ভারপ্রাপ্ত প্রধানের ইস্তফা
শৃঙ্খলা শিকেয়, ভর্তি নিয়ে জুলুম এ বার সুরেন্দ্রনাথ মহিলা কলেজে
নিজেদের ছাত্র সংগঠনকে শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে বলছে তৃণমূল। কিন্তু তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) তা আদৌ কানে তুললে তো!
অন্তত সুরেন্দ্রনাথ কলেজ ফর উইমেনে ছাত্রী ভর্তিকে কেন্দ্র করে যে-বিশৃঙ্খলা চলছে, তাতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের শৃঙ্খলা মানার প্রমাণ মিলছে না বলে অভিযোগ। সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থক এক দল ছাত্রীর ‘অন্যায় দাবি’কে কেন্দ্র করে ভর্তি প্রক্রিয়া আটকে গিয়েছে। টিএমসিপি অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কিন্তু বিশৃঙ্খলা যে তুঙ্গে পৌঁছেছে, দু’টি ঘটনায় তা স্পষ্ট।
জেরে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা (টিচার-ইনচার্জ) দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি দিয়েছেন কলেজের প্রশাসক তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অ্যান্ড ট্রাস্ট অফিসার অঞ্জন দাঁ-কে।
অন্য কোনও শিক্ষক ওই দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। গোলমাল পাকানোর ক্ষেত্রে অভিযোগের তির তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দিকে। বিষয়টি জানিয়ে আজ, শুক্রবার উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস।
ওই কলেজে গোলমালের কারণ কী? এ বছর থেকে ওই কলেজে অনলাইনে ভর্তির আবেদনপত্র জমা নেওয়া এবং মেধা-তালিকা প্রকাশ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু ইংরেজি, বাণিজ্য ও ভূগোল অনার্সে মেধা-তালিকার বাইরে থেকে কয়েক জনকে ভর্তি করতে হবে বলে এক দল প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রী বেশ কয়েক দিন ধরে চাপ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। এই দাবিতেই শুরু হয় বিক্ষোভ। কলেজ সূত্রের খবর, ওই দলটি লিখিত ভাবে ১০ শতাংশ আসন বৃদ্ধির দাবিতে জানিয়েছে। কিন্তু মৌখিক ভাবে মেধা-তালিকার বাইরে থেকে কয়েক জনকে ভর্তি করার দাবি তোলে। কলেজ-কর্তৃপক্ষ দাবি না-মানায় গোলমাল বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা কলেজে যান। কিন্তু কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। ২৫ জুলাই থেকে এক দল ছাত্রী ভর্তি হওয়ার জন্য কাউকে কলেজে ঢুকতে দিচ্ছেন না বলে কলেজ-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।
কলেজ সূত্রের খবর, অভিযুক্তেরা মূলত টিএমসিপি-র সমর্থক। রায়গঞ্জ, মাজদিয়া, সুরেন্দ্রনাথ কলেজ-সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধেই। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মনে করছে তৃণমূল। বুধবার এক বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুব্রত বক্সী টিএমসিপি-কে জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ধরনের বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করবেন না।
সুরেন্দ্রনাথ কলেজ ফর উইমেনের ঘটনায় অবশ্য তাঁদের কোনও হাত নেই বলে দাবি করছেন টিএমসিপি-র সাধারণ সম্পাদক তমোঘ্ন ঘোষ। তিনি বলেন, “ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা নিয়ম মেনে ভর্তি করছেন না। এই নিয়েই গোলমাল বলে শুনেছি।” কিন্তু সংগঠনের অন্য এক নেতা বলেন, “জেলা বা রাজ্য স্তরের নেতাদের সঙ্গে ওই ঘটনার যোগ নেই ঠিকই। কিন্তু টিএমসিপি এর দায় এড়াতে পারে না। কারণ দলের একেবারে স্থানীয় কিছু সদস্য গোলমাল পাকাচ্ছে।” তা হলে সংগঠন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন, তার উত্তর নেই ওই নেতার কাছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ৬ অগস্ট প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় এখনও শ’দুয়েক আসন ফাঁকা পড়ে আছে বলে কলেজ সূত্রের খবর। এই অবস্থায় বুধবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা এণাক্ষী চৌধুরী। যদিও পরবর্তী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা না-আসা পর্যন্ত তাঁকেই দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো যে, কলেজের কোনও শিক্ষকই ওই দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। কী ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয়? সুরঞ্জনবাবু বলেন, “ভর্তিকে কেন্দ্র করে ওই কলেজে একটা গোলমাল হয়েছে। এ ব্যাপারে কলেজের প্রশাসকের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। তার আগে, শুক্রবারেই রাজ্যের শিক্ষা অধিকর্তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.