পুরুলিয়া-রাঁচি রাস্তা সংস্কারের অভাবে বিপজ্জনক হয়ে ওঠায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চাষমোড় থেকে তুলিন পযর্ন্ত রাস্তা সংস্কারের দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি তিন দিনের পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তবে পূর্ত দফতর রাস্তাটি সংস্কারের কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
পুরুলিয়া শহর থেকে জয়পুর, কোটশিলা, ঝালদা হয়ে এই রাস্তাটিই ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি পর্যন্ত গিয়েছে। ওই তিন ব্লকের বাসিন্দারা এই রাস্তার উপর নির্ভরশীল। ঝালদা ১ ব্লকের তুলিন লাগোয়া সুবর্ণরেখা নদী পযর্ন্তই এ রাজ্যের সীমানা। এই পথের নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, পুরুলিয়া ১ ব্লকের চাষমোড় থেকে তুলিন পযর্ন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত বেহাল। রাস্তার গর্তে পড়ে বাস হেলতেদুলতে যায়। নিত্যযাত্রী তপন মাজি বলেন, “কোটশিলার কাছে রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ, বাস উল্টে যাওয়ার আশঙ্কায় কাঁটা হয়ে থাকি।” |
আইএনটিইউসি-র ঝালদা শাখার সম্পাদক নির্মল কুমারের কথায়, “রাস্তাটি বেহাল বললে কিছুই বলা হয় না। সমগ্র রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত, কোথাও তা ছোট ডোবার চেহারা নিয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। গর্তগুলি এখন জলে ডুবে থাকায় এই রাস্তায় নতুন যাতায়াতকারীদের অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।” তাঁর অভিযোগ, এতে অবশ্য প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। গত বছর অগস্ট মাসেই তাঁরা টানা দু’দিন এই রাস্তায় পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েও শেষ মূর্হুতে তা প্রত্যাহার করে নেন। নির্মলবাবু জানান, গত ১০ বছরে এই রাস্তায় কোনও সংস্কার হয়নি। তাই গত বছর তাঁরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশাসন অবিলম্বে সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ায়, তাঁরা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন। তাঁর ক্ষোভ, “কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল এক বছর পার হয়ে গেলেও প্রশাসন কথা রাখেনি। তাই এ বার বাধ্য হয়েই আমরা তিন দিন ধরে পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি।” জয়পুর, কোটশিলা, ঝালদা, রাখবড়-সহ এই পথের বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের কর্মীরা অবরোধ করবেন বলেও সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে।
পুরুলিয়া জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্তেরও ক্ষোভ, “ওই রাস্তা মেরামতের জন্য আমরাও প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন জানিয়েছি। আইএনটিইউসি আমাদের চিঠি দিয়ে ধর্মঘটের কথা জানিয়েছে।”
গত জুন মাসে একই দাবিতে এই রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে দিনভর অবরোধ করে ফরওয়ার্ড ব্লক। এলাকার বাসিন্দা তথা জয়পুরের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতোও স্বীকার করেছেন, “রাস্তাটি তো যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। মানুষ তো আমাদের কাছে কিছু ভাল কাজ আশা করে। এই রাস্তা দেখলে তাই লজ্জা হয়।” তাঁর অভিযোগ, জেলা প্রশাসন কাজ হবে বলে তাঁদের আশ্বাস দিয়েছিল। এখনও কিছুই হল না। পূর্ত ও সড়ক দফতরের পুরুলিয়ার কার্যনির্বাহী বাস্তুকার অমলেন্দু বিশ্বাস বলেন, “ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য তিন বার ই-টেন্ডার ডেকেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বার টেন্ডারে একটি সংস্থাকে ঠিক করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।” |