অন্য দিনের মতোই বুধবার টিফিনের ঘন্টা পড়তেই মালদহের অক্রুরমণি করোনেশন ইন্সস্টিটিউশনের নবম ও দশম শ্রেণির ২০-২৫ জন ছাত্র স্কুল চত্বরের পিছনের দিকে ফাঁকা জায়গায় খেলছিল। হঠাৎ বিশাল পুরাতন একটি কৃষ্ণচূড়া উপড়ে পড়ল ছাত্রদের উপরে। জখম হল ৭ জন ছাত্র। এক ছাত্রের পেট ফুটো করে বেরিয়ে গিয়েছে গাছের ডাল। বাকিদের চোট মাথায়, হাতে, পায়ে। দশম শ্রেণির ছাত্র ঋষভ বন্দোপাধ্যায়ের পেটে গাছের ডাল ঢুকে ফুটো হয়ে পিছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। অস্ত্রোপচার করে তাঁর পেট থেকে গাছের ডাল বের করেছেন চিকিৎসকেরা। গাছের ডাল মাথায় পড়ে মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে নবম শ্রেণির ছাত্র শিবশঙ্কর গুহের জ্ঞান ফেরেনি। |
বুধবার দুপুর ১টা ১০ মিনিট নাগাদ মালদহ শহরের বিনয় সরকার রোডের জেলার নামকরা স্কুল অক্রুরমণি করোনেশন ইন্সস্টিটিউশনে এই ঘটনাটি ঘটেছে। শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও অন্য ছাত্ররা জখমদের উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করান। |
মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ উচ্ছ্বল ভদ্র বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অভিমন্যু বসু-সহ সমস্ত সার্জেন, অর্থোপেডিক বিভাগ ও আনুষঙ্গিক সমস্ত বিভাগের সমস্ত শিক্ষকদের ডেকে অপারেশন থিয়েটারে পাঠিয়ে দিই। ঋষভকে যে অবস্থায় আনা হয়েছিল তাতে ওর জীবনসংশয় হতে পারতো। কলকাতা পাঠালেও সেই ভয় থেকে যেত। সমস্ত শিক্ষক তথা চিকিৎসকেরা যে তৎপরতার অপারেশন করেছেন তা অভাবনীয়। জেলার হাসপাতালের পরিকাঠামোতেও যে এই ধরনের জটিল অস্ত্রোপচার করা গিয়েছে তা অত্যন্ত ভাল ব্যাপার।” |
জেলার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনোজ সাহা বলেন, “মেডিক্যাল কলেজ ছিল বলেই ছেলেটিকে বাঁচানো গিয়েছে। সমস্ত ডাক্তারেরাই একসঙ্গে সময় দিয়েছেন।” খবর পেয়ে স্কুলের সমস্ত ছাত্র ও তাঁদের অভিভাবকেরা মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। যান প্রধান শিক্ষক-সহ অন্য শিক্ষকরা। স্কুলের প্রধানশিক্ষক চঞ্চল ঝা বলেন, “প্রতিদিনই টিফিনে স্কুলের ছাত্ররা স্কুলের পিছনে গিয়ে গাছের নিচে খেলাধূলো করে। ওই মাঠে কয়েকটি বড় বড় গাছ রয়েছে। গাছগুলির গোড়া দুর্বল হয়ে পড়েছে আমরা বুঝতেই পারিনি। আজকে ঝড় হয়নি। হঠাৎ গাছ পড়ে ৭ জন ছাত্র জখম হয়েছে। দু’জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। স্কুলের আরেক শিক্ষক গৌতম চৌধুরী বলেন, “টিফিন শেষের ঘণ্টা পড়ার দু’মিনিট আগে এই ঘটনাটি ঘটেছে।” মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি রয়েছে শিবশঙ্কর গুহ , ঋষভ বন্দোপাধ্যায়, শুভম শেঠ , সাগর সাহা , শুভঙ্কর কুন্ডু, তোহিত রানা , ওয়াসিম আখতার। দশম শ্রেণির ছাত্র শুভঙ্করের কথায়, “আমরা খেলছিলাম। হঠাৎ মড়মড় শব্দ শুনে উপরে তাকাতেই দেখি কৃষ্ণচূড়া গাছটি আমাদের উপর পড়ছে। পালানোর আগেই গাছের একটি বড় ডাল আমার পায়ে পড়ল। আমাদের চিৎকার শুনে সবাই এসে আমাদের উদ্ধার করে।” |