তখন বেশ রাত। আচমকা খবর এল প্রণব মুখোপাধ্যায়ের গাড়ির দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাঁকে নিয়ে আসা হচ্ছে বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে।
তাঁকে যখন আনা হল, রক্ত পড়ছে মাথার ক্ষতস্থান থেকে। সেই রাতে সেই সময়ে মাথা ঠান্ডা রেখে প্রণববাবুর মাথায় সেলাই করেছিলেন চিকিৎসক পলাশ মজুমদার। রবিবার তিনি বলেন, “অনেক দিন আগের কথা। তবে আমার এখন এটাই ভেবে ভাল লাগছে যে, সেই রাতে প্রণববাবুর প্রথম চিকিৎসাটা আমিই করেছিলাম।” প্রণববাবুর সম্পূর্ণ আরোগ্য হয়েছিল। সেই প্রাথমিক চিকিৎসাটা ছিল সেখানে খুবই জরুরি। ১২টা সেলাই করেছিলেন পলাশবাবু। তারপরে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে আরও দু’টি সেলাই করতে হয়। ২০০৭ সালের ৭ এপ্রিল রাত সওয়া দশটা নাগাদ প্রণববাবুর গাড়ি দুর্ঘটনা হয়। মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জ থেকে ফেরার পথে বীরপুর মোড়ের কাছে একটা লরির চাকা ফেটে ওই দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইঞা, প্রণববাবুর গাড়ির চালক ও নিরাপত্তারক্ষী। পলাশবাবু বলেন, “খবর পেয়েই ছুটে গিয়ে দেখি প্রণববাবু স্ট্রেচারে শুয়ে রয়েছেন। তারপরে আর কিছু ভাবার সময় পাইনি। পুরো সময়টা যেন ঘোরের মধ্যে ছিলাম। রক্ত বন্ধ করতে হবে প্রথমেই, এটাই ঘুরছিল মাথার মধ্যে। সবাই যখন চলে গেল, তখনই প্রথম মনে হল, সেলাইটা ঠিকঠাক হয়েছে তো?” |
দুর্ঘটনার পরে। —ফাইল চিত্র। |
তা যে ঠিকঠাকই হয়েছিল, তা সেনাবাহিনীর চিকিৎসকেরাও পরে বলেছিলেন। কৃষ্ণনগর সংলগ্ন জাহাঙ্গিরনগরের বাসিন্দা পলাশবাবু আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। এখন মেডিক্যাল কলেজে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন। তাঁর কথায়, “আর কোনওদিন হয়তো তাঁর মুখোমুখি হতে পারব না। তবে সেই দিনটা মনে থেকে যাবে। পরে তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন, তা রেখে দেব আজীবন।” |