আমনের মরসুম শুরু হতেই চড়তে শুরু করেছে সারের দাম। সরকার নির্ধারিত দামের থেকে অনের বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইউরিয়া, পটাশ, ডিএপি কিংবা ২০-২৬-২৬ এর মত মিশ্র সার। ভরা মরসুমে দাম বৃদ্ধি চাষিরা বাধ্য হচ্ছেন প্রয়োজনের তুলনায় কম সার ব্যবহার করতে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “এর ফলে আমনের ফলন হ্রাস পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।” অন্য দিকে চাষিরা জানান, একেই এ বারে আশানুরূপ বৃষ্টি হয়নি। জলের অভাবে মাঠে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাট। পাটচাষিরা বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। অন্য দিকে একটা বড় অংশে বীজতলায় তৈরি আমন চারাও জলের অভাবে জমিতে বসানো যায়নি। গত সপ্তাহখানেক ধরে বৃষ্টিপাত কিছুটা নিয়মিত হওয়ায় চাষিরা দ্রুতগতিতে আমন বুনতে শুরু করেছে। স্বাভাবিকভাবেই এই সময় সারের চাহিদা তুঙ্গে। অভিযোগ, ঠিক এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে সার ব্যবসায়ীরা। বাজারে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে যথেচ্ছ বাড়িয়ে দিয়েছে সারের।
নদিয়া মুর্শিদাবাদের যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা হরেন্দ্র কুমার ঘোষ বলেন, ‘‘গত মরসুমেও একইভাবে সারের দাম বাড়িয়েছিলেন এক শ্রেণীর অসাধু সার ব্যবসায়ী। সেই একই জিনিসের পুনরাবৃত্তি শুরু হওয়ায় আমরা প্রথম থেকেই এবারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি।” গত মরসুমে ৮৫ জন সার ব্যবসায়ীকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। ৬ জনের লাইসেন্সও বাতিল হয়। গত শুক্রবার থেকে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চকে সঙ্গে নিয়ে কৃষি দফতরের হানায় ইতিমধ্যে প্রায় ৪০০ লাইসেন্সপ্রাপ্ত সার বিক্রয় কেন্দ্রে হানা দিয়ে বেআইনিভাবে মজুত সার উদ্ধার করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ কৃষি উপকরণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক নরেশ দাস বলেন, ‘‘আমাদের নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রি করতে বলা হচ্ছে অথচ আমাদের ভালমন্দের কোন কথাই কেউ শুনছেন না। ১৯৮৪ সাল থেকে এক বস্তা ইউরিয়া বিক্রি করে মাত্র নয় টাকা লাভ হয়। ২০১২ সালে এসেও সেই লাভের অঙ্কের কোন পরিবর্তন ঘটেনি। অথচ এই সময়ের মধ্যে গাড়ি ভাড়া থেকে মুটের মজুরি বেড়েছে প্রায় দশগুণ।” |