বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ বুধবারই শুরু করেছিল আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)। কিন্তু সে দিন হাডকো এলাকায় বাকি নির্মাণগুলি ভাঙা হলেও রেহাই পেয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের পাকা দলীয় কার্যালয়। বৃহস্পতিবার অবশ্য এলাকার দু’টি তৃণমূল কার্যালয় এবং একটি ডিওয়াইএফ কার্যালয় ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল এডিডিএ।
|
হাডকো মোড়ে ডিওয়াইএফের অফিস। |
এ দিন সকালে হাডকো মোড়ে প্রথমে তৃণমূলের পাকা কার্যালয় ভেঙে দেওয়া হয়। পরে দরমার বেড়া দিয়ে ঘেরা অপর একটি কার্যালয়ও ভাঙা হয়। পাশেই ছিল ডিওয়াইএফের কার্যালয়। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়। এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তথা আসানসোলের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সমস্ত বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” এডিডিএ-র এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, যত্রতত্র সরকারি জমি দখল করে বেআইনি নির্মাণের পরে তা বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঠকছেন নিরীহ সাধারণ মানুষ। এই প্রবণতা রোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ই হোক বা অন্য কোনও নির্মাণ, বেআইনি হলে সব ভেঙে ফেলা উচিত।” সিপিএমের জেমুয়া-বিধাননগর লোকাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “ডিওয়াইএফের ওই অফিসটি প্রায় ১৫ বছর ধরে ছিল। এডিডিএ বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কথা ঘোষণা করতেই সেখান থেকে সব কাগজপত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।” |
বিধাননগরে হাডকো মোড় সংলগ্ন এলাকায় ভাঙা হল তৃণমূলের দলীয় অফিস। |
তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, যেখানে সেখানে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় গড়ে ওঠায় নীচু তলার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমসিম খাচ্ছেন নেতৃত্ব। ফলে দলীয় শৃঙ্খলা প্রশ্নের মুখে পড়ছে বারবার। নেতৃত্বের তরফে এ ভাবে দলীয় কার্যালয় গড়ার ব্যাপারে বারণ করা হয়েছে। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না। নেতৃত্ব চাইছেন, ওয়ার্ড বা অন্তত বুথভিত্তিক দলীয় কার্যালয় থাকুক। কিন্তু একই পাড়ায় একাধিক দলীয় কার্যালয় আখেরে দলের ভাবমূর্তিই নষ্ট করছে বলে অভিমত নেতৃত্বের। এডিডিএ-র এমন সিদ্ধান্তে তাই স্বস্তির পেয়েছে দলীয় নেতৃত্বের অনেকেই।
অপূর্ববাবু অবশ্য বিষয়টি স্বীকার করতে চাননি। তিনি বলেন, “সবাই সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে দলীয় অনুশাসন মেনে চলবেন, সেটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু অন্য দল থেকে আসা অনেকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছেন দলকে। তা রোধ করতে হবে।”
|