ভারতে বিপজ্জনক ভাবে বাড়ছে নকল পণ্যের বাজার। এতটাই যে, আগামী ২০১৩-র মধ্যে ওই বাজারের মাপ ৫৫ হাজার কোটি টাকা ছুঁয়ে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের এক সমীক্ষায়। বৈদ্যুতিন পণ্যই হোক বা গাড়ির যন্ত্রাংশ, জাল পণ-সামগ্রীর এই ভাবে দ্রুত গতিতে দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কোনও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ না-থাকাকেই দায়ী করেছে সমীক্ষা।
সমীক্ষা জানিয়েছে, দেশে নকল দ্রব্যের বাজারের আয়তন এখন প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। পণ্যগুলি সরবরাহ হচ্ছে বিভিন্ন বেআইনি পথে। এবং বিক্রি হচ্ছে আসলের তুলনায় অনেকটাই কম দামে। ফলে সেগুলির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নিজেদের অজান্তেই এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর শিকার হচ্ছেন আমজনতা। সমীক্ষা অনুযায়ী, নকল পণ্যের তালিকার সব থেকে জনপ্রিয় পণ্য সাধারণত পোশাক। তার পরে আছে ওষুধ, জুতো, ঘড়ি, চামড়ার তৈরি দ্রব্য, গয়না। অন্যান্য ক্ষেত্রের মধ্যে বিপুল হারে জাল হয় বনস্পতি, ঘি, মশলার মতো পণ্যও। তবে বর্তমানে নকল বৈদ্যুতিন পণ্য, গাড়ির যন্ত্রাংশ, ভোগ্যপণ্য ও ওষুধের বিক্রি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বলে সতর্ক করেছে সমীক্ষাটি।অ্যাসোচ্যামের সেক্রেটারি জেনারেল ডি এস রাওয়াত জানান, “জাল পণ্য বিক্রির জেরে ২০১১-১২ অর্থবর্ষে ৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব খুইয়েছে সরকার।” সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, দেশের রাজধানী শহরই নকল পণ্যের ‘হাব’। কারণ এই সমস্ত পণ্যের প্রায় ৭৫ শতাংশ তৈরি হয় দিল্লিতেই। তবে এই সমস্যা এতটা মাথাচাড়া দেওয়া সত্ত্বেও সরকারের হাতে তার মোকাবিলা করার মতো অস্ত্রের যথেষ্ট অভাব আছে বলে মনে করছে অ্যাসোচ্যাম। কারণ তাদের অভিযোগ, বাজারে জাল পণ্য বিক্রেতাদের মোক্ষম শিক্ষা দেওয়ার মতো কড়া আইন এই মুহূর্তে এ দেশে নেই। ফলে পোয়াবারো ওই সব ব্যবসায়ীদের। তাই আমজনতার স্বার্থে, বিশেষত ওষুধ ও বৈদ্যুতিন পণ্যের ক্ষেত্রে অবিলম্বে ‘বার কোডিং’ (সাঙ্কেতিক চিহ্ন দ্বারা নির্ধারিত দাম) চালু করার জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছে বণিকসভাটি। |