কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন
দু’বছর ধরে হুগলির গুদামে পড়ে ‘তন্তুজ’-এর মালপত্র
প্রায় দু’বছর ধরে হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের গুদামে পড়ে রয়েছে ‘তন্তুজ’-এর কয়েক লক্ষ টাকার গজ, ব্যান্ডেজ, মশারি ও শতরঞ্চি। সেগুলির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জিনিসগুলির এখনও দাম মেটানো হয়নি। এবং তা যে হবে না, তা-ও এক রকম নিশ্চিত। কারণ, জেলার ‘ওষুধ কেলেঙ্কারি’।
তবে, ‘তন্তুজ’ ওই সব সরঞ্জাম ফিরিয়ে নিতে পারে। কিন্তু এ ব্যাপারে ওই সংস্থার কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ তুলেছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের একাংশ। এত দিন ধরে গজ, ব্যান্ডেজ, শতরঞ্চি, মশারি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের গুদামে পড়ে থাকায় সে সবের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ‘তন্তুজ’ সংস্থার কর্মীদেরই একাংশ।
সংস্থাটি রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের অধীন। ওই দফতরের মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা অবশ্য বলেন, “বিষয়টি অবগত আছি।” একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, সংস্থার কর্তাদের বলেছি, লিখিত ভাবে হুগলি জেলা প্রশাসনের কাছে জিনিসগুলি ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আবেদন করতে।”
জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন বলেন, “আমরা তন্তুজ কর্তৃপক্ষকে বলেছি, ওঁদের জিনিসপত্র ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। ওঁরা সম্মত আছেন। শীঘ্রই নিয়ে যাবেন।” ‘তন্তুজ’-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর রবীন্দ্রনাথ রায় অবশ্য বলেন, “আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আইনজীবীর চিঠিও দিয়েছি। জেলা প্রশাসনের তরফে ওই সব সামগ্রী ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে লিখিত ভাবে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।”
গত বছরের গোড়ায় নিয়ম বহির্ভূত ভাবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর কোটি কোটি টাকার ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং অন্যান্য জিনিসপত্র কেনায় বিস্তর জলঘোলা হয় রাজ্যে। ওই সব চিকিৎসা সরঞ্জামের মধ্যেই রয়েছে ‘তন্তুজ’ থেকে কেনা গজ, ব্যান্ডেজ, মশারি ও শতরঞ্চি। সব মিলিয়ে যার দাম প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ।
ওই ‘ওষুধ কেলেঙ্কারি’র তদন্ত করছে সিআইডি। ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে তৎকালীন জেলা সভাধিপতি তথা সিপিএম নেতা অসিত পাত্র এবং অন্য এক সরকারি অফিসারকে। ‘ওষুধ কেলেঙ্কারি’র বিষয়টি যখন সামনে আসে, সেই সময় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তের নির্দেশে রাজ্যের অর্থ দফতর তদন্তে নামে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কয়েক জন অফিসারের ভূমিকা নিয়ে তাঁরা প্রশ্নও তোলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় কয়েক জন অফিসারের বিরুদ্ধে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তের কারণে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে সরবরাহ করা সব রকম ওষুধ এবং মালপত্রের দাম মেটানোর উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু বিশ্বাসে ভর করে যে-সব সংস্থা জেলা স্বাস্থ্য দফতরে লক্ষ লক্ষ টাকার ওষুধ সরবরাহ করেছিলেন, তারা বিপাকে পড়েন। সংস্থাগুলির আর্থিক ক্ষতি পোষাতে তখন জেলা প্রশাসনের কর্তারা স্থির করেন, পর্যায়ক্রমে সরকারি গুদাম থেকে ওই সব সংস্থাকে মাল নিয়ে যেতে বলা হবে। যাতে তারা ফের ওই সব মালপত্র বিক্রি করে তাদের ক্ষতির অন্তত কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারেন। এর পর অনেক সংস্থা টাকা না পাওয়ায় তারা যে সব ওষুধ ও অন্যান্য মালপত্র সরবরাহ করেছিল, তা নিয়ে চলে যায়। কিন্তু ‘তন্তুজ’ সেই রাস্তায় হাঁটেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.