পছন্দের পিচ চেয়ে পাননি, বোর্ডকে একহাত ধোনির
সিরিজ জয়ের শেষ ‘ল্যাপ’ এখনও বাকি। ভেত্তোরির ‘ভূত’ তাড়িয়ে কিউয়িদের দফারফা শেষ পর্যন্ত হবে কি না, তা-ও জানা নেই। উল্টে আচমকা নতুন এক প্রতিপক্ষের আবির্ভাব ঘটে গেল ধোনির সংসারে।
কে সে? অবশ্যই নিউজিল্যান্ড নয়। হেঁয়ালি ছেড়ে সোজাসুজি বললে, ভারত অধিনায়কের কড়া প্রতিদ্বন্দ্বী এই মুহূর্তে ভারতীয় বোর্ড স্বয়ং!
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মনে হচ্ছে, দেশের মাঠে টিম যে রকম পিচ বারবার চেয়ে আসছে, তা মোটেই পাচ্ছে না। মানে, চেয়েচিন্তেও ঘূর্ণি উইকেটের কোনও ব্যবস্থা নেই। বরং তাঁর স্পিনারদেরই কাঠখড় পুড়িয়ে উইকেট তুলতে হচ্ছে। এবং চলতি সিরিজেও নাকি একই গল্প। কী হায়দরাবাদ, কী বেঙ্গালুরু!
প্রতিপক্ষের পাল্টা উত্তর? তা-ও আছে। বোর্ডের পিচ কমিটির চেয়ারম্যান বেঙ্কটসুন্দরম পুরো ঘটনা চুপচাপ শুনে আনন্দবাজারকে বলে রাখলেন, “একটা ভাল টেস্ট উইকেট বলতে কী বোঝায়? না, যেখানে ব্যাটসম্যান এবং বোলার, দু’জনের জন্যই কিছু থাকবে। যাক গে, ধোনি কী বলেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এখনই কিছু বলতে চাই না। টেস্টটা শুরু হতে দিন।”
সকাল থেকে বারবার পিচের কাছে ঘুরঘুর করছিলেন ভারত অধিনায়ক। কেন, তা প্রথমে বোঝা যায়নি। পিচে সামান্য যা সবুজ আভা ছিল, বেলা গড়াতেই তাতে ফ্যাকাশে রং। কিন্তু তাতেও ধোনির গনগনে মেজাজ ঢাকা পড়ল কোথায়? সাংবাদিক সম্মেলনে কেউ একজন ধোনিকে জিজ্ঞেস করলেন, স্পিনের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের দুর্দশা দেখে চিন্নাস্বামীতে তিন স্পিনারের কথা ভাবছেন কি না? উত্তরে ধোনির পাল্টা ব্যঙ্গ ভেসে এল, “পিচটা দেখেছেন আপনি? এখানে কে তিন স্পিনার খেলাবে?” এবং মিনিট তিনেকের মধ্যে আসল বিস্ফোরণ: “দেখুন, সোজাসুজি বলি। দেশের মাঠে আমরা ঘূর্ণি উইকেট চাই। কিন্তু এই দু’টো পিচকে (হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরু) দেখে মোটেই টার্নিং ট্র্যাক বলে মনে হচ্ছে না। যা অনুরোধ পাঠানোর, আমরা পাঠিয়েছি। দেখা যাক, এ বার কী দেওয়া হয় আমাদের।”
মানে? উপ্পলে তো ম্যাচ চার দিনে শেষ হয়েছে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন একাই বারোটা উইকেট নিয়েছেন। ওটা ঘূর্ণি উইকেট ছিল না?
ক্যাপ্টেন কুলের চোখমুখ মুহূর্তে কঠিন। মাথা নেড়ে এ বার উত্তর, “না, হায়দরাবাদের উইকেটকে আমার মোটেই টার্নার মনে হয়নি। বরং ওখানে আমার স্পিনারদের অনেক খাটাখাটনি করে উইকেট তুলতে হয়েছে। আমি মনে করি, উপমহাদেশের উইকেটে স্পিনটাই থাকা উচিত। বলতে চাইছি, উইকেট থেকে যদি আরও স্পিন আর বাউন্স পাওয়া যায়, তা হলে ভাল হয়। আমরা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড নিয়ে কথা বলি। বিশ্বের সমস্ত দেশই তাদের ঘরোয়া বৈশিষ্ট্য মেনে চলে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা সেটা এখনও পাইনি!”
পিচ নিয়েই দু’চার কথা! বেঙ্গালুরুর নেটে সচিন-ধোনি। ছবি: এএফপি
ভারত অধিনায়কের মুখে এমন মন্তব্য শোনার পর রীতিমতো হতচকিত হয়ে পড়ে বেঙ্গালুরুর সাংবাদিককুল। কেএসসিএ কর্তারাও শুনে থতমত খেয়ে যান। কেউ ভাবতেও পারেননি যে, পিচ-বিতর্কে এ ভাবে জমে যাবে আপাত-নিস্তরঙ্গ শেষ টেস্ট। ভাবা সম্ভবও ছিল না। ‘গালিভার’ বনাম ‘লিলিপুট’ যুদ্ধেও যতটুকু যা উত্তেজনা থাকে, বেঙ্গালুরু টেস্টকে ঘিরে ততটুকুও নেই। সবই তো দুপুর পর্যন্ত এগোচ্ছিল গতে বাঁধা স্ক্রিপ্ট মেনে।
পুরোদস্তুর নামগোত্রহীন একটা টিম। বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে, এই জার্সিতেই এক সময় বিশ্ব কাঁপিয়েছেন রিচার্ড হ্যাডলি, মার্টিন ক্রো-র মতো ক্রিকেটাররা। তাদেরই কি না আজ অশ্বিনের স্পিনের বিষদাঁত ভাঙতে ‘ওঝা’ হিসেবে ভেত্তোরিকে ডাকতে হচ্ছে। রস টেলর কোনও মতে বলছেন, “স্পিনের বিরুদ্ধে আমরা সাহসী ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করছি।” বলছেন বটে, কিন্তু শুনছে কে? উল্টে তাঁর নিজের ফর্ম নিয়েই কিউয়ি ক্যাপ্টেনকে দেদার কথা শুনতে হচ্ছে। ভারতীয়দেরও বিশেষ হেলদোল নেই। বুধবার সন্ধের অনুষ্ঠান শেষ করে টিমের কেউ কেউ হোটেলে ফিরেছেন রাত দেড়টায়। টিম ইন্ডিয়ার প্র্যাক্টিসেও কেমন যেন ‘গয়ংগচ্ছ’ ভাব। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে দিল্লির বন্ধু শিখর ধওয়ানকে খুঁজে পেয়ে আড্ডায় বসে গেলেন বিরাট-গম্ভীররা। টিমের খবরাখবরও সামান্যই। হায়দরাবাদের টিমই মোটামুটি থাকছে। ওপেনিংয়ে সহবাগ-গম্ভীর। তিন থেকে সাতপূজারা, সচিন, কোহলি, রায়না, ধোনি। বোলিং কম্বিনেশনেও কোনও বদল নেই। বাড়তি প্রতিজ্ঞার ছাপ শুধু একজনেরই শরীরী ভাষায়। তিনিসচিন তেন্ডুলকর। হায়দরাবাদে ভিতরে ঢুকে আসা বলে বোল্ড হওয়াতে যে তিতিবিরক্ত, সেটা বোঝা গেল যখন নেটে উমেশ যাদবদের নির্দেশ দিলেন তাঁকে স্রেফ মিডল স্টাম্প বরাবর ইনসুইং ডেলিভারি দিয়ে যেতে।
এই অবস্থায় নতুন যুদ্ধের দামামা বাজবে, কে জানত। আরও আশ্চর্যের হচ্ছে, বেঙ্গালুরুর মেঘলা আবহাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে কিউয়ি পেসারদের বাড়তি গুরুত্বও দিয়ে রাখলেন ধোনি। কেন এ সব? একটা যুক্তি হতে পারে যে, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে বোর্ড-কর্তাদের জন্য আগাম ‘এসওএস’ ছেড়ে রাখা। যাতে ক্রিকেটবিশ্বের ‘হেভিওয়েট’-দের মারণযজ্ঞে কোথাও কোনও খুঁত না থাকে। কে না জানে, নিউজিল্যান্ড সিরিজ খুব বেশি হলে ক্লাস সেভেনের অ্যালজেব্রা। দাঁতভাঙা ক্যালকুলাসগুলো তো নভেম্বর থেকে একে একে আসছে!

যুবরাজ মাঠের বাইরেও চ্যাম্পিয়ন, বললেন সচিন
এক অসাধারণ অনুপ্রেরণার নাম যুবরাজ সিংহ। শুধু ক্রিকেটের গণ্ডির মধ্যেই নয়, জীবনের বৃহত্তর ক্ষেত্রেও। আর এই কথা বলছেন যিনি, তাঁর নাম সচিন তেন্ডুলকর। যুবরাজকে যিনি ক্রিকেটে তো বটেই, ক্রিকেট মাঠের বাইরের জীবনেও ‘চ্যাম্পিয়ন’ বলেছেন এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে। সচিনের কথায়, “যুবি ক্যানসারের কঠিন চিকিৎসার মোকাবিলা করে আবার ফিরে এসেছে ভারতীয় দলে। এটাই বলে দেয় ও কত বড় চ্যাম্পিয়ন। শুধু খেলোয়াড়দের জন্যই নয়, ক্যানসার আক্রান্তদের জন্যও যুবি এক মহান উদাহরণ।” এর পরে যোগ করেছেন, “আমার কাছে যুবি চিরকাল চ্যাম্পিয়নই থাকবে। বিশ্বকাপে ও ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়। মনে রাখতে হবে তখন কিন্তু ও যথেষ্ট অসুস্থ ছিল। আর তার পরে ক্যানসারের মতো কঠিন রোগের বিরুদ্ধে লড়াইটাও চিকিৎসকদের সাহায্য নিয়ে জিতল প্রকৃত চ্যাম্পিয়নের মতোই।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.