অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তির দাবিতে অধ্যক্ষকে কয়েক ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখলেন টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সদস্যেরা। সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে বুদবুদের মানকর কলেজে। টিএমসিপি-র অভিযোগ, স্নাতক স্তরে আসন সংখ্যা সরকারি নিয়মে ১০ শতাংশ বাড়ানোর পরেও অনেকে ভর্তি হতে পারেননি। সে জন্য অধ্যক্ষকে আসন সংখ্যা বাড়ানোয় উদ্যোগী হতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ তাতে কর্ণপাত না করায় বিকেল থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। অধ্যক্ষ দুলালচন্দ্র গাঁধী অবশ্য জানান, সরকারি নিয়মের বাইরে যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। ছাত্র সংসদ তা বুঝতে না চাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গেলে রাত ৮টা নাগাদ বিক্ষোভ থামে। তার পরে ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাত পর্যন্ত বৈঠক করেন অধ্যক্ষ।
কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাহুল চক্রবর্তী জানান, এলাকায় আর কোনও কলেজ না থাকায় এখনও অনেক পড়ুয়া ভর্তি হতে পারেননি। অধ্যক্ষকে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে জানিয়ে আসন সংখ্যা বাড়ানোয় উদ্যোগী হওয়ার আর্জি জানানো হয় বেশ কয়েক বার। কিন্তু অধ্যক্ষ সেই দাবি সরাসরি অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ রাহুলবাবুর। |
তাঁর কথায়, “অধ্যক্ষ আমাদের সাফ বলে দেন, তাঁর পক্ষে এমন কোনও কাজ করা সম্ভব নয়।” এ দিন ফের একই আর্জি নিয়ে তাঁরা অধ্যক্ষের ঘরে যান। সঙ্গে ছিলেন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরাও। রাহুলবাবুর অভিযোগ, এ দিনও অধ্যক্ষ তাঁদের কথা শুনতে রাজি হননি। এ নিয়ে বচসা হয়। কলেজ সূত্রে জানা যায়, বিকেল ৪টে নাগাদ অধ্যক্ষের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয় কিছু ছাত্র। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই তা খুলে দেওয়া হয়। টিএমসিপি-র গলসি ১ ব্লক সভাপতি তন্ময় ঘোষের অবশ্য দাবি, “তালা লাগানোর ঘটনা ঘটেনি। আমরা অবস্থান-বিক্ষোভে বসি। স্যারকে জানিয়ে দিই, তিনি চাইলে চলে যেতে পারেন। কিন্তু আমরা উঠব না।’’ রাত প্রায় ৮টা নাগাদ কলেজে পুলিশ যায়।
অধ্যক্ষ জানান, স্নাতক স্তরে এ বার সরকারি নিয়মে ১০ শতাংশ আসন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এই কলেজে এর বেশি ছাত্র ভর্তি করলে পঠন-পাঠনের অসুবিধা হবে। ছাত্র সংসদকে তিনি সে কথাই জানিয়েছেন। কিন্তু তারা তা মানতে চায়নি। শেষ পর্যন্ত সোমবার তাঁকে ঘেরাও করে রাখা হয়। তিনি বলেন, “গত বছরও এই একই দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। এ বার আর এক ধাপ এগিয়ে আমায় আটকে রাখা হল।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অশোক রুদ্রের দাবি, কোনও পড়ুয়াকে যেন পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না করা এবং কলেজে আরও কিছু পাঠ্যক্রম চালুর দাবিতে পড়ুয়ারা আন্দোলন করছে। কিন্তু অধ্যক্ষ বিষয়টিকে আমল দিচ্ছেন না। তাঁর অভিযোগ, “আমরা ওই কলেজের ছাত্র সংসদ দখল করার পর থেকেই অধ্যক্ষ আমাদের ছাত্র সংসদের সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন।” অধ্যক্ষের অবশ্য দাবি, “বিক্ষোভকারী ছাত্রেরা বাস্তব অস্বীকার করছেন।” বিক্ষোভ থামার পরে অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ছাত্রেরা। |