|
|
|
|
পরিদর্শন মেডিক্যালে |
অনুন্নয়ন ও দুর্নীতির অভিযোগে সরব স্বাস্থ্যের স্থায়ী কমিটি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
পরিকাঠামো উন্নত হয়নি। রয়েছে নানা দুর্নীতির অভিযোগ। মঙ্গলবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করে এমনই জানাল বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটি।
মঙ্গলবার সকালে হাসপাতাল পরিদর্শনে যাওয়া ওই স্থায়ী কমিটিতে ছিলেন মোট ছ’জন বিধায়ক। তাঁরা হলেন, রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, নির্মল মাঝি, শশি পাঁজা, সুকুমার দে, সুনীল মণ্ডল ও অরূপ খান। তাঁদের মধ্যে গলসির বিধায়ক ফরওয়ার্ড ব্লকের সুনীল মণ্ডল ছাড়া সকলেই তৃণমূলের। স্থায়ী কমিটির নেতা রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য ও অপর সদস্য নির্মল মাজির অভিযোগ, ‘‘গত তিন দশক ধরে হাসপাতালটির পরিকাঠামোর কোনও উন্নয়ন বা সংস্কার হয়নি। অথচ চাপ ক্রমশ বাড়ছে। মোট ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি বিধানসভায় তুলব ও সিআইডি তদন্তের দাবি জানাব।” তাঁদের আরও অভিযোগ, “বাম আমলে নিয়ম ভেঙে একটি সেচ্ছাসেবী সংস্থাকে হাসপাতালের সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে বহু বার রক্ত সরবরাহ করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে সিআইডি তদন্তের দাবি জানানো হবে।” যদিও সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য তথা বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান আইনুল হকের দাবি, “নিয়ম-বিরুদ্ধ কোনও কাজ হয়নি।” |
|
নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন সকালে স্থায়ী কমিটির সদস্যেরা হাসপাতাল সুপার অসিতবরণ সামন্ত ও মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুশ্রী রায়কে নিয়ে প্রথমে যান আউটডোরে। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, বহু মানুষ অপেক্ষা করেছেন টিকিটের জন্য। অপেক্ষারত মহিলারা তাঁদের কাছে অভিযোগ করেন, প্রতিদিন এ ভাবেই তাঁদের বসে থাকতে হয়। অপেক্ষারতদের আরও অভিযোগ, পাঁচটি কাউন্টার থাকলেও রোজ একটি বা দু’টি খোলে। প্রতিনিধি দল কাউন্টারে গিয়ে দেখেন, দু’টি কাউন্টার খোলা রয়েছে। উপস্থিত রয়েছেন তিন জন কর্মী।
মেডিসিন বিভাগে গিয়ে প্রতিনিধি দল জানতে পারে, জলাতঙ্কের টিকা মজুত নেই। সুপার তাদের কাছে দাবি করেন, কয়েক দিন আগেই টিকা ফুরিয়ে গিয়েছে। তা ফের দ্রুত চলে আসবে। এর পরে তারা যায় স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগে। সেখানেও চিকিৎসা গাফিলতির বেশ কিছু অভিযোগ পান সদস্যেরা। পরে প্রতিনিধি দলটি যায় হাসপাতালের স্টোরে। সেখানে নানা হিসেবপত্র খতিয়ে দেখেন তাঁরা।
হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে নির্মলবাবুর দাবি, “সিটিস্ক্যান যন্ত্রের জন্য প্রায় তিন লক্ষ টাকার ফিল্ম কেনা হয়েছিল। কিন্তু সময়মতো সেগুলি ব্যবহার না হওয়ায় সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ২০১০-এর ১ অগস্ট থেকে ২০১২-এর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় এক কোটি কুড়ি লক্ষ টাকার মূল্যের আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছিল। তার মধ্যে ৬১ লক্ষ ৬৭ হাজার সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি ছিল। ২৭টি কার্ডিওভাস্কুলার যন্ত্র কেনা হয়েছিল। কিছুই ব্যবহৃত হয়নি। গত ৩৪ বছর শুধু দুর্নীতিই হয়েছে।” এর পরে দলটি ভাতারের চিত্তরঞ্জন গ্রামীণ হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন। নির্মলবাবুর অভিযোগ, “বাম আমলে রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মোট চার হাজার কোটি টাকার দূর্নীতি হয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ম ভেঙে প্রচুর অর্থ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে নানা হাসপাতালে গিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়বে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।”
তবে আইনুল হকের দাবি, “বামফ্রন্টের ৩৪ বছরেই হাসপাতালে বহু উন্নত যন্ত্রপাতি এসেছে। ক্ষমতায় এসে তৃণমূল সব কিছু নস্যাৎ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা কোনও তদন্তকেই ভয় পাই না।” |
|
|
|
|
|