লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে সর্বভারতীয় স্তরে নিজের দলকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলতে চান তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সর্বভারতীয় তৃণমূল যুবা-র প্রথম রাজ্য সম্মেলন ও শিক্ষণ শিবিরের মধ্যে দিয়ে সেই কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করলেন তিনি। একই সঙ্গে রাজনীতির বৃহত্তর ময়দানে অভিষেকের পা রাখার ক্ষেত্রও প্রস্তুত করে দিলেন মমতা।
তৃণমূলের ছাত্র ও যুব সংগঠন থাকলেও এক বছর আগে ‘পরিবর্তনে’র বিজয় উৎসবে ব্রিগেড থেকে মমতা ‘যুবা’র প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করেছিলেন। এ দিন তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মমতা বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা তৃণমূল যুব কংগ্রেস নিজেদের মতো কাজ করবে। |
কিন্তু যুবার কাজ আলাদা। তারা উন্নততর মানুষ তৈরি করবে।” যুবা-র তরফেও বলা হয়েছে, মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সর্বভারতীয় স্তরে দলের প্রচার ও প্রসার করাই তাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তৃণমূল নেতৃত্বেরও একাংশের বক্তব্য, বিভিন্ন রাজ্যের মানুষের কাছে এই সংগঠনকে ‘এক নতুন চেহারা’ দিতে চাইছেন তাঁদের নেত্রী। গত বছর দলের সর্বভারতীয় চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় বারের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পরে এই নেতাজি ইন্ডোরেই তাঁকে ‘জাতীয় নেত্রী’ হিসেবে তুলে ধরার কথা ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল নেতারা। এ দিনও ইন্ডোরে রেলমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, মন্ত্রী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলীয় নেতাদের বক্তব্য, মমতাকে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ ‘দেশের নেত্রী’ হিসেবেই ভাবছেন। তাঁদের কারও কথায়, “মমতার হিম্মত আছে দেশের হাল ধরার”, কেউ বললেন, “মমতা হাসলে ইউপিএ-২-র অন্য শরিকরা হাসেন।” অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ নেতারা সম্মেলনে জানান, সঙ্কট ও সমস্যা মোকাবিলা করে মমতা-সরকারের উন্নয়নের কাজ দেশের মানুষের কাছে প্রচার করতে হবে। সহকর্মীদের বক্তব্যের সূত্র ধরেই মমতা জানান, তাঁদের দলের ‘আদর্শ ও স্বচ্ছতা’র জন্য আগামী দিনে সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলের ‘নাম’ হবে। |
‘দিশারী’ নেত্রী। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। নিজস্ব চিত্র |
তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠছে, তা ‘কুৎসা ও অপপ্রচার’ বলে ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি তা মোকাবিলার জন্য ‘যুবা’র সদস্যদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মমতা। যুবা’র সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “কোনও রকম অপপ্রচার হলে তার যোগ্য জবাব দিন। ফেসবুক, টুইটার, ই-মেলে অভ্যস্ত এখনকার তরুণরা। এ সবের মাধ্যমে ভাল কাজ মানুষের কাছে তুলে ধরুন। দলের ভাবমূর্তি তৈরি করুন।”
এ দিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘উন্নততর চরিত্র গঠনে’র জন্য যুবা-র ইন্সস্টিটিউট গড়া হবে। এই ব্যাপারে অবিলম্বে প্রকল্প তৈরির জন্য মমতা দলের রাজ্যসভার সদস্য ও যুবা-র অন্যতম উপদেষ্টা ডেরেক ও’ব্রায়েনকে দায়িত্ব দিয়েছেন। |