গাটি উঁচু হয়ে যায়। এরই নাম মিলিয়া।
কোথায় বেশি হয়
নাকের দু’পাশে, চোখের চার পাশে এটি বেশি সংখ্যায় দেখা যায়। এ ছাড়া, দাঁতের মাড়ি এবং টাকরাতে মিলিয়া বেশি হয়।
নিজে কী ভাবে যত্ন নেবেন
• সদ্যোজাত শিশুর মিলিয়া হলে তার কিছু দিন পরে নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়।
• বড়দের বেশ কিছুটা সময় লাগে।
• মুখটি কোনও মতেই ঘষবেন না। ঘষলে এটি বৃদ্ধি পায়।
• কখনওই খুঁটে তোলার চেষ্টা করবেন না। কারণ খুঁটলে অনেক সময়ই ত্বকের ওপরে বিশ্রী ক্ষতচিহ্ন থেকে যায়।
চিকিৎসা
• বাচ্চাদের কোনও চিকিৎসার দরকার হয় না। তবে বড়দের ক্ষেত্রে কোনও কোনও সময় চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
• সংখ্যায় বেশি হলে এক ধরনের সূচ দিয়ে তোলা হয়। এবং প্রয়োজন বোধ করলে ইলেকট্রোসার্জারিও করা হয়। |
যোগাযোগ: ২৩৫৮-৮০১০, ৯৪৩৩০২৩৮৭৯
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা
|
|
|
|
|
|