অধ্যাপক নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে পুরুলিয়ার সিধো-কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। নিয়োগ নিয়ে তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে তৃণমূলের একাংশ। শুধু তাই নয়, এই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের কাছে গণস্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রও পাঠানো হয়েছে। এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস চত্বরে পোস্টারও পড়েছে। টিএমসি নামাঙ্কিত সবুজ কালিতে লেখা ওই পোস্টারে যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করে কেন অপেক্ষাকৃত নিম্নমেধার প্রার্থীকে নিয়োগ করা হয়েছে। উপাচার্যের কাছে তার জবাব চাওয়া হয়েছে। একাধিক পোস্টারে নিয়োগে বেনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন বিষয়ের মোট ২৬ জনকে নিয়োগ করে। অভিযোগকারীদের বক্তব্য, সব বিষয়ের ক্ষেত্রে না হলেও কয়েকটি বিষয়ের অধ্যাপক নিয়োগের ক্ষেত্রে বেনিয়ম হয়েছে। পুরুলিয়া ২ ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি রাজপতি মাহাতোর অভিযোগ, “এমন দু’জনকে নিয়োগ করা হয়েছে যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) সদস্য ছিলেন। তাঁরা যখন বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন এবং ইন্টারভিউ দিতে আসেন তখনও তাঁরা ইসির সদস্য।” তাঁর কথায়, “ইসি-র সদস্য হিসেবে তো তাঁদের জানার কথা কারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকবেন। পাশাপাশি, বাংলা বিভাগের নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে।” তাঁর দাবি, “যে সমস্ত ক্ষেত্রে বেনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার তদন্তের জন্য আচার্যের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। কারা ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন, যাঁরা ইন্টারভিউ দিয়েছেন তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য জানার আইন অনুযায়ী জানতে চেয়েছি।”
বেনিয়মের তদন্তের দাবিতে তাঁরাই পোস্টার সেঁটেছেন বলে রাজপতিবাবু স্বীকারও করেছেন। যদিও যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে ওই পোস্টারের সঙ্গে দলের সম্পর্কের কথা পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়েছে। জেলা যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি গৌতম রায় বলেন, “আমাদের কাছেও খবর রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস চত্বরে অধ্যাপক নিয়োগে বেনিয়ম সংক্রান্ত পোস্টার পড়েছে। সেই পোস্টারে আমাদের দলের নাম থাকলেও তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। কে বা কারা দলের নামে ওই পোষ্টার সেঁটেছে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।”
অভিযোগ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শমিতা মান্না বলেন, “বাংলা বিষয়ের অধ্যাপক নিয়োগ নিয়ে যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করা হয়েছে এই অভিযোগ ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ইন্টারভিউ বোর্ড গঠিত হয়েছিল। তাঁদের যোগ্যতা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আর ইসি-র সদস্য থেকে যাঁরা আবেদন করে নিয়োগপত্র পেয়েছেন তাঁদের নিয়োগও বৈধ। এরমধ্যে বিধিভঙ্গের কিছু নেই।” পোস্টার সম্পর্কে তিনি বলেন, “এ নিয়ে আমি আর কী বলব। তদন্ত হবে কি না সেটা ভিন্ন বিষয়। তবে নিয়োগ নিয়ে আমার জায়গা থেকে আমরা পরিষ্কার।” |