যুক্তরাষ্ট্র ওপেন দেল পোত্রোর দিকে
নজর রাখুন

গোটা জুলাই মাসটা ধরে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টেনিস হল। প্রথমে উইম্বলডন। তার গায়েগায়েই অল ইংল্যান্ড ক্লাবের ঘাসের কোর্টেই অলিম্পিক। আর অলিম্পিক শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হার্ডকোর্ট মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে এ বারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেন পুরুষ এবং মেয়ে দু’বিভাগেই শীর্ষস্থানীয় তারকাদের শারীরিক সক্ষমতার চূড়ান্ত পরীক্ষা নেবে বলেই মনে হচ্ছে।
ফিটনেসের কথায় প্রথমেই এসে পড়ছে রাফায়েল নাদাল প্রসঙ্গ। ওর দুর্ভাগ্যজনক অনুপস্থিতি পুরুষ সিঙ্গলসে লড়াইটা আরও জমাট করে তুলবে। চ্যাম্পিয়নশিপের প্রশ্নে অনেক বেশি বিকল্পের সন্ধান দিচ্ছে। দেল পোত্রো অবধি ট্রফির দাবিদার। তবে নাদালের দু’মাসের বেশি কোর্টের বাইরে থাকাটা টেনিসের পক্ষে ভাল নয়। কিন্তু ওর খেলার ধরনটাই এমন যে, ঘনঘন চোট পাওয়ার আশঙ্কা থাকবেই। তিরিশের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় ওর এখন ফিট হতেও আগের চেয়ে বেশি সময় লাগবে।
নাদালের অনুপস্থিতিতে রজার ফেডেরার সম্পূর্ণ যোগ্য শীর্ষ বাছাই। উইম্বলডনে ও অসাধারণ ছিল। শুধু ফাইনাল ম্যাচটা বাদে অলিম্পিকেও ওকে যথেষ্ট ভাল দেখিয়েছে। তবে গত সপ্তাহেই সিনসিনাটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফেডেরার আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যার মানে বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্লামেও সেরা দৌড় দিতে তৈরি। কোর্টে খুব ভাল নড়াচড়া করতে দেখা যাচ্ছে ওকে। হার্ডকোর্টটা উপভোগ করবে। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে অনেক দূর যাবে ফেডেরার।
দুই ফেভারিট ফেডেরার ও সেরেনা।
আমার দ্বিতীয় ফেভারিট গত বারের চ্যাম্পিয়ন জকোভিচ। এটা সত্যি যে, গত বারের সেই দুর্ধর্ষ ফর্মে ও এখন নেই। তবে টেনিসের সর্বোচ্চ স্তরে এই খেলার সেরাদের পক্ষেও একটানা অনেক দিন শীর্ষ ফর্ম ধরে রাখা কঠিন। তা ছাড়া নাদালের মতোই জকোভিচের খেলার স্টাইলটাও ভীষণ শরীরী। সে জন্য এক-এক সময় ভয় হয়, বেসলাইন থেকে প্রচণ্ড পাওয়ারফুল টেনিস খেলতে খেলতে জকোভিচও না অচিরেই হাঁটুর সমস্যায় পড়ে।
এ বার আসা যাক অ্যান্ডি মারের কথায়। অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হয়ে এই স্কট ওর কাঁধের ওপর থেকে বিশাল একটা পাথর সরিয়ে ফেলেছে। যদিও উইম্বলডন জেতেনি, কিন্তু উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ওর প্রতিদ্বন্দ্বীরা এখন ওকে সমীহ করবে। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ঠিক আগে সিনসিনাটি ওপেনের গোড়াতেই মারের হেরে যাওয়া আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। এখনও আমি বলব, হার্ডকোর্ট মারের প্রিয় সারফেস আর ওর গ্র্যান্ড স্লাম খাতা খোলার সেরা সুযোগ ফ্লাশিং মেডোয় অথবা মেলবোর্নে।
বাকি ড্র-টা আমার মতে নাদালের অনুপস্থিতিতে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াই। তার মধ্যেই অবশ্য দেল পোত্রোর দিকে আমি নজর রাখব। ওর এখানে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। দেল পোত্রোর বাঁ-হাতে একটা চোট আছে। সেটা সামলাতে পারলে ফ্লাশিং মেডোয় এ বার ও খুব ভাল করতে পারে। নিজের সেরা টেনিসটা দেল পোত্রো আবার খেলতে শুরু করেছে। যে কোনও প্লেয়ারকে সমস্যায় ফেলে দিতে পারে। গত মাসে উইম্বলডনে সেটার প্রমাণও দিয়েছে। তবে সেই এক কথা— ওরও ভীষণ শরীর নির্ভর টেনিস খেলার প্রবণতা যখন-তখন চোট ডেকে আনতে পারে।
মেয়েদের ড্র-এর দিকে তাকালে আমার লিখতে খুব কষ্ট হচ্ছে যে, এখানে সেরেনা উইলিয়ামস শীর্ষ বাছাই নয়। বিশেষ করে পরপর উইম্বলডন আর অলিম্পিকে ওর প্রশ্নাতীত দাপটের পরে। তার ওপর নিউইয়র্কে সেরেনা যেমন খেলতে দারুণ পছন্দ করে, তেমনই এখানকার দর্শকেরাও ওকে ভীষণ ভালবাসে। আমার একটাই ভয়, গতবার ফাইনালে সামান্থা স্তোসুরের দাঁত চেপে পড়ে থাকার স্ট্র্যাটেজি সেরেনা যেমন টপকাতে পারেনি, সে রকম চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির সামনে পড়লে না আবার খারাপ কিছু ঘটে। কারণ তখন দর্শক-সমর্থনটাও ফেভারিটের ওপর বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়ায়।
শারাপোভা নিউইয়র্ক-জনতার আর এক প্রিয় তারকা। আর আমার দ্বিতীয় ফেভারিট। এখানে আগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। শহর আর কোর্টের সারফেসটা দুটোই উপভোগ করে। গত পাঁচ মাস ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছে শারাপোভা। আজারেঙ্কা-কে আর এক জন ফেভারিট বলা যায়। খেলায় দারুণ তীক্ষ্মতা। শুধু আশা করব, প্রতিটা শট নেওয়ার সময় কোর্টে একটু কম আওয়াজ করবে মুখে!

স্তোসুরের যাত্রা শুরু
দুর্দান্ত ভাবে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন শুরু করলেন গত বারের মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন সামান্থা স্তোসুর। সপ্তম বাছাই অস্ট্রেলীয় এ দিন আর্থার অ্যাশ সেন্টার কোর্টে উদ্বোধনী ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার পেত্রা মার্টিচকে উড়িয়ে দিলেন ৬-১, ৬-১। সকাল এগারোটায় ফ্লাশিং মেডোর সব কোর্টে একসঙ্গে প্রথম রাউন্ড শুরু হওয়ার পর দ্রুততম শেষ হয় স্তোসুরের ম্যাচই। প্রথম দিনই মহাতারকাদের অনেকে বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্লামে নামছেন। রাতের সেশনে নৈশালোকে খেলা আছে পুরুষদের শীর্ষ বাছাই রজার ফেডেরার, জীবনের শেষ গ্র্যান্ড স্লামে নামা মেয়েদের প্রাক্তন এক নম্বর কিম ক্লিস্টার্সের।
টুর্নামেন্টের প্রথম দিন সামান্থা স্তোসুর। ছবি: রয়টার্স
এ ছাড়া অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন অ্যান্ডি মারে, টেনিস-গ্রহের গ্ল্যামার গার্ল মারিয়া শারাপোভাও প্রথম রাউন্ডে নামছেন প্রথম দিনই। এ দিকে, পুরুষ ডাবলসে লিয়েন্ডার-স্টেপানেক জুড়ি পঞ্চম বাছাই এবং ভূপতি-বোপান্না জুটি অষ্টম বাছাই হয়েছেন। দুই অর্ধে দুই টিম থাকায় ফাইনালের আগে লি-হেশ মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মেয়েদের ডাবলসে সানিয়া-মাটেকের ইন্দো-মার্কিন জুড়ি ১৩ নম্বর বাছাই।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.