দুই শহরের ডেঙ্গি-যুদ্ধ
হাওড়া পুরসভাকে ‘কাঠগড়ায়’ দাঁড় করালেন মুখ্যমন্ত্রী
টাকা নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করার অভিযোগ উঠল হাওড়া পুরসভার বিরুদ্ধে। শুক্রবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দল পর্যন্ত হাওড়া পুরসভার পরিষেবা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে। টাকা নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করার অভিযোগের পাশাপাশি নিয়ম না মেনে পরীক্ষার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।” মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, হাওড়ার পুর-পরিষেবা নিয়ে তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। রাস্তায় যত্রতত্র ময়লা জমে থাকে, পানীয় জলের অবস্থা শোচনীয়। যে কোনও সময়ে যে কোনও রোগ সেখানে মহামারির আকার নিতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, পরিষেবা নিয়ে রাজনীতি চলছে হাওড়ায়। তিনি বলেন, “জেলা পরিষদ থেকে আমাকে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু তাদেরও তো পরিকাঠামো আছে। ওরা নিজেরা কেন কিছু করছে না, সেটাই আমার প্রশ্ন। মানুষকে বাঁচানোটাই মূল লক্ষ্য। তা নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।”
এ দিন ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হাওড়ায় আসেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং পুরসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা প্রথমে জেলাশাসক শান্তনু বসুর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনার অজয় রানাডে, হাওড়ার পুর-কমিশনার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়-সহ জেলার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। ওই বৈঠকের পরে জেলাশাসককে সঙ্গে নিয়ে মন্ত্রী এবং পুরসচিব যান হাওড়া পুরভবনে।
ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি, তবু হুঁশ নেই কারও। হাওড়া জেলা
হাসপাতালের পাশেই খোলা নর্দমা। —নিজস্ব চিত্র
সেখানেও তাঁরা পুরকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না মেয়র মমতা জয়সোয়াল ও মেয়র পরিষদের সদস্যেরা। পুরমন্ত্রী পরে আক্ষেপ করে বলেন, “হাওড়ায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি যখন মারাত্মক আকার নিয়েছে, তখন ভেবেছিলাম, মেয়র উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু এসে শুনলাম, মেয়র গোয়ায় বেড়াতে গিয়েছেন। এ যেন রোম যখন পুড়ছে, তখন নিরো বেহালা বাজাচ্ছেন।” যদিও পরে ডেপুটি মেয়র কাবেরী মৈত্র বলেন, “মেয়র মোটেই গোয়া বেড়াতে যাননি, চিকিৎসার জন্য মুম্বই গিয়েছেন।”
মন্ত্রী আরও বলেন, “হাওড়া জেলায় এখনও পর্যন্ত ৩২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। এর মধ্যে শহরেই রয়েছেন ২৭ জন রোগী। আমরা খবর পেয়েছিলাম, এই শহরে রক্ত পরীক্ষার জন্য পুরসভা বাসিন্দাদের থেকে টাকা নিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এই অভিযোগ করার পরেই পুরসভা তড়িঘড়ি ওই ক্লিনিকে রক্ত পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়।” মন্ত্রী জানান, ডেঙ্গি পরিস্থিতি সামলানোর জন্য যাবতীয় দায়িত্ব জেলার জন্য জেলাশাসককে ও হাওড়া শহরের জন্য পুলিশ কমিশনারকে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ৪০ জনের একটি দল গড়ছেন, যারা পুর-এলাকায় বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি ঘুরে মানুষকে সচেতন করবে। সেই সঙ্গে পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখবে।
পুরমন্ত্রী জানান, ডেঙ্গির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করবে পুরসভার পাঁচটি বরো অফিসের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি ও হাওড়া জেলা হাসপাতাল। সেখান থেকে ওই নমুনা পরীক্ষার জন্য যাবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে। সম্পূর্ণ নিখরচায় এই পরীক্ষা হবে। মন্ত্রী এ দিন ঘোষণা করেন, হাওড়া খোলা নর্দমায় ভর্তি। ৩০ কিলোমিটার নর্দমা ঢাকা দেওয়ার কাজ করবে কেএমডিএ।
পুরমন্ত্রী হাওড়া শহরে ২৭ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে বলে দাবি করলেও ডেপুটি মেয়র কাবেরী মৈত্রের দাবি, হাওড়া শহরে তিন জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। হাওড়ায় ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নেয়নি। কাবেরীদেবী জানান, পুরসভার ক্লিনিকে ৩৮ জনের রক্ত পরীক্ষা হয়েছিল। তিন জনের ‘ম্যাক অ্যালাইজা’ পজিটিভ বেরোয়। ডেঙ্গি পরীক্ষার কোনও সরকারি কিট না পাওয়ায় ওই পাঁচ জনের কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা আসার পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.