বেহাল নিকাশি, দু’দিন বৃষ্টিতে জলমগ্ন শিল্পশহর
দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হল শিল্পতালুক হলদিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা।
শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। রাতভর অবিরাম বৃষ্টির পরে শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাঁটু জলে পড়তে হয় পুরবাসীকে। রবিবার জল কিছুটা নামলেও দুর্ভোগ মেটেনি। নিকাশি সমস্যার সমাধানে পুরসভা ও হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের (এইচডিএ) ভূমিকায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ।
১৯৮৩ সাল থেকে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার বদলে ‘নোটিফায়েড এরিয়া অথরিটি’র মর্যাদা পায় হলদিয়া। এর ১৫ বছর পর ১৯৯৭ সালে স্বাবলম্বী হয়ে ‘হলদিয়া পুরসভা’ গঠন হয়। কিন্তু তারপর আরও ১৫ বছর কেটে গেলেও নিকাশি সমস্যা রয়ে গিয়েছে আগের মতোই। প্রথম থেকেই এই পুরসভায় ক্ষমতায় বামেরা। পুরবাসীর পাশাপাশি বিরোধী তৃণমূল ও কংগ্রেস শিল্পশহরের পরিকাঠামোগত এই সমস্যা নিয়ে বহু বার ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখিয়েছে। লাভ হয়নি কিছুই। হুগলি, হলদি নদী দিয়ে ঘেরা গামলার মতো এই শহরে আজও সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে দুর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
২০০৯ সালে খড়গপুর আইআইটি-কে দিয়ে নিকাশির জন্য ‘মাস্টার প্ল্যান’ করানো হয়েছিল। কিন্তু ২১০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে ব্যায়ভার বহন করবে কে, তা নিয়ে পুরসভা ও এইচডিএ-র মধ্যে টানাটানির জেরে কাজ আর হয়নি।
পুরসভার ১, ১০, ১২, ১৭, ২০, ২২, ২৩, ২৫, ২৬ ওয়ার্ডে নিকাশি সমস্যা সবচেয়ে বেশি। কোথাও বড় নর্দমা নেই, ফলে জল বেরতে পারে না। আবার কিছু এলাকায় খাল থাকলেও সংস্কারের অভাবে মুদে গিয়েছে। টানা বৃষ্টিতে শহরের প্রাণকেন্দ্র দুর্গাচকের কলোনি বাজার, মঞ্জুশ্রী সংলগ্ন উপ-পুরপ্রধানের ১০ নম্বর ওয়ার্ড, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাখনবাবুর বাজার, ২৫ নম্বরের দাসেরচক, ২৬ নম্বরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা জলে থইথই করছে। স্থানীয় বাসিন্দা সন্তু রায়ের কথায়, “প্রতি বছর একই ছবি। জানি না নিকাশির সমস্যা কবে মিটবে?”
শুধুমাত্র পুরসভা নয়, এইচডিএ-র ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে শহরে। মঞ্জুশ্রীর বাসিন্দা হাফিজুর রহমান মল্লিক বলেন, “হাই ড্রেনের অভাবে এই জলমগ্ন চেহারা। পুরসভা ও এইচডিএ দায় ঠেলাঠেলিতে ব্যস্ত। কাজ করবে কখন?” সম্প্রতি এইচডিএ-র চেয়ারম্যান তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী সুতাহাটা ব্লকের একটি সরকারি অনুষ্ঠানে গিয়ে নিকাশি সমস্যা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দেন। পঞ্চায়েত এলাকা মহিষাদলে হিজলি টাইডাল ক্যানেল সংস্কারের কাজ শুরুও করেছে এইচডিএ। কিন্তু হলদিয়া পুরসভায় কোনও কাজ হচ্ছে না।
এ বছর পুরভোটের আগে পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর পাশাপাশি নিকাশির দিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন বাম নেতারা। নতুন পুরবোর্ড গঠনের পর কয়েকমাস কেটে গেলেও কাজকর্ম কিছুই হয়নি। উপপুরপ্রধান নারায়ণ প্রামাণিকের বক্তব্য, “আমাদের যতটা সম্ভব করছি। মাস্টার প্ল্যান যেটা হয়েছিল, তা করার মতো অর্থ আমাদের কাছে নেই। এইচডিএ চাইলে করতেই পারে। আমরা মঞ্জুশ্রী থেকে খঞ্জনচক পর্যন্ত একটা বড় নর্দমা করব। এইচডিএ-র সহযোগিতা আশা করি।”
এইচডিএ-র মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক পি উলাগানাথন আবার এইচপিএল লিঙ্করোডে ১০ কোটি টাকার প্রকল্পে একটা বড় নর্দমা করার কথা বলছেন। তাঁর বক্তব্য, “পুরসভার পরিকাঠামো আমাদের তুলনায় ভাল হওয়ায় ওরা কিছু কাজ করতেই পারে।” উন্নয়নের প্রশ্নে পুরসভার সঙ্গে কাজ করার আশ্বাসবানীও শুনিয়েছেন তিনি। আপাতত যা দুরাশাই ঠেকছে পুরবাসীর কাছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.