পঞ্চায়েতের কাছে এলাকা উন্নয়নের কাজের হিসেব জানতে চেয়েছিলেন এক যুবক। তথ্য জানার অধিকার আইনে তিনি আবেদন করার পরেও তাঁকে সঠিক তথ্য না দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে পঞ্চায়েতের জন তথ্য আধিকারিকে ‘শো-কজ’ করলেন বিডিও। হুড়া ব্লকের লধুড়কা পঞ্চায়েতের ঘটনা।
লধুড়কা গ্রামের যুবক কার্তিক মুখোপাধ্যায় ১৬ মার্চ ওই পঞ্চায়েতের জন তথ্য আধিকারিকের কাছে তথ্য জানার অধিকার আইনে ২০১০-১১ আর্থিক বর্ষে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে, হরিয়ালি, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ ও ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে কত অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল তা জানতে চেয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “আমার দাবি মতো তথ্য না দিয়ে আয়-ব্যয়ের হিসেব সংক্রান্ত কিছু তথ্য দেওয়া হয়। ওই তথ্য দিয়ে প্রকল্পে কোনও দুর্নীতি হয়েছে কি না তা জানার উপায় নেই। আমি কয়েকটি কাজের মাষ্টাররোল, দোকান থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনার রশিদ ইত্যাদি চেয়েছিলাম। তা দেওয়া হয়নি।” তিনি জানান, ফের তিনি ১১ জুলাই পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে ওই সমস্ত বিষয়গুলি জানতে চেয়ে আবেদন করেন। ২০০৮-২০১২ সালের মার্চ পযর্ন্ত নলকূপের যন্ত্রাংশ কেনার রশিদ ও অন্যান্য হিসেব এবং গ্রাম সংসদের বৈঠকের প্রতিলিপি, পঞ্চায়েতের পাশবইয়ের প্রতিলিপি ইত্যাদি চেয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, এক মাসের মধ্যে পঞ্চায়েতের কাছ থেকে ওই তথ্য না পেয়ে এ বার আমি ২৩ আগস্ট জেলাশাসকের কাছে পুরো বিষয়টি জানিয়ে অভিযোগ করি। প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার জন্য তাঁর কাছে অনুরোধ জানাই।”
পঞ্চায়েত সূত্রে জানানো হয়েছে, ২৪ অগস্ট পঞ্চায়েত অফিসে চুরির ঘটনা ঘটে। পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের মালতি মাহাতো বলেন, “পঞ্চায়েত ভবনের পিছনের দিকে নলকূপের কিছু জিনিসপত্র রাখা ছিল। দুষ্কৃতীরা জেট পাম্প, পাইপ ও অন্যান্য জিনিসপত্র চুরি করে।” কার্তিকবাবুর প্রশ্ন, জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জনানোর পরের দিনই পঞ্চায়েত অফিস চত্বরে চুরির ঘটনা সন্দেহজনক। পঞ্চায়েত অফিসের উল্টোদিকেই পুলিশের একটি ক্যাম্প রয়েছে। তারপরেও সেখানে চুরি হল কী করে?
পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে জন তথ্য আধিকারিকে পাওয়া যায়নি। প্রধান জানান, অসুস্থতার জন্য তিনি ছুটিতে রয়েছেন। অভিযোগ সম্পর্কে তাঁর দাবি, “প্রথম আবেদনের ভিত্তিতে তাঁকে তথ্য দেওয়া হয়েছি। দ্বিতীয়বার আবেদনে তিনি যে সমস্ত তথ্য চেয়েছেন, তা গুছিয়ে উঠতে সময় লাগছে।” জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক স্বরূপকুমার মালিক বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। তবে কেউ বিধি মোতাবেক আবেদন করলে তাঁকে উন্নয়ন সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া পঞ্চায়েতের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।”
হুড়ার বিডিও বিশ্বনাথ রক্ষিত বলেন, “আমি এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিধি মোতাবেক তথ্য জানতে চাওয়ার পরেও কেন আবেদনকারীকে তথ্য দেওয়া হয়নি, তা জানতে চেয়ে ওই পঞ্চায়েতের জন তথ্য আধিকারিককে ‘শো-কজ’ করা হয়েছে। |