ঘটনার কিনারা হয়নি, থানা ঘেরাও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
ঘটনার পাঁচ দিন পরেও দুবরাজপুরে ব্যবসায়ী খুনের কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। দ্বিতীয়ত--তদন্ত চলাকালীন বদলি করে দেওয়া হয়েছে দুবরাজপুর থানার ওসি তথা ওই ঘটনার তদন্তকারী অফিসার সৌম দত্তকে। প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে ঘণ্টা দু’য়েক থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন দুবরাজপুরের কয়েকশ মানুষ।
ঘটনার জেরে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ হয়ে থাকল দুবরাজপুর থানার পাশ দিয়ে যাওয়া রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। দুর্ভোগ পোহালেন দু’দিকে আটকে পড়া যাত্রী ও সাধারণ মানুষ। শেষ পর্যন্ত ডিএসপি (সদর) পার্থ ঘোষ বিক্ষোভকারীদের সামনে আশ্বাস দেন ব্যবসায়ী খুনের ঘটনার অবশ্যই কিনারা হবে এবং অপরাধীরা ধরা পড়বে। তারপরেই অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের হুঁশিয়ারি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ঘটনার কিনারা না হলে বা প্রকৃত অপরাধীরা ধরা না পড়লে ফের প্রতিবাদের রাস্তায় হাঁটবেন তাঁরা।
গত বৃহস্পতিবার ভোরে ট্রেন ধরতে যাওয়ার পথে দুবরাজপুর ব্লক অফিসের কাছাকাছি দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন দুবরাজপুরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা হার্ডওয়্যারের ব্যবসায়ী মৃণালকান্তি ওঝা ওরফে রামু। দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে জখম হন ওই ব্যবসায়ীর ভাইও। তিনি এখনও চিকিৎসাধীন। |
এ দিন বিক্ষোভে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ থেকে সাধারণ মানুষ সকালেই সামিল হয়েছিলেন। তাঁদের ক্ষোভ, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে দুবরাজপুরে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এবং খুনের মতো একটার পর একটা আপরাধমূলক ঘটনা ঘটছে অথচ অধিকাংশ ঘটনারই কোনও কিনারা হয়নি। ধরা পড়েনি প্রকৃত অপরাধীরা। ফলে একদিকে যেমন অপরাধীদের অপরাধ করার প্রবণতায় ছেদ পড়েনি তেমনি রীতিমত আতঙ্কে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।
এদিনের বিক্ষোভে সামিল দুবরাজপুরের পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে বলেন, “আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব অপরাধীদের ধরুক পুলিশ। দুবরাজপুর পুর-শহর ও সংলগ্ল গ্রামাঞ্চল এলাকাগুলিতে আপরাধ মূলক কাজকর্ম কমাতে পুলিশ টহল খুব প্রয়োজনীয়। বিশেষত রাতে।” তাঁর দাবি, “দুবরাজপুর থানা এলাকা অনুপাতে পুলিশকর্মীর সংখ্যা অনেক কম হওয়ায় পুলিশি টহলের কাজটা ঠিক মতো হয় না। এ ব্যপারে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।” প্রসঙ্গত, চুরি-ছিনতাই আটকাতে রাতে দুবরাজপুর থেকে হেতমপুর যাওয়ার রাস্তায় ও হেতমপুর গ্রামে পুলিশ টহল দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ওই এলাকারার বাসিন্দারাও। দুবরাজপুর ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি সত্যপ্রকাশ তিওয়ারি বলেন, “এলাকার ব্যবসায়ীরা সোম, মঙ্গল এবং বৃহস্পতিবার ভোর ৪-৬টার মধ্যে ট্রেন বা বাস ধরে কলকাতায় যান। ওই সময় পুলিশের নজরজারি থাকলে এমন ঘটনা ঘটত না। আগেও কলকাতা যাওয়ার ট্টেন ধরতে যাওয়ার পথে দুষ্কৃতীদের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। তখন সাময়িক ভাবে পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হলেও তা বেশি দিন চলেনি।” পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে তদন্ত চলাকালীন কেন এক অফিসারকে বদলি করে দেওয়া হল? সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, সাতটি থানার ওসি বদল হয়েছে। তার মধ্যে দুবরাজপুর থানাও রয়েছে। |