উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন উন্নয়নের প্রকল্প নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করতে চলেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষকে ওই তথ্যচিত্রটি পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে রাজ্য সরকার। বুধবার সন্ধ্যায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বিষয়টি জানিয়েছেন। গোটা উত্তরবঙ্গকে ধরে সরকারি উদ্যোগে এই ধরণের তথ্যচিত্র প্রথম বলেও মন্ত্রী জানিয়েছেন। পাশাপাশি, স্থিরছবি সহকারে তথ্য দিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, খুব দ্রুত দুটি কাজই শুরু হয়ে যাবে। এ দিন দুটি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে সমস্ত কাজ স্বচ্ছভাবে করা হচ্ছে। দফতরে বসে নয় মানুষের কাছে সমস্যা, অসুবিধা শুনে কাজ করা হচ্ছে। সেইমত বহু প্রকল্পের কাজ চলছে। শুরু হতে চলেছে। সবই আমরা প্রথমে ছবি-সহ তথ্য সম্বলিত একটি পুস্তিকা তৈরি করছি। সেই সঙ্গে একটি তথ্যচিত্র তৈরি হবে। পরিচালক গৌতম ঘোষের সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি তথ্যচিত্রটি তৈরি করবেন।” সরকারি সূত্রের খবর, গত ১৫ মাস আগে ক্ষমতায় আসার পর রাজ্য সরকার গৌতম দেবকে মন্ত্রী করে প্রথম উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর তৈরি করে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে দফতর কাজ শুরু করে। পূর্বতন বাম সরকারের আমলের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখার পর কাগজপত্র ৩৬০টির মত ১০ বছরে শেষ না হওয়া প্রকল্পের হদিশ মেলে। নতুন করে সমীক্ষার পর সংখ্যাটি ৪৪৪ গিয়ে দাঁড়ায়। প্রথমে সরকারে তরফে ওই কাজগুলি শেষ করার পাশাপাশি নতুন দফতরের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য। সেই টাকা এবং বিভিন্ন তহবিল দিয়ে আরও ১০৯টি প্রকল্পের কাজে হাত দেওয়া হয়। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট, মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়, সার্কিট বেঞ্চ, কোচবিহারে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, কোচবিহার হেরিটেজ রোড, ইস্টার্ন বাইপাস হয়ে জলপাইগুড়ির বিকল্প রাস্তা, ডুয়ার্সে হিন্দি কলেজ, মেডিক্যাল কলেজের আধুনিকীকরণ, ১০টি হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন ছাড়াও সেতু, রাস্তা মিলিয়ে একাধিক প্রকল্প শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “বাম আমলের ৪৪৪টি প্রকল্পের মধ্যে এই ক’মাসে ৩৮০ শেষ করা হয়েছে। আমাদের হাতে সব তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া বহু নতুন কাজও চলছে। মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে রেখেই সবই তথ্যচিত্রে থাকবে। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি গোটা রাজ্যে ওই তথ্যচিত্র বিভিন্ন এলাকায় দেখানো হবে।”
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকেই শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া কামরাঙাগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যে মাটি পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ। রাজ্য রাজধানী ছাড়া বাইরের এলাকায় কোনও মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় নেই। আমাদের দফতরের এটি স্বপ্নের প্রকল্প। শুধু সরকারি দফতর বা সচিবালয় লয়, মানুষ যাতে এলাকাটি দেখতে যায়, সেইভাবে তা তৈরি হবে। তথ্যচিত্রে এই প্রকল্প অন্যতম জায়গা পাবে। এদিন সন্ধ্যায় দফতরে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ম্যানেজিং ডাইরেক্টর-সহ বিভিন্ন আধিকারিক, বেসরকারি, সরকারি ব্যাঙ্ক, তেল সংস্থা, মোবাইল সংস্থা প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। তিনি এনবিএসটিসি-র চেয়ারম্যানও। বৈঠকের পর মন্ত্রী জানান, এনবিএসটিসি-র আয় বাড়ানোর জন্য খালি জমির ব্যবহার করা হবে। এটিএম, ব্যাঙ্ক, পেট্রোল পাম্প মোবাইল টাওয়ার এবং এটিএমের জন্য ভাড়া দেওয়া হবে। এতে বছর খুব কম করেও ২-৩ কোটি টাকা সংস্থার আয় হবে। আগামী ২৪ অগস্ট পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের সঙ্গে কলকাতায় বৈঠকে সবকিছু চূড়ান্ত হবে। |