কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন এই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা। ওই ছাত্রছাত্রীদের দাবি, কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই তাঁরা পাঠ্য বিষয় পরিবর্তন করতে পারেননি।
কলেজে বিভিন্ন বিভাগে কিছু শূন্য আসন এখনও রয়ে গিয়েছে। অন্য বিভাগে পাঠরত যে সব পড়ুয়ারা বিষয় পরিবর্তন করে সে সব বিভাগে যেতে চান, তাঁদের কলেজ কর্তৃপক্ষ শুক্রবার আসতে বলেছিল। কিন্তু এই দিন কলেজে এসে তাঁরা জানতে পারেন, বিষয় পরিবর্তন করা যাবে না। তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। তাঁদের ধারণা হয়, কলেজ কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করেই তাঁদের বিষয় পরিবর্তন করতে দিচ্ছেন না। ওই কলেজের ছাত্রী রশ্মি দাস বলেন, “আমরা চাই পাঠ্য বিষয় পরিবর্তন করতে। আমরা যে সব বিভাগে যেতে ইচ্ছুক, সে সব বিভাগে শূন্য আসনও রয়েছে। কিন্তু আমাদের দীর্ঘদিন ধরে হয়রান করা হচ্ছে।” এর আগে অবশ্য ১৮ অগস্ট এক দফা বিষয় পরিবর্তনের সুযোগ পেয়েছিলেন এই কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। তারপরে আবার ২৪ অগস্ট বিষয় পরিবর্তন করা যাবে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ২২ অগস্টই নোটিসও দিয়েছিল। ছাত্র মৃত্যুঞ্জয় রায় বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করেই আমাদের এ বার বিষয় পরিবর্তন করার পথে বাধা তৈরি করছেন। বাধ্য হয়েই তাই আন্দোলনে নামতে হল।” |
এই দিন দুপুর আড়াইটে থেকে রাত পর্যন্ত কলেজের প্রায় ৪০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ঘরে আটক রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। কলেজের অধ্যক্ষ জয়শ্রী রায়চৌধুরী বলেন, “শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি কয়েকদিন কলেজে যেতে পারিনি।” তিনি বলেন, “পাঠ্য বিষয় পরিবর্তনের কাজ করে অ্যাডমিশন কমিটি। সেই কমিটির এক আহ্বায়ক পদত্যাগ করেছেন। অন্য জন এই দিন কলেজে আসেননি। কিন্তু তাঁর কাছেই সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে। সে কারণেই আগে থেকে নোটিস দেওয়া সত্ত্বেও আমরা ওই কাজ এই দিন করতে পারিনি। আমি সুস্থ হয়ে কলেজে যাওয়ার পরেই বিষয়টির নিষ্পত্তি করব।” একই কথা বলেন কলেজের শিক্ষক সুদীপ্ত প্রামাণিক বলেন, “আমাদের অ্যাডমিশন কমিটির আহ্বায়ক অসুস্থ বলে কলেজে আসতে পারেননি। তাঁর কাছেই সব কাগজপত্র রয়েছে। আর সে কারণেই এই দিন বিষয় পরিবর্তন করা যায়নি।”
এই কলেজের ছাত্র সংসদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নিয়ন্ত্রণে। ছাত্র সংসদের সম্পাদক সম্রাট পাল বলেন, “আমরা বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলিকে সমর্থন করলেও তাদের এই শিক্ষক ঘেরাও করে আন্দোলন সমর্থন করছি না। আমরা সে কথা তাঁদের বলেছিলাম। কিন্তু তাঁরা তা শোনেননি।” এসএফআইয়ের জেলা কমিটির সভাপতি কৌশিক দত্তের অবশ্য দাবি, “সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সামনে রেখে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ দিনের পর দিন এ ভাবে কলেজে কলেজে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছে। ওরা চাইছে কলেজ থেকে পড়াশোনার পরিবেশটাই তুলে দিতে।” |