|
|
|
|
শীর্ষে ওড়িশা |
বিদেশি লগ্নি টানার দৌড়ে এখনও
পিছিয়ে রাজ্য, সমীক্ষা অ্যাসোচ্যামের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শুধু দেশি নয়, বিদেশি লগ্নিকারীদের আস্থা পাওয়ার দৌড়ে এখনও অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি (এফডিআই) প্রস্তাব পাওয়ার ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে এ রাজ্যের স্থান ১৪তম। বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এই তথ্যই ধরা পড়েছে।
তথ্যের ব্যাখ্যা চেয়ে অ্যাসোচ্যামের সেক্রেটারি জেনারেল ডি এস রাওয়াতের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে সোমবার তিনি জানান, দরাজ হাতে লগ্নি টানার নীতি ও আগ্রাসী মনোভাবই অন্য রাজ্যগুলিকে এই তালিকায় সামনে জায়গা করে দিয়েছে। প্রতিযোগিতার বাজারে লগ্নি টানতে হলে এ রাজ্যেকেও সেই আগ্রাসী মনোভাব নিতে হবে বলে তাঁর অভিমত। এফডিআই নিয়ে এই সমীক্ষার প্রসঙ্গে অবশ্য এ দিন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
২০১১-’১২ সালে কোন রাজ্য কত অঙ্কের এফডিআই প্রকল্পের প্রস্তাব পেয়েছে তা নিয়েই সমীক্ষা চালিয়েছিল অ্যাসোচ্যাম। সেই হিসেবে, দেশ জুড়ে মোট ৭৬৩টি এ ধরনের প্রকল্পে মোট ১.৭৮ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নি প্রস্তাব এসেছে। পশ্চিমবঙ্গে ওই সময়ে মোট ২৪টি এফডিআই প্রকল্পের প্রস্তাবে মোট লগ্নির অঙ্কটা মাত্র ১২৪৩ কোটি টাকা।
সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গকে বহু যোজন পিছনে ফেলে শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে ওড়িশা। ১৭টি প্রকল্পে সেখানে মোট ৪৯ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা লগ্নির প্রস্তাব এসেছে। এর পরের ৫টি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে অন্ধ্র প্রদেশ (৩৩,৯৩৬ কোটি টাকা), গুজরাত (২০,২৫৮ কোটি টাকা), ছত্তীসগঢ় (২০,০০০ কোটি টাকা), কর্নাটক (১৪,০০০ কোটি টাকা) ও মহারাষ্ট্র (১২,০০০ কোটি টাকা)। অবশ্য প্রস্তাবের সংখ্যা বেশি হলেই লগ্নির অঙ্ক বেশি হবে, এমন নয়। যেমন মহারাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি প্রস্তাব (১৪৪টি) পেলেও সেগুলির সম্মিলিত লগ্নির পরিমাণ ওড়িশার চেয়ে অনেক কম।
পশ্চিমবঙ্গকে পিছনে ফেলেছে রাজস্থান, তামিলনাড়ু, হিমাচল প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, পঞ্জাবও। আর পশ্চিমবঙ্গের পিছনে রয়েছে বিহার, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড, জম্মু-কাশ্মীর, অসম, কেরলের মতো রাজ্য। শিল্পমহলের মতে, বিদেশি লগ্নিকারীরা এ রাজ্যে বিনিয়োগের ব্যাপারে এখনও ততটা আগ্রহী নয়, এই তথ্য তারই প্রমাণ।
কী বলছে অ্যাসোচ্যাম? এ রাজ্যে শিল্পায়ন নিয়ে সম্প্রতি অ্যাসোচ্যামের বক্তব্যে বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ায় কিছুটা সতর্ক রাওয়াত। এ দিন তিনি বলেন, “নতুন সরকারকে লগ্নিকারীদের আস্থা অর্জন করতে হবে। বড় অঙ্কের লগ্নিও চাই। পশ্চিমবঙ্গে যেমন লগ্নির ভাল সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনই রাজ্যেরও অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে।” খুচরো বিপণনে এফডিআই নিয়ে সরকারের আপত্তির কথা জানেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, নীতিগত প্রশ্নে যেখানে রাজ্যের এফডিআই-তে আপত্তি নেই, সেখানেই বিনিয়োগ টানতে উদ্যোগী হোক সরকার।
তবে বিতর্ক এড়াতে রাওয়াতের দাবি, প্রতিযোগিতার বাজারে দেশি বা বিদেশি, যে কোনও রকম লগ্নি পেতে হলে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সব রাজ্যকেই আগ্রাসী হতে হবে। তাঁর বক্তব্য, প্রতিযোগিতার সেই নিয়ম মেনেই এগিয়ে গিয়েছে ওড়িশা, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশের মতো রাজ্য। রাওয়াত বলেন, “গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি জাপানে গিয়ে সুজুকি-র চেয়ারম্যান ওসামু সুজুকি-কে গুজরাতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।”
অন্য দেশের সঙ্গে ভারতও এখন এফডিআই টানার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। বিদেশি লগ্নিকারীরাও সম্ভাবনাময় বাজারের মধ্যে ভারতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এই সুযোগটাই কাজে লাগানোর কথা সমীক্ষায় বলেছে অ্যাসোচ্যাম। তাদের যুক্তি, লগ্নি প্রক্রিয়া সহজ করার পাশাপাশি লালফিতের ফাঁসও শিথিল করা প্রয়োজন। |
|
|
|
|
|