রবীন্দ্রতীর্থের উদ্বোধন উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী হাজির ছিলেন নিউ টাউনে। উদ্বোধন করলেন নিউ টাউন থানার নতুন ভবনও। ঠিক তখনই ডাকাতি হয়ে গেল উপনগরীর এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে। কমিশনারেট হওয়ার পরে থানার নতুন ভবন তৈরি হচ্ছে, পরিকাঠামোগত নানা উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ, এলাকার আইনশৃঙ্খলা আছে সেই তিমিরেই।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে নিউ টাউনের হেলাবটতলা এলাকায় কমলেশ গুপ্ত নামে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে কয়েক ভরি সোনা, ১২ হাজার টাকা, একটি টিভি ও কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। উল্টোডাঙার ডালপট্টিতে কমলেশবাবুর ডালের ব্যবসা রয়েছে। এ দিন বিকেলে তিনি বাড়িতে ছিলেন না। ছিলেন তাঁর স্ত্রী নীনা এবং বছর ছয়েকের ছেলে অভিষেক। নীনাদেবী বলেন, “বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ কলিং বেল বাজতে বারান্দায় এসে দেখি এক যুবক দাঁড়িয়ে রয়েছে। সে ক্যুরিয়ার সার্ভিস থেকে চিঠি দিতে এসেছে বলে জানায়। দরজা খুলতেই সে নিজের মোবাইল থেকে একটি ফোন করে। তার পরে দেখি আরও চার জন যুবক দরজার কাছে হাজির। আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই তারা ভিতরে ঢুকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়।” নীনাদেবী আরও জানান, দুষ্কৃতীরা বন্দুক বার করে এবং চিৎকার করলেই প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। অভিষেককে চড়-থাপ্পড় মারে বলেও জানান তিনি। এর পরে দুষ্কৃতীরা নীনাদেবী ও অভিষেকের মুখে সেলোটেপ আটকে দেয় এবং তাঁদের হাত বেঁধে শৌচাগারে আটকে রেখে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে ডাকাতি করে। নীনাদেবী কোনও মতে হাতের বাঁধন খুলে ফেলেন। কিন্তু যখন শৌচাগার থেকে তিনি চিৎকার শুরু করেন, ততক্ষণে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
এ দিকে, এই ঘটনার পরে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেন, নিউ টাউন থানায় ফোন করার প্রায় এক ঘণ্টা পরে পুলিশ আসে। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কমলেশবাবুদের বাড়ি হেলাবটতলার জনবহুল এলাকায়। প্রশ্ন উঠেছে, দিনের বেলা জনবহুল জায়গায় এ রকম ঘটনা ঘটলে মানুষের নিরাপত্তাটা কোথায়? এ ছাড়া, পুলিশের টহলদারি ভ্যান যদি রাস্তায় ঠিক মতো টহল দিত, তা হলে দুষ্কৃতীরাও দুপুরে এই কাজ করার সাহস পেত না। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, “টহলদারি ভ্যান নিয়মিত টহল দেয়। তবে এ রকম জনবহুল জায়গায় প্রতিটি বাড়ির সামনে আলাদা করে টহল দেওয়া কার্যত অসম্ভব। তবে কমিশনারেট হওয়ার পরে নিউ টাউনে টহলদারি জিপের সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে। এলাকার আইনশৃঙ্খলার উন্নতির জন্য পুলিশের টহলের পাশাপাশি এলাকায় রাতপাহারার জন্য আর জি পার্টি তৈরির বিষয়েও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।” |