দু’ছাত্রের মধ্যে গোলমালের জেরে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (ইউআইটি)। কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠান নিয়ে গণ্ডগোল হয়ে থাকলেও ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তেমন কোনও অভিযোগ পাননি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, শুক্রবার সকালে প্রথমে বচসা ও পরে মারপিট বাঁধে। পরে তা হস্টেলেও ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক জন ছাত্র আহত হন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হলেও মাথায় চোট লাগায় জনকে ভর্তি রাখা হয়েছে। উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “এই মারপিটের পিছনে কারা রয়েছে, তা জানতে আমরা একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করেছি। তাই ১৬ তারিখ পর্যন্ত হস্টেল ও কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের বলা হয়েছে দুপুর আড়াইটের মধ্যে হস্টেল খালি করে বাড়ি চলে যেতে। যাদের বাড়ি বেশ দূরে, তাদের অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করেছি।” ১৭ সেপ্টেম্বর কলেজ খোলার দিন পুলিশ মোতায়েন করার জন্যও তিনি পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেছেন। |
ইউআইটি-র ছাত্রছাত্রীরা জানান, কিছু বহিরাগত ছাত্র কয়েক দিন ধরে হস্টেলের আবাসিক ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করছিল। হস্টেলের ছাত্রেরা প্রতিবাদ করলে বৃহস্পতিবার রাতে তারা হস্টেলগুলিতে চড়াও হয়। তা থেকেই গোলমালের সূত্রপাত। এ দিন সকালে বহিরাগতেরা ফের হষ্টেলগুলির উপর চড়াও হলে মারপিট বেধে যায়। সত্যেন্দ্রনাথ হস্টেলের আবাসিক ছাত্র অনিমেষ জানার দাবি, “বার্ষিক অনুষ্ঠান নিয়ে তিন দিন আগে গোলমাল হয়েছিল। কিন্তু এ দিনের গোলমালের পিছনে ইভটিজিংও রয়েছে।” অপর আবাসিক ছাত্র অভীক প্রধানের দাবি, “ইভটিজিংয়ের ঘটনা না ঘটলে অনুষ্ঠান নিয়ে ঝামেলা আমাদের মধ্যেই মিটে যেত।”
উপাচার্য অবশ্য জানান, ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তিনি পাননি। তিনি বলেন, “আমি অন্তত ২০জন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। শিক্ষকদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। কেউ কিন্তু আমাকে ওই প্রসঙ্গে কিছু জানানি। তবে বর্ধমান থানার আইসি আমাকে বলেছেন, গত কাল একটি গোলমালের ঘটনা ঘটে। সেটা পুলিশ থামিয়েছিল। আমি এই বিষয়ে খোঁজ নেব।” এ দিন মারপিটের পরেই তিনি হস্টেলে যান। তাঁর বক্তব্য, “আমি দীর্ঘক্ষণ ওখানে ছিলাম। ছাত্রছাত্রীরা আমায় অনেক তথ্য দিয়েছেন। সেগুলি আমরা খতিয়ে দেখছি।” পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “ছাত্রেরা আমার কাছেও এসেছিলেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। তবে কেউ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেননি।” |