শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করে বাবা মাকে খুন করেছে। মেয়ের এই সাক্ষীতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল বাবার। মঙ্গলবার রামপুরহাটের ফাস্ট ট্র্যাক তৃতীয় আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মানস বসু এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্তের নাম স্বপন মেহেনা। বাড়ি মাড়গ্রাম থানার কড়কড়িয়া গ্রামে। সরকারি আইনজীবী নিমাই মুখোপাধ্যায় বলেন, “সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির বারো বছরের মেয়ে (মামলা শুরু হওয়ার সময় বয়স ছিল দশ) পূর্ণিমার সাক্ষীর ভিত্তিতে রায় শুনিয়েছেন বিচারক। পূর্ণিমা আদালতে জানিয়েছে, তার মাকে বাবা শাবল দিয়ে তিন বার মাথায় আঘাত করে খুন করেছে। ওই ঘটনায় বালিকাটি একমাত্র সাক্ষী।”
শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন মেহেনার মেয়ে জয়ন্তীর (৩৫) সঙ্গে ওই থানার কড়কড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা স্বপন মেহেনার বিয়ে হয়। তাঁদের দুই মেয়ে আছে। অতিরিক্ত পণ আদায়ের জন্য স্বপন বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীর উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। পাঁচ বছর আগে স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল স্বপন। বাধ্য হয়ে জয়ন্তীদেবী মেয়েদের নিয়ে বাপেরবাড়িতে ছিলেন। তিন মাস পরে গ্রামে সালিশি সভায় স্ত্রীর উপরে আর অত্যাচার করবে না এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে স্ত্রী ও মেয়েদেরকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যায় স্বপন।
২০১০ সালের ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ঢুকে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে। স্ত্রীর পেটে লাথি মেরে চলে যায়। ওই সময় স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। রাতে বাড়িতে ঢুকলে জয়ন্তীদেবী প্রতিবাদ করলে ফের মারধর করে স্বপন চলে যায়। রাত ১টা নাগাদ বাড়িতে এসে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীর মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় স্বপন। তখন মেয়ে পূর্ণিমাকে মাথায় জল দিতে বলেন জয়ন্তীদেবী। তখনই মৃত্যু হয় তাঁর। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ স্বপনকে গ্রেফতার করে। সরকারি আইনজীবী নিমাই মুখোপাধ্যায় জানান, বিচারক বধূ নির্যাচনের দায়ে তিন বছর ও খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। দু’টি সাজা একই সঙ্গে চলবে। |