নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দ্রকোনা |
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ‘বিচারে’ বসে মারধর করা হল প্রণয়ী যুবকটিকে। তারপর ওই যুবক ও তরুণীকে জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরানো হল গোটা গ্রাম। অভিযোগ, ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা উত্তম মণ্ডল। ওই যুবকের বাবা ছিলেন সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য। বছর আড়াই আগে তিনি মারা গিয়েছেন।
সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের মৌলায় এই ঘটনার কথা শুনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বক্তব্য, “অভিযোগ সত্যি হলে ঘটনায় জড়িত দলের প্রত্যেক সদস্যকে বহিষ্কার করা হবে।” পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “বিডিওকে এলাকায় পাঠিয়েছিলাম। ঘটনার তদন্ত করে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” সোমবার রাত পর্যন্ত অবশ্য কেউ গ্রেফতার হয়নি। চন্দ্রকোনা থানার ওসি শীর্ষেন্দু দাস বলেন, “যুবকের দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা শুরু করা হয়েছে।” উত্তমবাবু তৃণমূলের স্থানীয় লক্ষ্মীপুর অঞ্চল সভাপতি। তাঁকে কিন্তু বারবার ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
মৌলা গ্রামে স্বামী আর ১০ বছরের ছেলের সঙ্গে থাকতেন বছর আঠাশের ওই তরুণী। স্বামী বিমাকর্মী। যে যুবকটির সঙ্গে ওই তরুণীর ঘনিষ্ঠতা, তিনিও বিমাকর্মী। মৌলা গ্রামেই বাড়ি। কাজের সূত্রে ওই তরুণীর স্বামীর কাছে আসতেন ওই যুবক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে ওই মহিলা স্বামী-সন্তান ছেড়ে ওই যুবকের সঙ্গে গ্রাম ছেড়ে চলে যান। হুগলির আরামবাগে বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন তাঁরা। তরুণীর বাপের বাড়ি হুগলির গোঘাটে। রবিবার মেয়েটির বাপের বাড়ির লোকজন আরামবাগ থেকে ওই দু’জনকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে মৌলায়। পারিবারিক আলোচনায় স্থির হয়, ওই তরুণী তাঁর স্বামীর কাছে ফিরে যাবেন। যুবকটিও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন না। ওই যুবকের দাদার অভিযোগ, “সোমবার ভাইকে ডাকা হয় গ্রামের আটচালায়। বসে সালিশি। ভাইকে মারধর করা হয়। ওই তরুণীকেও ডাকা হয়। তারপর উত্তম মণ্ডলের নির্দেশে দু’জনের গলায় জুতোর মালা দিয়ে ঘোরানো হয় গ্রাম।” ওই যুবকের এক আত্মীয় বলেন, “আমার স্ত্রী-সহ কয়েকজন বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারা হয়েছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “যে দলের যা সংস্কৃতি তাই করছে। মানুষ দেখছেন। তাঁরাই বিচার করবেন।” গোটা ঘটনার সময়েই অবশ্য গ্রামে ছিলেন না ওই মহিলার স্বামী। |