রোগী মৃত্যুর জেরে বা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে গোলমালের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। ছোট ঘটনাতেও চিকিৎসক বা নার্স নিগ্রহ অথবা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। সে কথা মাথায় রেখে সিসিটিভি (ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন) বসানো হল পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এর ফলে এক দিকে গোলমালে অভিযুক্তদের সহজে চিহ্নিত করা সহজ হবে, অন্য দিকে, অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তিতেও সাহায্য করবে এই প্রযুক্তি। শুক্রবার সদর হাসপাতালে এই ব্যবস্থা চালু করেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহ। হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে, জরুরি বিভাগে এবং প্রধান দুই প্রবেশপথে মোট ১৪টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। দিনে-রাতে হাসপাতালে যা যা ঘটবে, সবই এই ক্যামেরার মাধ্যমে কম্পিউটারে ধরা থাকবে। |
পর্দায় চোখ জেলাশাসকের। ছবি: সুজিত মাহাতো। |
জেলাশাসক বলেন, “হাসপাতালে বিভিন্ন ঘটনা ঘটে। অনেক সময় রোগীর সঙ্গে থাকা লোকজন ঝামেলা করেন। অনেক সময় চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতি বা গরহাজিরার অভিযোগ ওঠে। অথবা যাঁদের পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব, তাঁরাও পরিষেবা দেননি বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে ঠিক কী ঘটেছিল, তা অনেক সময়েই জানা যায় না। এ বার ক্যামেরায় সব কিছু ধরা পড়বে। এ রকম ঘটনা ঘটলে প্রকৃত ঘটনা জেনে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা যাবে এবং আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।” জেলাশাসক জানান, ক্যামেরায় ধরা পড়া ছবি থেকে দরকারে আদালতে প্রমাণও পেশ করা যাবে। পাশাপাশি পরিষেবার মান বাড়বে। সার্বিক ভাবে হাসপাতালের সুরক্ষার মান উন্নত হবে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন কুমার ঝরিয়াত বলেন, “এই ব্যবস্থার ফলে আমাদের পক্ষেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে নজর রাখার কাজ করতে সুবিধে হবে। গোটা বিষয়টিকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।” ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের পুরুলিয়া জেলা শাখার সহ-সম্পাদক অসীম সিংহের কথায়, “কিছু দিন আগে হাসপাতালে একটি মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে চিকিৎসক ও নার্স নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার পরে আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। এই ব্যবস্থা চিকিৎসক-নার্সদের নিরাপত্তায় সহায়ক হবে বলে মনে করছি।”
চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধেও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ ওঠা প্রসঙ্গে অসীমবাবু বলেন, “যাঁদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাঁদের আড়াল করব না।” এ দিন হাসপাতালে চিকিৎসার কাজে আসা বলরামপুরের বেড়সা গ্রামের বাসিন্দা বিপিন মুর্মু বলেন, “এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।” |