পাখিদের মুক্তির উড়ানেও থাবা বসাচ্ছে মোবাইল টাওয়ার!
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক একটি সমীক্ষায় দেখে, দেশের যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা মোবাইল টাওয়ার শুধু পাখি ও কীটপতঙ্গের যাত্রাপথে বাধাই তৈরি করছে না, ওই টাওয়ারগুলি থেকে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ বিকিরণের যথেষ্ট কুপ্রভাবও পড়ছে প্রাণিজগতের এই বিরাট অংশের উপর। সেই কুপ্রভাব রুখতে টেলিকম মন্ত্রককে তাই একটি সুপারিশ পাঠিয়েছে বন ও পরিবেশ মন্ত্রক। তাদের পরামর্শ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি ভিত্তিতে টাওয়ারের নির্দিষ্ট বিকিরণ-মাত্রা স্থির করতে হবে। একটি মোবাইল টাওয়ারের অন্তত এক কিলোমিটারের মধ্যে দ্বিতীয় টাওয়ার বসানোর অনুমতি দেওয়া যাবে না। ভবিষ্যতে বিকিরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পরিষেবা সংস্থা একই টাওয়ার ব্যবহার করে মোবাইল পরিষেবা দিতে পারে কি না, সেটাও টেলিকম মন্ত্রককে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যত দিন না এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ
হচ্ছে, তত দিন পরিষেবা অটুট রেখেও বিকিরণ নিয়ন্ত্রণে সজাগ থাকতে হবে টেলিকম মন্ত্রককে।
গত জুলাই মাসেই কেন্দ্রের একটি আন্তঃমন্ত্রক গোষ্ঠী জানিয়েছিল, দেশে মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ মাত্রা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, তার কুপ্রভাব থেকে নাগরিকদের বাঁচাতে হলে মোবাইল ফোনের সেই বিকিরণ গ্রহণের মাত্রা (এসএআর) নিয়ন্ত্রণে আইন সংশোধনের কথা ভাবতে হবে। বাড়াতে হবে সচেতনতা। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, টাওয়ারের বিকিরণ মাত্রা এখনই অন্তত ১০ শতাংশ কমাতে হবে। নইলে নিজের অজান্তেই বিভিন্ন জটিল রোগের শিকার হবেন সাধারণ মানুষ।
তবে সমস্যা যে আরও গভীরে, তা বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের সাম্প্রতিক বক্তব্যে স্পষ্ট। টেলিকম মন্ত্রককে তারা জানিয়েছে, টাওয়ারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে একই পথে একাধিক টাওয়ার থেকে বিকিরিত তরঙ্গ যাচ্ছে। ফলে সেই এলাকার প্রাণিজগতের ক্ষতির সম্ভাবনাও বাড়ছে। সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়ছে পাখি ও বিভিন্ন কীটপতঙ্গ। সুপারিশে বলা হয়েছে, “গ্রাম হোক বা শহর, কোথায় ক’টা মোবাইল টাওয়ার আছে এবং সেগুলি থেকে বিকিরণের মাত্রা কত, সাধারণ মানুষ যাতে চাইলেই সেই সংক্রান্ত তথ্য পেতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা দরকার। এই টাওয়ার-মানচিত্র তৈরি হলে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় পাখি ও কীটপতঙ্গের সংখ্যা ও গতিবিধিও বোঝা যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। |