ঘট পড়ে রইল ঘাটের সিঁড়িতে। শিবপুজোর জন্য গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেলেন দুই বোন এবং তাঁদের প্রতিবেশী এক তরুণী।
সোমবার দুপুরে নৈহাটি থানা সংলগ্ন ব্যানার্জিপাড়া ঘাটে ওই দুর্ঘটনার পরে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত গায়ত্রী চৌধুরী (১৯) এবং তাঁর প্রতিবেশী তৃষা দে চৌধুরী (২০) নৈহাটির মিত্রপাড়ার বাসিন্দা। রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি গায়ত্রীর দিদি, বছর তেইশের সুনীতার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে শিবপুজোর জন্য তিন জনে এক সঙ্গেই গঙ্গাস্নান করতে যেতেন। সোমবার ছিল শিবপুজো। তিন জনেই বাড়িতে বলে গিয়েছিলেন, স্নান করে পুজো দিয়ে ফিরবেন। কিন্তু দুপুর দেড়টা নাগাদ ওই দুর্ঘটনা। তিন জনের কেউই সাঁতার জানতেন না। |
তাঁদের তলিয়ে যেতে দেখে ঘাটের অন্য লোকজন বাঁচানোর চেষ্টা করেন। পাশেই থানা হওয়ায় কয়েকজন পুলিশকর্মীও জলে ঝাঁপ দেন। কিছু ক্ষণ খোঁজাখুঁজি পরে গায়ত্রী এবং তৃষাকে জলের মধ্যে থেকেই অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা দু’জনকেই মৃত ঘোষণা করেন। রাত পর্যন্ত পুলিশ
এবং স্থানীয় লোকজন নৌকা নিয়ে সুনীতার খোঁজ চালাতে থাকেন।
ঘণ্টাখানেক পরে দু’টি পরিবারের লোকজনই ওই ঘাটে আসেন। তখনও তিন জনের পুজোর ঘট ঘাটের সিঁড়িতেই পড়ে রয়েছে। সুনীতা নৈহাটির ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র কলেজের বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। গায়ত্রী ভাটপাড়া তারকনাথ বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। তৃষা পড়তেন ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র কলেজের (প্রাতর্বিভাগ) বিএ দ্বিতীয় বর্ষে।
সুনীতা-গায়ত্রীর বাবা গোপাল চৌধুরীর একটি ছোট্ট লাড্ডুর দোকান রয়েছে। পরিবার বলতে স্ত্রী এবং দুই মেয়ে। মেয়েদের তলিয়ে যাওয়ার কথা শুনে এ দিন বুক চাপড়ে বলছিলেন, “বারবার ওদের বেশি জলে নামতে বারণ করেছিলাম। ওরা আমাকে কথা দিয়েছিল, বেশি জলে নামবে না। তা হলে কী করে
এমন হল? এ বার আমি কাদের নিয়ে থাকব?” কথা হারিয়ে ফেলেছিলেন তৃষার মা অঞ্জলিদেবী। |