এতটা প্রত্যাশার চাপ সম্ভবত তাঁকে কোনও অলিম্পিকেই সহ্য করতে হয়নি। আর সেই চাপ কাঁধের উপর হাজির হলে ব্যাপারটা ঠিক কী রকম হয়, তা ভাল ভাবে টের পাচ্ছেন অভিনব বিন্দ্রা।
বেজিং অলিম্পিকে শ্যুটিংয়ের সোনা। লন্ডনে ভারতের সেরা বাজি। মনে করা হচ্ছে, এই অলিম্পিকে ভারতের পদকের মন্দা কাটাতে পারেন বিন্দ্রাই। এই অবস্থায় সোমবার বিন্দ্রা নামছেন ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে। এবং সময় যত এগোচ্ছে, প্রত্যাশার পারদ ততটাই যেন তাঁকে নিয়ে বাড়ছে ব্রিটেনের রাজধানীতে।
বিন্দ্রা নিজে বেজিং-পর্ব ভুলতে চাইছেন। অতীত নিয়ে মাথাব্যথা নেই। বরং বলছেন, “বেজিংয়ে দু’ঘণ্টা ধরে শু্যটিংয়ের পর সোনা জিতেছিলাম। কিন্তু সে সব অতীত।” বিন্দ্রার এটা চতুর্থ অলিম্পিক। গগন নারাংয়ের তিন নম্বর। বেজিং এবং আথেন্সে ভরাডুবির পর আবার যিনি অলিম্পিক ময়দানে। তিনিও সোমবার নামছেন ওই ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে এবং আশা রাখছেন, এ বার অন্তত তাঁকে খালি হাতে ফিরতে হবে না। পদকের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে রাখার জন্য পরের ক’দিনে ৫০ মিটার রাইফেল প্রোন এবং ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনেও নামবেন নারাং।
বেজিংয়ের পর বিভিন্ন আম্তর্জাতিক শ্যুটিংয়ের আসরে একের পর এক পদক জিতেছেন নারাং। আইএসএসএফ বিশ্বকাপ, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, কমনওয়েলথ গেমস। নতুন বিশ্বরেকর্ডও করেন। “আগের দু’টো অলিম্পিকে পারিনি। দুর্ভাগ্য আমার। কিন্তু আশা করছি লন্ডনে ভাগ্য ভাল হবে,” বলছেন নারাং। শু্যটিংয়ে ভারতের এই দুই প্রতিনিধি একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়বেন ঠিকই, কিন্তু এক কঠিন বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্বীরও মহড়া একই সঙ্গে নিতে হবে। তিনি— চিনের ঝু কিনান। যদিও, শেষ যুদ্ধে ঝু-কে হারিয়েছিলেন বিন্দ্রা। বেজিংয়ে।
আট বছর পর অলিম্পিকে ভারতীয় হকি টিমের প্রত্যাবর্তনও ঘটছে একই দিনে। গত অলিম্পিকে ব্রিটেনের কাছেই চূড়ান্ত ধাক্কা খেয়ে যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হলেও এ বার লন্ডনে আকর্ষণের কেন্দ্রে অনেকটাই ভরত ছেত্রী ও তাঁর দলবল। আট বারের অলিম্পিক সোনাজয়ী ভারত এই মুহূর্তে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে দশ নম্বর। সোমবার সামনে নেদারল্যান্ডস। যাদের বিশ্বক্রমপর্যায়ে তিন। কিন্তু সে সব ভরতরা মাথায় রাখছেন কোথায়?
“আর এক মিনিটও অপেক্ষা করা যাচ্ছে না। ডাচরা টিম ভাল। কিন্তু আমরাও ছাড়ব না,” হুঙ্কার ভারতীয় হকি কোচ মাইকেল নবসের। সঙ্গে যোগ করেছেন, “নেদারল্যান্ডলসকে আমরা বেশ কিছু দিন খেলিনি। কিন্তু আমার টিমের ক্ষমতা আছে বিশ্বের সবার মহড়া নেওয়ার।” ডাচদের সাবধান করে রেখেছেন অধিনায়ক ভরতও। “আমরা দেখাতে চাই লন্ডনের সঙ্গে ভারতীয় হকির যোগাযোগটা শুধুই প্রতীকী নয়।”
যোগাযোগটা কী?
লন্ডনে শেষ বার অলিম্পিকের আসর বসেছিল ১৯৪৮-এ। হকিতে স্বাধীন ভারতের প্রথম অলিম্পিক সোনা সেখানেই। ২০১২-র লন্ডনে কি ভারতীয় হকির স্বর্ণযুগ ফিরবে?
|