|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
পুর-উদ্যোগে প্রশ্ন |
মশার চাষ |
দেবাশিস দাস |
ডেঙ্গির প্রকোপ ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে শহরে। হাসপাতালগুলিতে বাড়ছে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা। অবস্থার সামাল দিতে তাই মশার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে পুরসভাগুলি। সচেতনতা ছড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচিও নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, এর মধ্যে ব্যতিক্রম শুধু রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা। ডেঙ্গির সংক্রমণে পিছিয়ে নেই ওই পুর-এলাকাও। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজপুর, সোনারপুর, গড়িয়া, বোড়াল, রানিয়া এবং সংলগ্ন এলাকাতেও সমান ভাবে ছড়াচ্ছে মশাবাহিত রোগ। অথচ, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না এই পুরসভা।
|
|
রাজপুর-সোনারপুর পুর-এলাকার পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে টলিনালা এবং আদিগঙ্গা। অধিকাংশ ওয়ার্ডের পাশেই রয়েছে খাল কিংবা বড় নর্দমা। সম্প্রতি কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে টলিনালা এবং আদিগঙ্গা সংস্কার করেছে রাজ্য সেচ দফতর। টলিনালার উপর দিয়েই গিয়েছে নিউ গড়িয়া পর্যন্ত সম্প্রসারিত মেট্রোর লাইন। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, টলিনালার জল পরিষ্কার করা হলেও তা এখন কার্যত বদ্ধ জলাশয় এবং মশার আঁতুড়। একই অভিযোগ আদিগঙ্গা এবং রানিয়া খাল নিয়েও। বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশার উপদ্রবের জন্য দিনে-রাতে সব সময়ে মশারি টাঙিয়ে রাখতে হয়।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুরসভার তরফ থেকে নিয়মিত মশা মারার তেল ছড়ানো হয় না। সচেতনতামূলক প্রচার কর্মসূচিও ধারাবাহিক ভাবে হয় না। পুরসভার প্রান্তিক ওয়ার্ডগুলিতেও নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার করা বা মশার তেল ছড়ানো হয় না বলে অভিযোগ। অথচ, এলাকার বেসরকারি নার্সিংহোমগুলির সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি সপ্তাহে অন্তত ছয় থেকে সাত জন মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য আসছেন।
|
|
স্থানীয় বাসিন্দা রতন নন্দীর কথায়: “মশা নিয়ন্ত্রণে পুরসভাকে সে রকম কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখিনি। বাজারে যে সব প্রতিরোধক পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোও কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। ফলে আমরা এখন এক অসহায় পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি।” বিরোধী দলের কাউন্সিলর সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা বর্ষা আসার আগেই মশা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতাম। আর এখন বর্ষা চলে আসার পরে মশাবাহিত রোগ নিয়ে হইচই হওয়ায় পুরসভা একটু নড়েচড়ে বসেছে। কাজেই কোনও লাভ হচ্ছে না।”
বাসিন্দাদের সমস্ত অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষ দেবনাথ। তাঁর কথায়: “কিছু লিফলেট বিলি করা হয়েছে। আরও করা হবে। বিভিন্ন জায়গায় মশা মারার তেল এবং ব্লিচিং ছড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পুর-বোর্ডের এক বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। |
|
পুরসভার স্বাস্থ্য ও জঞ্জাল বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ তৃণমূলের পল্লব দাস বলেন, “আমাদের পুরসভার আওতায় যে সমস্ত জল জমার জায়গা রয়েছে, সেখানে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু খালের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই।” উপ-পুরপ্রধান এবং সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম বলেন, “খালে মশার ওষুধ ছড়ানোর মতো ক্ষমতা আমাদের পুরসভার নেই। এই খালগুলো সেচ দফতরের আওতায় পড়ে। তাই ওই জায়গায় আমাদের কিছু করার অধিকারও নেই।” যদিও রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল বলেন, “দরকার পড়লে সেচ দফতর পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করে মশা মারতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|