বৃষ্টির মাঠে জিততে হাউটন-স্টাইল নেবেন কোভারম্যান্স
ডাচ বনাম হাঙ্গেরির লড়াই না কি, ডাচ বনাম ডাচ। আজ শনিবার নেহরু কাপে লড়াইটা ঠিক কার বিরুদ্ধে কার?
কোভারম্যান্সের বিরুদ্ধে মলদ্বীপের কোচ হয়ে যিনি নামছেন সেই ইস্তাভা ইউরিবানি হাঙ্গেরির লোক। আবার এক সময় মলদ্বীপে ছিল ডাচ শাসন। দলের অনেক ফুটবলারের রক্তে তাই ডাচ-রক্ত বইছে। “তাই! আমি তো এই খোঁজ নিইনি। জানিও না। সে জন্যই গতকাল দেখছিলাম ওদের মধ্যে পাস খেলার প্রবণতা রয়েছে” বলতে বলতে অনুশীলনে নেমে পড়েন সুনীল-নবিদের কোচ।
কোভারম্যান্সের আদর্শ স্টাইলমাটিতে বল রেখে পাসিং ফুটবল। সেই অনুশীলনই গত তিন সপ্তাহ ধরে রপ্ত করানোর চেষ্টা করে চলেছেন তিনি। আবার মলদ্বীপও তো সেই পথে হাঁটতেই আগ্রহী। তাদের হাঙ্গেরিয়ান কোচ তিন বার ছাঁটাই হয়ে তিন বার ফিরে এসেছেন। কিন্তু বদলানোর চেষ্টা করেননি ডাচ-ধারা। ট্যাকটিক্সের কচকচানিতে গিয়ে লাভ নেইপাসিং ফুটবলটা দু’দলই খেলতে চায়, তবে হবে কোথায়? প্রবল বৃষ্টিতে দিল্লির বিভিন্ন এলাকা জলের তলায়। অম্বেডকর স্টেডিয়ামে ডুরান্ড কাপের ম্যাচ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নেহরু স্টেডিয়ামে সুপার সপার চালিয়ে বল গড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি করলেও ক্যামেরুন-সিরিয়া ম্যাচের পর কী অবস্থা দাঁড়াবে তা নিয়ে চিন্তিত ভারতীয় শিবির। শুক্রবার বিকেলে মূল দিল্লি থেকে প্রায় পঞ্চাশ মাইল দূরের জেপি গ্রিনে গিয়ে দেখা গেল, ‘প্ল্যান বি’ তৈরির চেষ্টা চলছে। কোনও রাখঢাক না করেই ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী বলে দিলেন, “বৃষ্টি হলে গত তিন সপ্তাহ ধরে কোচ আমাদের খেলায় যে পরিবর্তনটা আনার চেষ্টা করছেন, সেটা কাজে লাগবে না। সমস্যা হবে। তবে আমাদের প্ল্যান বি-ও তৈরি আছে।”
‘প্ল্যান বি’-টা কী? খুবই সহজবল তুলে তুলে খেলতে হবে। মানে হাউটন-স্টাইল। পাস-পাস-পাসের স্টাইল বদলে ওয়ান টাচ খেলা। বল তোলো আর ঝাঁপাও। খাটো চেহারার সুনীলের পাশে একটু লম্বা কাউকে নিয়ে আসতে হবে বিপক্ষ গোলের সামনে। বৃষ্টি জারি থাকলে কি আপনার দলে পরিবতর্ন হবে? “আমি কোনও কিছুই বলছি না। সবই হতে পারে। আমার কুড়ি জনই তৈরি। সবাই সেরাটা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।” ফর্মেশন আর ট্যাকটিক্স নিয়ে সদা সতর্ক কোভারম্যন্স এ ভাবেই থামিয়ে দেন সব জল্পনা। যেমন কেন সুব্রত পাল বা রহিম নবিকে অধিনায়ক করার কথা ভাবা হল না সেই প্রশ্নে ভ্রু কুঁচকে বলেন, “এটা আমার নিজস্ব সিদ্ধান্ত। অন্য কারও নয়।”
সুনামির কবলে পড়ে মলদ্বীপের ছ’টি দ্বীপই সাফ হয়ে গিয়েছে। সুনীল-নবি-সুব্রত পালরা কিন্তু অত সহজে আসফাক আলিদের সাফ করতে পারবেন, এটা লেখা যাচ্ছে না। কারণটা কী? গত দু’টো নেহরু কাপের চ্যাম্পিয়ন দলে থাকা সুনীল নিজেই বলছেন, “আমার মতে সিরিয়ার চেয়েও এই দলটা শক্তিশালী। ওদের সঙ্গে চারটে ম্যাচ খেলেছি। যারা খেলেছিল তাদের অনেকেই এ বারও টিমে। এই একাত্মতাটা বড় ব্যাপার। আমাদের দলে এটা আনার চেষ্টা চলছে। অনেকেই তো নতুন।” টিমের একাত্মতা আনতে ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার টেবিল, সর্বত্র এক ভাষায় কথা বলার ধারা চালু হয়েছে। সুনীল-গৌরমাঙ্গি-মেহতাব-ফ্রান্সিসদের একটা ভাষাতেই দলে কথা বলতে হচ্ছেহিন্দিতে। ‘হিন্দি হ্যায় হাম’ বোঝানোর জন্য এর চেয়ে ভাল টোটকা আর কী আছে?
বৃহস্পতিবার মলদ্বীপ-নেপাল ম্যাচ ভারতীয় ফুটবলাররা দেখতে পাননি। জেপি গ্রিনের রিসর্টে বিদ্যুৎ না থাকায়। কোভারম্যান্স অবশ্য নেহরু স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক কালে মলদ্বীপ হারাতে পারেনি ভারতকে। গত বছর সাফ কাপে ৩-১ জিতেছিল ভারতই। এ সবে ডাচ-কোচ অবশ্য খুব মুগ্ধ হলেন বলে মনে হল না। “টিমটা বেশ ভাল। অ্যাটাকিং ফুটবল খেলে। বৃষ্টি যদি হয় তা হলে সমস্যা হবে আমাদের। তবে সিরিয়াকে তো বৃষ্টির মাঠে হারিয়েছে আমাদের ছেলেরা। সিরিয়াকে কখনও দেখিনি, সমস্যা ছিল। মলদ্বীপকে দেখেছি। এটা সুবিধা। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে একটা ভাল ধারণা নিয়ে মাঠে গেলে অনেক কিছু করা যায়,” বলে দিলেন কোভারম্যান্স। প্রথম ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখেছেন নির্মল ছেত্রী, মেহতাব, সুব্রত পাল। রাউন্ড রবিন লিগে কার্ড বড় ফ্যাক্টর। জাতীয় কোচের সঙ্গে কথা বলে মনে হল, মলদ্বীপকে হারিয়ে ফাইনালে যাওয়াটা অনেকটা নিশ্চিত করার জন্য তিন জনকেই দলে রেখে নামবেন। ক্যামেরুন এ দিন সিরিয়ার সঙ্গে ২-২ ড্র করায় সেই সম্ভাবনা বেড়েছে।
এশিয়ার সবচেয়ে ছোট দেশ মলদ্বীপ যে টিম নিয়ে নেহরু কাপে এসেছে, হাঙ্গেরিয়ান কোচ তাদের এক সপ্তাহের বেশি অনুশীলন করানোর সুযোগ পাননি। লিগের চার টপ স্কোরারকে নিয়ে এসেছেন কোচ। এরা হলেন আমেদে, আসাদুল্লা, উমেইর এবং ধাগে। অনূর্ধ্ব ২২ দলের তিন ফুটবলার ঢুকেছেন টিমে। ইস্তাভা উরবানি বললেন, “আমাদের টিম বৃষ্টির মাঠে খেলতে অভ্যস্ত। কোভারম্যান্স যে দলের কোচ তারা একটু সুবিধা তো পাবেই। দিল্লির মাঠে ভারত সব সময়ই ফেভারিট। ওরা সিরিয়াকে হারিয়েছে। তবে বৃষ্টির সুবিধা পেয়েছিল ভারত।” অধিনায়ক আসফাক আলি বহু দিন খেলছেন জাতীয় দলে। ভাইচুং ভুটিয়ার সঙ্গে শুরু করেছিলেন। এখনও খেলছেন। ২৩টা গোল আছে দেশের হয়ে। তাঁর জন্য বিশেষ সতর্কতা থাকবে, ইঙ্গিত দিয়েছেন ভারতের ডাচ-কোচ।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.