মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ
অশোকনগরে ছাত্রীর হাত-পা বাঁধা দেহ উদ্ধার
পাড়াগত কোনও বিবাদ, নাকি কানের সোনার দুলের জন্য অশোকনগরের ছানারহাট গ্রামের বাসিন্দা আজমিরা খাতুনকে খুন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তার উপরে শারীরিক অত্যাচার করা হয়েছে কি না সে বিষয়টিও। আজমিরার পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি গ্রামের এক মহিলা, যিনি তন্ত্র সাধনা করেন আজমিরার মা মমতাজ বিবিকে বলেন, ‘একটি কন্যাসন্তান হত্যা করলে তাঁর একটি পুত্র সন্তান হবে’। এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “খুনের তদন্তে সমস্ত কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই অপরাধীদের গ্রেফতার করে হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আজমিরা ছানারহাট অবৈতনিক প্রাথনিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। তারা চার ভাইবোন। বাবা খেত মজুরের কাজ করেন। বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ আজমিরা বাড়ির কাছেই গৃহশিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিনের কাছে পড়তে গিয়েছিল। তার পর আর বাড়ি ফেরেনি। সাবিনা বলেন, “পড়া শেষ হয়ে গেলে পাঁচটার সময় ছুটি দিয়ে দিই। অন্য কয়েকজনের সঙ্গে ও বাড়ি চলে যায়। পরে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ওর মা এসে আমাকে বলেন যে ও বাড়ি ফেরেনি।”
আজমিরার সঙ্গে যারা বাড়ি ফিরেছিল তাদের মধ্যে সালেমা খাতুন, ফারুখ মণ্ডলেরা পুলিশকে জানিয়েছে, ওই দিন তারা গৃহশিক্ষিকার কাছে পড়ে একসঙ্গেই বাড়ি ফিরছিল। পথে বাঁশতলার কাছে এসে তারা নিজেদের বাড়ির দিকে চলে যায়। আজমিরাও তার বাড়ির দিকে চলে যায়।
এই পুকুরের ধার থেকেই উদ্ধার হয় আজমিরা মৃতদেহ।
এদিকে আজমিরা বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেম বাড়ির লোকজন। আজমিরার কাকা হবিবুর রহমান বলেন, “পুকুরে পড়ে যেতে পারে ভেবে প্রথমে আমরা বাড়ির কাছে শানতলা পুকুরে খুঁজি। কিন্তু কিছু না পেয়ে কিছু দূরে আর একটা পুকুরে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। কিন্তু সেখানেও কিছু পাওয়া যায়নি। এর পরে বাড়ি দিকে ফেরার সময় দেখি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আজমিরার দেহ শানতলা পুকুর ঘাটে জলের ধারে পড়ে রয়েছে। পরনে প্যান্ট ছিল না। সম্ভবত আমরা যখন অন্য পুকুরে খঁজতে গিয়েছিলাম তখনই কেউ তাকে ফেলে দিয়ে যায়।” খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে এলাকরই কয়েকজনকে সন্দেহ করে তাঁদের নাম পুলিশকে জানিয়েছেন আজমিরার পরিবার। এ দিকে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ ওই পুকুরে ধারেই ফের আজমিরার প্যান্ট ও জুতো পড়ে থাকতে দেখা যায়। কী ভাবে সেগুলি সেখানে এল তা খতিয়ে কেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। হবিবুর আরও জানান, আজমিার কানে সোনার দুল ছিল। যার দাম প্রায় কয়েক হাজার টাকা। ওই দুলের জন্যও তাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে পুলিশের অনুমান।
শোকার্ত মা মমতাজ বিবি।
আজমিরার পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, সম্প্রতি গ্রামের এক মহিলা, যিনি তন্ত্র সাধনা করেন আজমিরার মা মমতাজ বিবিকে বলেছিলেন, ‘একটি কন্যাসন্তান হত্যা করলে তাঁর একটি পুত্র সন্তান হবে’। এই খুনের পিছনে সেই কুসংস্কার কাজ করছে কি না তাও তদন্ত করছে পুলিশ। এ দিকে বুধবার রাতে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বিধায়ক ধীমান রায় বলেন, “যে কারণেই ওই ছাত্রীকে খুন করা হোক না কেন, পুলিশকে দ্রুত অপরাধীদের ধরতে বলা হয়েছে।”

ছবি: শান্তনু হালদার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.