অভিযুক্ত বিদ্যুৎ বণ্টন আধিকারিক
‘অপমানে আত্মঘাতী’ অস্থায়ী কর্মী
চমকা চাকরি ‘খুইয়ে’ এবং কর্তৃপক্ষের ‘আচরণে অপমানিত’ হয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক অস্থায়ী কর্মী ডোমজুড় গ্রুপ ইলেকট্রিক সাপ্লাই কার্যালয়ের এক পদস্থ আধিকারিকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ দায়ের হয়েছে পুলিশে। মৃত প্রতাপ ঘোষের (৪৩) বাড়ি ডোমজুড়েরই বেগড়িতে। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতেই গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় প্রতাপবাবুর দেহ মেলে। শুক্রবার প্রতাপবাবুর স্ত্রী রিনা ঘোষের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ওই আধিকারিক ও এক বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা
প্রতাপ ঘোষ
করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে মেলা সুইসাইড নোটেও এমনই অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ মানেনি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।
প্রতাপবাবু বছর দশেক অস্থায়ী ঝাড়ুদার হিসাবে ডোমজুড় গ্রুপ ইলেকট্রিক সাপ্লাই অফিসে কাজ করতেন। পরিবারের অভিযোগ, ওই পদে অন্য কর্মী বহাল করার মতলবে তাঁকে কয়েকমাস ধরে বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। শেষ পর্যম্ত গত ২৯ জুলাই থেকে প্রতাপবাবুকে অফিসে আসতে নিষেধ করা হয়। মৃতের ভাই সুন্দর ঘোষের বক্তব্য, “দাদা সামান্য বেতন পেতেন। কাজ চলে যাওয়ায় প্রচণ্ড হতাশ হন।” আত্মীয়দের দাবি, চাকরি ফিরে পাওয়ার অনুরোধ জানাতে বার দু’-তিন ডোমজুড়ের ওই অফিসে যান প্রতাপবাবুু। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে ভিতরে ঢুকতে দেননি। সুন্দরবাবু বলেন, “আমার বাড়িতে বিদ্যুৎ নিয়ে একটা গোলমাল ছিল। দাদা বললেন, ‘তোর কাজটা আমাকে দে। এই অজুহাতে যদি অন্তত এক বার অফিসে ঢুকতে পারি, তা হলে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলার সুযোগ পাব’। বুধবার দাদা ওই অফিসে যান।” প্রতাপবাবুর মা সন্ধ্যাদেবীর অভিযোগ, “ওই দিন অফিস থেকে প্রতাপকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ও আমাকে বলল, ‘‘এত দিন যেখানে কাজ করলাম সেখানে আমাকে ঘাড় ধাক্কা খেতে হল! এক মাস মাইনে পাইনি। কী হবে বুঝতে পারছি না’! সেই অপমান বরদাস্ত করতে না পেরেই ছেলেটা চলে গেল!”
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতাপবাবুর সুইসাইড নোটে ডোমজুড় গ্রুপ ইলেকট্রিক সাপ্লাই অফিসের এক পদস্থ আধিকারিক এবং এক নিরাপত্তা রক্ষীকে দায়ী করা হয়েছে। শনিবার ওই আধিকারিককে ফোন করা হলে আনন্দবাজারের নাম শুনেই তিনি ফোন কেটে দেন। বহু চেষ্টাতেও যোগাযোগ করা যায়নি ওই নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার হাওড়া ডিভিশন অফিস (২)-এর ডিভিশন্যাল ম্যানেজার জীবনলাল মল্লিক বলেন, “জনসংযোগ আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলুন।” মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “খোঁজ নিয়ে সোমবার এ ব্যাপারে বলব।” তবে সংস্থার এক কর্তার দাবি, বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নাম করে বহু মানুষের কাছ থেকে প্রতাপবাবু টাকা নিয়েছেন বলে ডোমজুড় অফিসে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল। ওই অফিস থেকে সেই সব কাগজপত্র পাঠানো হয় কর্তৃপক্ষের কাছে। তাঁদের পরামর্শ চাওয়া হয়। ঘটনাক্রম দেখে প্রতাপবাবুু হয়তো ভেবেছিলেন, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হবে। ফলে, তিনি নিজেই অফিসে আসা বন্ধ করে দেন। প্রতাপবাবুকে অপমানও করা হয়নি বলে দাবি ওই কর্তার।
প্রতাপের স্ত্রী রিনাদেবী বলেন, “আমার স্বামী ইলেকট্রিকের কাজ জানতেন। অবসরে কারও কারও বাড়িতে তা করেই মজুরি নিতেন। ওঁর বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.