জলপাইগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস দ্রুত চালু করা-সহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে রাজ্য সরকারের সাহায্য চাইলেন কর্তৃপক্ষ। সোমবার উপাচার্যের অনুরোধে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসমিতির সদস্যদের একাংশকে নিয়ে এ ব্যপারে বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। মূলত জমি হস্তান্তরজনিত সমস্যার কারণে আটকে রয়েছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালুর কাজ। ঠিক হয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল, উচ্চ শিক্ষা দফতরের সচিবদের নিয়ে বিভাগীয় মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে আলোচনা করবেন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেও তাঁর কাছে আর্জি জানানো হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে প্রশাসনিক স্তরে সহায়তা, প্রয়োজনে আর্থিক সংস্থান সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে কোথাও কোনও সমস্যা থাকলে তা দূর করতে সরকারি স্তরে সমস্ত রকম উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজের আর্থিক সংস্থান-সহ অন্যান্য বিষয় রয়েছে। শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল, উচ্চ শিক্ষা দফতরের সচিবদের নিয়ে উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস দ্রুত চালু করার ক্ষেত্রে অসুবিধা-সহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও যাওয়া হবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর দাবি, বিভিন্ন কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির শিকার হয়েছে। কর্মচারী নিয়োগ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। সেটা কাম্য নয়। শিক্ষা এবং গবেষণার কাজকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পড়াশোনার পরিবেশ ফেরাতে বর্তমান রাজ্য সরকার তৎপর। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে এ দিন প্রাথমিক ভাবে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। মাঝেমধ্যে এ ধরনের আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য সমীর কুমার দাস বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালু-সহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সাহায্য চাই। সে কারণেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে আলোচনার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। সেই মতো এ দিন কর্ম সমিতির উত্তরবঙ্গের যাঁরা সদস্য তাঁদের আলোচনায় ডাকা হয়েছিল। মন্ত্রীর উপস্থিতিতে ইতিবাচক কথাবার্তা হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জমি হস্তান্তর এবং নামজারি না-হওয়ায় জলপাইগুড়িতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালু করার কাজে বিলম্ব হচ্ছে। সেই সমস্যা কাটিয়ে জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কর্তৃপক্ষের দেওয়া জমিতে দ্রুত দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালু করতে চান কর্তৃপক্ষ। আপাতত, কলেজ ভবনের কয়েকটি ঘরে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজকর্ম চালুর বিষয়েও ভাবা হচ্ছে। এই শিক্ষাবর্ষ থেকে সম্ভব না হলেও পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ থেকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে পড়াশোনা চালু করতে চান তাঁরা। তা ছাড়া বরার চাষের জন্য ব্যবহৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২০ একর জমি বেদখল হয়ে পড়ে রয়েছে। দখল হয়ে গিয়েছে আইন বিভাগ লাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জমির একাংশ। তা উদ্ধার করতে সচেষ্ট কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। তাতে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। তাই মন্ত্রীর কাছে এ দিন আরও একটি অ্যাম্বুল্যান্স চাওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজেও সামিল হতে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন তাঁরা। সমীরবাবুর কথা, “উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন কাজে বৌদ্ধিক নেতৃত্ব দিতে উৎসাহী আমরা। এ দিনের আলোচনায় মন্ত্রীকে তা জানানো হয়েছে। ঠিক হয়েছে এ ব্যাপারে জাতীয়স্তরের কর্মশালার আয়োজন করা হবে।” খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি এবং ‘ফার্মাসিউটিক্যাল’ প্রযুক্তি বিষয়ে পাঠ্যক্রম চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি কোর কমিটিও গড়ে তোলা হয়েছে। |