ছুটির পালা শেষ। যে ছুটির শেষ পর্বটা যথেষ্টই ‘বিতর্কিত’। এ বার কিন্তু সত্যি সত্যিই ‘কাজে’ ফিরলেন রাজকুমার হ্যারি। তা-ও আবার সোজা আফগানিস্তানে। ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের এই তৃতীয় দাবিদার সেনা অফিসারও বটে। সেখানে অবশ্য তাঁর পরিচয় ‘ক্যাপ্টেন ওয়েলস’। আগামী চার মাস যাঁর ঠিকানা হবে আফগানিস্তানের হেলমন্দ প্রদেশে ব্যাস্টিয়ান ক্যাম্প। আজ সেখানে অ্যাপাচে হেলিকপ্টার বাহিনীর পাইলট হিসেবে যোগ দিলেন হ্যারি। |
২০০৮ সালেও আফগান যুদ্ধে পাঠানো হয়েছিল ক্যাপ্টেন ওয়েলসকে। কিন্তু তখন সংবাদমাধ্যম সেই ‘গোপন’ খবর ফাঁস করে দেয়। রাজকুমারের নিরাপত্তার কথা ভেবে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। তা হলে আবার সেই আফগানিস্তানেই কেন? ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, অ্যাপাচে বাহিনীর তেমন বিপদের সম্ভাবনা নেই। একটি সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, খোদ হ্যারিই নাকি আফগানিস্তানে যাওয়ার বায়না ধরেছিলেন। টানা ১৮ মাস মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অত্যাধুনিক অ্যাপাচে হেলিকপ্টার চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এপ্রিলেই জানিয়েছিলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে ‘কাজ’ করতে চান তিনি। কিন্তু এটাও আঁচ করেছিলেন, রাজকুমার বলে আফগানিস্তানের বিপদসঙ্কুল পরিবেশে তাঁকে পাঠানো না-ও হতে পারে। তখনই নাকি হ্যারি সাফ জানান, এমনিতে না হলে কারও পরিবর্ত হিসেবেও যেতে রাজি তিনি। কিন্তু কাজ শিখে বাড়ি বসে থাকবেন না।
বাকিংহাম প্রাসাদের বাসিন্দা আফগানিস্তানের সেনা শিবিরে থাকবেন জাহাজে মাল বহনকারী কন্টেনারের মধ্যে। নেহাত তিনি অ্যাপাচে বাহিনীর সদস্য তাই এই ব্যবস্থা। অন্যান্য বাহিনীর জন্য শুধুই তাঁবুর ব্যারাকের বন্দোবস্ত। শিবিরটিতে কিছু খেলাধুলোর ব্যবস্থা থাকলেও মদ্যপান নিষিদ্ধ। ভোর পাঁচটায় ঘুম ভাঙায় পাশের মসজিদের আজান। তার পর শুরু হয় রুটিনমাফিক কাজ। রাজকুমার হ্যারিও এই যাবতীয় রুটিন মেনে চলতে বাধ্য।
এর আগে যখন আফগানিস্তানে গিয়েছিলেন, তখন ‘ফরওয়ার্ড এয়ার কন্ট্রোলার’ পদে ছিলেন হ্যারি। মাঝপথেই ফিরে আসতে হওয়ায় কাজ বিশেষ করার সুযোগ পাননি। কিন্তু এ বার অ্যাপাচে পাইলট হিসেবে একেবারে সম্মুখ-সমরে নামতে তৈরি রাজকুমার। এই বাহিনীর কাজ মূলত শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক খুঁজে বার করে ধ্বংস করা। অ্যাপাচে হেলিকপ্টারের অস্ত্রসজ্জাও সে রকম। হেলিকপ্টারে লাগানো থাকে প্রচুর রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৩০ মিলিমিটারের একটি মেশিনগান। কিছু দিন আগে তালিবান দাবি করেছিল, একটি ব্রিটিশ অ্যাপাচে হেলিকপ্টার গুলি করে নামিয়েছে তারা। যদিও এর সত্যতা স্বীকার করেনি ব্রিটিশ সেনা। বরং তারা জানিয়েছিল, দু’টি ছোট দুর্ঘটনার মুখোমুখি হলেও তাদের ৬৭টি অ্যাপাচেই অক্ষত। |