পুজোয় পর্যটকেরা যাতে নিশ্চিন্তে বেড়াতে পারেন সে জন্য উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। রবিবার কোচবিহার বন্যপ্রাণ বিভাগের চিলাপাতা বনবাংলোয় বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনের উদ্যোগে এই ব্যাপারে বৈঠক হয়। বৈঠকে বন দফতরের আধিকারিকেরা ছাড়াও পর্যটন এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের আধিকারিকেরাও ছিলেন। বৈঠকে চিলাপাতার বিভিন্ন বনবস্তির যোগাযোগের জন্য রাস্তা ও সেতপ নির্মাণ বাবদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর যে ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে সেই কাজের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। বনমন্ত্রী জানান, আলিপুরদুয়ার-১ নম্বর ব্লকে বেশ কয়েকটির বনবস্তির জমির পাট্টা পুজোর আগে দেওয়ার চিন্তাভানা হয়েছে। বক্সা, জয়ন্তী, জলদাপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় পযর্টকদের জন্য ইকো পার্ক তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আসন্ন পযর্টন মরশুমে মাদারিহাট ও আলিপুরদুয়াররে পযর্টকদের জন্য ইনফরমেশন সেন্টার খোলার বিষয়ে আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায়কে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বনমন্ত্রী বলেন, “মাদারিহাট ও রাজাভাতখাওয়ায় বন দফতরের তৈরী অডিটোরিয়ামগুলিতে পযর্টকদের বিনোদন জন্য স্থানীয় জনজাতির বাসিন্দাদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হবে। এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। স্থানীয় হোম টুরিজমের প্রতি পযর্টকদের আকর্ষন বাড়াবার জন্য বন উন্নয়ন নিগমের বাংলো বুকিংয়ের ওয়েবসাইটে সেগুলি নথিভুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে।” তিনি জানান, ডুয়ার্সের ইকো ট্যুরিজমের উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যে গাইডলাইন তৈরির কমিটি করা হয়েছে। অগস্ট মাসে এই কমিটির গাইড লাইন পেশ করার কথা। তার পর কীভাবে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে পযর্টনকে বাড়ানো যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। জয়ন্তী, বক্সা-সহ অন্যান্য বনবস্তিতে যেভাবে ট্যুরিস্টদের ঘোরানো হচ্ছে তা বন্ধ করা হবে না বলেও জানিয়েছেন বনমন্ত্রী। পাহাড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে গত কয়েক বছর ডুয়ার্সের পর্যটন মার খায়। পযর্টকরা অনেকেই ডুয়ার্সে আসতে ভয় পাচ্ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের সমস্যার সমাধান করার পর ডুয়ার্সে শান্তি ফিরে এসেছে বলে মনে করছেন পর্যটন সংস্থাগুলি। সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়ায় আসন্ন পযর্টন মরশুমে গত বছরের তুলনায় প্রায় তিন গুণ অগ্রিম বুকিং হয়েছে বিভিন্ন বনবাংলো ও হোম ট্যুরিজমগুলিতে। এই পরিস্থিতিতে পুজোর আগে রাজ্য সরকার দ্রুত কাজে নামতে চায়। বনমন্ত্রী বলেন, “পযর্টন দফতর, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ও বন দফতর ইতিমধ্যে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কাজে নেমেছে। চিলাপাতার বনবস্তিগুলির রাস্তা ও সেতু নির্মাণের জন্য প্রায় যে টাকা বরাদ্দ হয়েছে তা নিয়ে বৈঠকে বন দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।” পযর্টন সংস্থাগুলির তরফে রাজ বসু জানান, এ দিন চিলপাতায় প্রজাপতি পার্ক, লালন ফকির ইকো পার্ক, হোম ট্যুরিজমের মালিকদের ঋণের ব্যবস্থা, ডুয়ার্সের যুবকদের পযর্টনের জন্য গাড়ির কেনার প্রাথমিক অর্থ দেওয়ার কথা বৈঠকে তোলা হয়। বনমন্ত্রী বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেন। এদিন বৈঠকে বন দফতরে বন্যপ্রাণ বিভাগের বনপাল বিপিন সুদ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্যদের মুখ্য বাস্তুকার ননীগোপাল মুখোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন। |