সিরিজটা ভারতের জন্য ভাল শুরু হল। অনেক দিন বাদে খেলার জন্য যে জড়তা থাকে, সেটা ছিল না। তেল খাওয়া মেশিনের মতো না খেললেও যেটুকু প্রত্যাশিত, সেটা হয়েছে। বরং বলব, শ্রীলঙ্কাকে দেখে মনে হয়নি যে ওরা খেলার মধ্যে আছে এবং সদ্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ জিতে উঠেছে। ভারতীয় ব্যাটিং বরাবরই শ্রীলঙ্কা বোলিংয়ের উপর ছড়ি ঘুরিয়েছে, কারণ ওদের বোলিংয়ে পেস তেমন নেই। ভারতীয়দের ব্যাকফুটে নিয়ে যেতে না পারলে ওদের ওভার প্রতি ছয় রান করে বিপক্ষকে দিতেই হবে। টস না জিতলে এবং বোলারদের এত সাধারণ দেখালে শ্রীলঙ্কার পক্ষে সিরিজে ফেরা কঠিন।
উপমহাদেশে ভারতীয় ব্যাটিং নিয়ে কোনওদিনই চিন্তার কিছু ছিল না। তবে যেটা ভাল লেগেছে বিশ্রামের পরে ফিরেও টিমটা অস্বচ্ছন্দ ছিল না। সহবাগ ধৈর্য দেখিয়েছে, যেটা অতীতে বহুবার ওর কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে। দেখতে হবে এটাই সহবাগের নতুন ধরন, নাকি আবার নিজের ধরনে ফিরে যাবে? আর বীরু আর বিরাট ছন্দে থাকলে চোখের পক্ষে খুব তৃপ্তিদায়ক। বিরাট ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। অস্ট্রেলিয়ায় ওকে কাছ থেকে দেখেছি। যে ভাবে ও ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে তৈরি করেছে, সেটা নিঃসন্দেহে ড্রেসিংরুমে সবার কাছে একটা সেরা উদাহরণ। ওকে দেখে বাকিরা শিখতেই পারে। রানের খিদে মারাত্মক, সহজে যে কোনও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে, ভীষণ লড়াকু। ওর মানসিকতা আমার খুব পছন্দের। সাফল্যের জন্য ও সব সময়ই মরিয়া এবং একবার দাঁড়িয়ে গেলে স্কোরটাকে তিন অঙ্কে নিয়ে যাওয়ার একটা জেদ থাকে। এটাই বড় ক্রিকেটার হওয়ার লক্ষণ। দ্রাবিড় অবসর নিয়েছে, আরও কয়েকজন অবসরের মুখে। এই অবস্থায় কোহলির ফর্ম ভারতের জন্য খুব জরুরি।
মনোজ তিওয়ারি মতো অশোক দিন্দাকেও এ বার বাইরে থাকতে হল। পরের ম্যাচটা খেলবে, তারও নিশ্চয়তা নেই। ইরফানকে ছন্দ পেতে দেখে ভাল লাগল। ও থাকলে ভারত পাঁচ বোলার খেলানোর কথা ভাবতেই পারে। ওকে নতুন বলটা দিয়ে ঠিকই করেছে ধোনি, কারণ ও মূলত সুইং বোলার। দিন্দার কপাল খারাপ। এশিয়া কাপে ভাল বল করেছিল। চোট পাওয়ার আগে আইপিএলেও পারফরম্যান্স ভাল ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজে ‘এ’ টিমের সফরটাতেও। ফিট ও ফর্মে আছে, ওর সময় আসবে। মনোজের ক্ষেত্রেও একই কথা বলব।
প্রথম ম্যাচটা ভাল শুরুর পরে ভারত আরও পরিণত খেলবে, এটাই কাম্য। সেখানে শ্রীলঙ্কাকে নিজেদের গুছিয়ে নিতে হবে তাড়াতাড়ি। ওদের ব্যাটিং ভাল, ৩১৪ রান তাড়া করে ২৯০-এর মতো স্কোর করাটা খারাপ নয়। কিন্তু পরের ম্যাচগুলোয় অন্যরকম ভাবে ভাবতেই হবে। নিয়মিত স্পিনার হিসেবে দিলশানকে ভাবাটা কঠিন এবং উপমহাদেশের উইকেটে দু ’জন স্পিনার খেলানোটা বাধ্যতামূলক। বলে ঝাঁজ আছে এমন কাউকে টিমে আনতে হবে, কারণ মিডিয়াম পেসারকে এই ভারতীয় ব্যাটিং শাসন করবেই। |