বেপরোয়া ভাবে মোড় ঘুরতে গিয়ে একটি বড় গাড়ির সামনে পড়ে গিয়েছিল যাত্রী-বোঝাই অটোটি। গাড়ির চালক ব্রেক কষলেও দুর্ঘটনা এড়ানো যায়নি। ধাক্কা মেরে গাড়ির সামনের দিকে আটকে যায় অটোটি। ওই অবস্থায় কিছু দূর যাওয়ার পরে ফুটপাথে উঠে যায় গাড়িটি। পরে এলাকার লোকজন এসে অটোর চালক ও যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বিধাননগরের ফাল্গুনী আবাসন স্টপে। পুলিশ জানায়, চালক ছাড়া দুই মহিলা-সহ মোট পাঁচ জন যাত্রী ছিলেন ওই অটোয়। সি মহালিঙ্গম, গৌতম চট্টোপাধ্যায় ও অঙ্কিতা অগ্রবাল নামে তিন যাত্রী গুরুতর জখম হয়েছেন। অটোচালক সুরেশ দাসও আহত। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকি দুই যাত্রীর চোট সামান্য।
পুলিশ জানায়, এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ উল্টোডাঙা থেকে ১৩ নম্বর ট্যাঙ্কের দিকে যাচ্ছিল অটোটি। ফাল্গুনী আবাসন স্টপের মোড় থেকে রাস্তা পার করে পূর্বাচল আবাসনমুখী রাস্তার দিকে ঘুরতে যায় সেটি। তখন জি ডি আইল্যান্ড থেকে লাবণিমুখী রাস্তা দিয়ে একটি ইনোভা গাড়ি যাচ্ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ফাল্গুনী মোড়ের কাছে ইনোভা গাড়িটিতে গিয়ে ধাক্কা মেরে দুমড়ে যায় অটোটি। ইনোভার ডান দিকের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। |
দুর্ঘটনার পরে সেই অটো ও গাড়ি। মঙ্গলবার, সল্টলেকে। —নিজস্ব চিত্র |
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দা শান্তনু মল্লিক বলেন, “অটোটি খুব জোরে রাস্তা পেরোতে গিয়েছিল। গাড়ির চালক ব্রেক কষলেও দুর্ঘটনা এড়ানো যায়নি।” স্থানীয় লোকজন এসে আহতদের উদ্ধার করেন। তাঁদের বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চালক সুরেশ দাস এবং সি মহালিঙ্গম নামে এক যাত্রীর চোট গুরুতর হওয়ায় তাঁদের পরে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মাথায় ও পায়ে চোট রয়েছে। পরে মহালিঙ্গমকে স্থানান্তরিত করা হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। আহত গৌতম চট্টোপাধ্যায় মহকুমা হাসপাতালে এবং অঙ্কিতা অগ্রবাল বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যাত্রীরাও অটোটির বিরুদ্ধে জোরে চালানোর অভিযোগ তুলেছেন। যদিও অটোচালকের দাবি, তিনি ধীরেই চালাচ্ছিলেন।
ওই রুটের এক অটোচালক জানিয়েছেন, তাঁরা পূর্বাচল এলাকার বা স্থানীয় যাত্রী পেলে তবেই ফাল্গুনী মোড় থেকে ডান দিকে বেঁকে যান। তা না হলে সোজা অনিন্দিতা স্টপ থেকে আইল্যান্ড ঘুরে ১৩ নম্বর ট্যাঙ্কে চলে যান। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সল্টলেকের অন্যান্য মোড়ে আইল্যান্ড থাকলেও ফাল্গুনী আবাসনের কাছে ওই মোড়ে কোনও আইল্যান্ড বা ট্রাফিক সিগন্যাল নেই। সেখানে কোনও ট্রাফিক-পুলিশও থাকে না। এর আগেও ওই জায়গায় বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার পরেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
এ ব্যাপারে বিধাননগরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) প্রণব কুমার বলেন, “বিধাননগরের বেশ কিছু মোড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই মোড়ের ট্রাফিক ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |